মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার সিরাজদিখান বাজারের ৫০ জন দিনমজুর কর্মহীন হয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এক বেলা খেলে আরেক বেলা খাবার যোগানো কষ্ট হয়ে পরছে। সরকারীভাবে স্থানীয়রা ত্রান সামগ্রী পেলেও তাদের পাশে নেই কেউ। বর্তমান সংকটকালীন সময়ে সরকারী ত্রান দুরের কথা স্থানীয় কোন ব্যাক্তি তাদের কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতা করেনি। আর সে কারণে বেশীর ভাগ সময় অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞার কারণে বাজারে সব দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়েছে। এর পরও কাজ পেলে পরিবারের জন্য ডাল ভাতের যোগান দেয়া যাবে ভেবে বাজারে বসে থাকেন তারা। সরকারী ভাবে হতদরিদ্র ও অসহায় জনসাধারণের জন্য বরাদ্দকৃত ত্রান ইউপি সদস্য কর্তৃক বন্টনের দ্বায়ীত্ব দেয়া হয়েছে। তবে ইউপি সদস্যদের পছন্দের লোক গুলোকে ত্রান দিয়েছে বলে কয়েকজন দিনমজুর অভিযোগ তোলেন।
দিনমজুরদের সাথে কথা বলে জানা যায়,লকডাউনের আগেও যেখানে ৪শ থেকে ৫শ টাকা প্রতিদিন থাকতো। সেখানে এখন দুই তিন দিনে ২ শ থেকে ৩শ টাকা জোটে। সিরাজদিখান বাজারের দিনমজুরদের(লেবার) তিনটি দলে প্রায় ৫০ জন সদস্য রয়েছে। তাদের মধ্যে ছোট দলে রয়েছে সরদারসহ ৮ জন। বড় দলে রয়েছে সর্দারসহ ১৫ জন ও মেঝ দলে রয়েছে ৭ জন। তবে আলুর মৌসূমে কাজের চাপ বেশী থাকায় ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য যোগ হয়। মৌসম শেষে তারা রিক্সা ও ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান। এখন তারাও অলস সময় পার করছেন। কেউই দিচ্ছে না তাদের ত্রাণ সামগ্রী। বিভিন্ন জায়গা থেকে হাওলাত করে কোনরকমে কাটছে তাদের দিন।
ছোট দলের সর্দার হানিফ সরকার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আর লিখে কি হবে? বাজার লকডাউন করায় এখন আমাদের কাজ নেই। আপনি লিখলে কি আমাদের কেউ খাবার এনে দিবে? আমাদের দুঃখ কেউ বুঝবে না। কোন মতে আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধার নিয়ে সংসার চালাচ্ছি। সামনে কি হবে জানিনা!
সিরাজদিখান বাজারের ভ্যানচালক মানিক তালুকদার বলেন, আলু মৌসূমে দলের মধ্যে কাজ করি। অন্য সময় ভ্যান চালাই। লকডাউনের কারন আমিও কিছুদিন বন্ধ রেখেছি। তবে কেউ আমাকে সহযোগিতা না করায় জীবিকার জন্য
বাধ্য হয়ে বের হতে হচ্ছে।
সিরাজদিখান বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন বলেন, আমাদের বণিক সমিতির কোন টাকা নেই। তবে কেউ আমাদের থেকে নামের তালিকা চায়নি। এখন দেখি সরকারিভাবে যদি কিছু ত্রাণ আসে তাহলে দিতে পারব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশফিকুন নাহার বলেন,আমি চেয়ারম্যান সাহেবদের থেকে দিনমজুর দোকানদার তাদের সকলের নামের লিস্ট নিয়েছি। সেখানে তাদের নাম দিয়েছে কিনা সে বিষয়টা কনফার্ম হওয়ার দরকার। তবে এবার আমরা প্রতি ইউনিয়নে ১২৫ জন করে দিচ্ছি এবং আরো ৩০০ জনকে দেওয়া হবে। তবে তাদের স্ব-স্ব ইউনিয়নে নাম না উঠলে নাম উঠাতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন