কোভিড-১৯ আতঙ্কে টানা দশদিনের ছুটিতে দেশে যেন লকডাউন অবস্থা। লম্বা ছুটি পেয়ে আর করোনা আতঙ্ক নিয়ে নিজ নিজ ঘরে ফিরেছেন মানুষ। বড় বড় শহরগুলো ফাঁকা হলেও গ্রামীন জনপদ সরগরম। কিন্তু সেখানেও ঘরের বাইরে আসতে মানা। ঈদ কিংবা অন্য কোন ছুটিতে ঘরে ফিরলে যে আনন্দ পাওয়া যায়। এবারের চিত্র উল্টো। আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব কারো বাড়িতে কেউ যেতে পারছেনা। আবার অনেকে পছন্দ করছেন না কেউ আসুক। এ যেন চাচা আপন জান বাঁচার মত অবস্থা। শহরের রাস্তায় কিছু রিকশা অটোরিকশা চলাচল করলেও উপজেলা পর্যায়ে একেবারে হাতেগোনা।
ছুটির শুরুতে সবাই পরিবারের সাথে এক হতে পেরে বেশ খুশী ছিল। যারা জীবন যুদ্ধের কারনে নিজ শহর কিংবা গ্রামের বাইরে থাকেন তারা বেশ খুশী। ছুটির শুরুটা ভাল হলেও ধীরে ধীরে পানসে হয়ে যাচ্ছে, বিরক্তিভাব আসছে। এখনি এ অবস্থা সামনের দিনগুলো নিয়ে কিছুই ভাবতে পারছেনা। এমন অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যে মানুষ বেশকিছু বিষয় রপ্ত করে ফেলেছে। আগে যারা হাত ধোয়াকে গুরুত্ব দিতনা তারাই এখন বার বার হাত মুখ ধুচ্ছে। মুখে মাস্ক পড়ছে। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার জন্য যে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে তা মেনে চলার চেষ্টা করছেন। অনেকে ধর্মে কর্মেও মন দিচ্ছেন। আল্লাহর কাছে পানাহ চাচ্ছেন।
অনেক সামর্থবান মানুষ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। বাড়ছে সাহায্য প্রার্থীর সংখ্যা। কেউ সাহায্য চাচ্ছেন আবার কেউ ঋণ চাচ্ছেন। আর দিন খেটে খাওয়া মানুষের অবস্থা আরো কাহিল হচ্ছে। সরকারি সাহায্য সহায়তা শুরু হয়েছে গতানুগতিক ধারায়। চিরা চরিত দলবাজি স্বজনপ্রীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। যারা প্রকৃত হকদার তাদের ভাগ্যে জুটছেনা। দিন দিন শ্রমজীবী কর্মহীন মানুষের অনাহার অর্ধাহার বাড়ছে। পেটের টানে এসব মানুষ ঘরের বাইরে বের হয়ে আসছে। তালাইমারী মোড়ে শ্রম বিক্রির স্থানে কাজের আশায় বসেছিলেন ক’জন শ্রমজীবী মানুষ। করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে কেন বাইরে এসেছেন এমন জিজ্ঞেস করতেই বলে ওঠেন, ভাই ঘরে অনাহারে মরে পড়ে থাকার চেয়ে ভাইরাসে মরাও ভাল। ঘরের বউ ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারছিনা। তাই পালিয়ে এসেছি।
একজন বলেন বিশ ত্রিশ টাকা থাকলে দেন। মুড়ি টুড়ি কিনে খাই। হোটেল রেস্তরা বন্ধ। ডাষ্টবিনে উচ্ছিষ্টও নেই। অনাহারে রয়েছে রাস্তার কুকুরগুলো।তাদের কান্নার আওয়াজ কানে বাজে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন