রাজধানীর মোহাম্মপুর এলাকায় মাস্ক পরে মাত্র দুই মিনিটেই দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোহাম্মদপুরের কলেজগেট এলাকার বিল্লাহ ফার্মায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে।
ফার্মেসির মালিক নাহিদ বিল্লাহ জানান, গত বুধবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় যাওয়ার আগে ঝুাড়– দিয়ে পরিস্কার করছিলেন। এই সময় একজন ক্রেতা ওষধ কিনতে ফার্মেসিতে আসেন। ঠিক এমন সময় মাস্ক পড়া অবস্থায় অজ্ঞাত তিন ব্যক্তি ফার্মেসিতে ঢুকে ওই ক্রেতাকে চাপাতি দিয়ে মারতে শুরু করে। কিছু বুঝে উঠার আগেই তাদের মধ্যে একজন ফার্মেসিতে থাকা ল্যাপটপ ও ক্যাশ টাকা নিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার পর দ্রুত শ্যামলী পুলিশ বক্সে গিয়ে খবর দেই। পরে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ ও র্যাব-২ এর একটি টিম এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
গতকাল সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ঘটনাটি আমরা শুনেছি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনও করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। মামলা হলে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে ১টার মধ্যে হঠাৎ একটি ট্রাক ব্যাক গিয়ার দিয়ে এসে থামল বিল্লাহ ফার্মার সামনে। মুহূর্তেই দুজন চাপাতি ও একজন রড নিয়ে বিল্লাহ ফার্মায় প্রবেশ করে। সবার মাথায় গামছা বাঁধা, মুখে পরা মাস্ক। তখন ওষুধ কিনতে আসা আরমান নামরে এক ক্রেতা কিছু বোঝার আগেই তাকে চাপাতির উল্টা পাশ দিয়ে মারতে শুরু করা হয়। ফার্মেসির ভেতরে ছিলেন মালিক নাহিদ বিল্লাহ ও ইউসিবিএল ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি মো. সোহাগ। হঠাৎ এসেই কাস্টমারকে চাপাতি দিয়ে মারতে শুরু করলে কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি নাহিদ বিল্লাহ ও সোহাগ। একসময় আরমান, সোহাগ ও নাহিদকে মারতে মারতে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। আরমানের পকেটের মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। ফার্মেসিতে থাকা ল্যাপটপ নগদ টাকা নিয়ে দ্রুত চলে যায়। মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই ডাকাতি করে চলে যায় তারা।
ক্রেতা মো. আরমান বলেন, আমি ওষুধ কেনার জন্য ফার্মেসিতে আসি। আসার মিনিট খানেকের মধ্যে তিনজন ফার্মেসিতে ঢুকে আমাকে চাপাতির উল্টা পাশ দিয়ে মারতে মারতে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। আমার পকেটে থাকা মানিব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এখনও আমার ভয়ে গা কাঁপছে।
ইউসিবিএল এটিএম বুথের সিকিউরিটি মো. সোহাগ বলেন, দোকান বন্ধ করবেন নাহিদ স্যার। আমি খালি একটি পানির বোতল নিয়ে বের হব। এমন সময় তিনজন ফার্মেসিতে ঢোকে, দু’জনের হাতে চাপাতি একজনের হাতে রড ছিল। সবার মুখে মাস্ক পরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই চাপাতি দিয়ে ক্রেতাকে মারতে থাকে। আমি বললাম কী হয়েছে ভাই থামেন। এ কথা বলতে বলতে আমাদের চাপাতির ভয় দেখিয়ে দোকানের পেছনে নিয়ে যায়। অন্য দু’জন ল্যাপটপ ও ক্যাশের টাকা নিয়ে নেয়। গ্লাসের নিচে দৃশ্যমান ১০০ টাকার নোট ছিল সেটাও গ্লাস ভেঙে নিয়ে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন