‘কাজ নেই, আয়ও নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। অনেকে নাকি সাহায্য দিচ্ছে। ভয়ে বাসা থেকে বের হইনি, কোন সাহায্যও পাইনি। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। জানি না কীভাবে বাঁচব’-এভাবে নিজের কষ্টের কথা জানালেন ফুটপাতের হকার আবুল হাশেম।
স্ত্রী আর চার সন্তান নিয়ে থাকেন নগরীর লালখান বাজারের বস্তিতে। স্ত্রী অন্যের বাসায় কাজ করেন, এখন তাও বন্ধ। ফুটপাতের পসরাও বন্ধ তার। দিনে এনে দিনে খাওয়া এই পরিবারটির মতোই নগরীর কয়েক লাখ নিম্ন আয়ের মানুষের দুঃখ কষ্টের যেন শেষ নেই। ভবিষ্যতের চিন্তায় অস্থির সকলে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমন্বিত প্রচেষ্টায় এসব অসহায়দের সরকারি-বেসরকারি খাদ্য সাহায্যের আওতায় আনা না গেলে সঙ্কট আরও তীব্র হবে। এর প্রভাবে সমাজে অপরাধ প্রবণতাও বাড়তে পারে।
লকডাউনে স্থবির বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম। বেকার স্বল্প আয়ের লোকজন। সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে হতদরিদ্রদের সাহায্য দেওয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এতে বিরাট একটি অংশ সাহায্য বঞ্চিত হচ্ছে। রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল, ফুটপাতে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষুদে ব্যবসায়ী ও হকারেরা বেকার হয়ে গেছেন। শাক-সবজি ছাড়া সব ধরনের ক্ষুদে ব্যবসা বন্ধ।
গণপরিবহন, মার্কেট, বিপণী কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার শ্রমিকও কর্মহীন। নগরীতে পৌনে দুই লাখ রিকশা, ঠেলা চালকের পাশাপাশি রয়েছে বিপুল সংখ্যক কুলি-মজুর। আছে দিন মজুরও, যারা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে দৈনিক শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। এখন তারাও কর্মহীন। পেটের দায়ে অনেকে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নামছেন, মিলছে না যাত্রী।
বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক দরিদ্র মানুষ এই নগরীতে আসেন। তারা মজুরের কাজ করে বাড়িতে টাকা পাঠান, এখন তাও বন্ধ। এতে করে গ্রামে তাদের পরিবারের সদস্যরাও আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। অভাবে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তারাও কষ্টে আছেন। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বস্তিগুলোতে এমন হাজার হাজার দরিদ্র পরিবার রয়েছে। হাহাকার চলছে তাদের পরিবারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন