করোনা চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সংকটে রয়েছেন সাতক্ষীরার ডাক্তার ও নার্স। এন নাইনটি মাস্কসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি না পাওয়ায় উদ্বিগ্ন তারা। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার শংকা নিয়েই স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
রোববার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের একজন অভিজ্ঞ মেডিসিন ডাক্তার বলেন, বিশ্বে তিন ধরণের পিপিই পাওয়া যায়। সাতক্ষীরায় ডাক্তার ও নার্সদের জন্য তৃতীয় স্তরের, নিম্ম মানের পিপিই দেয়া হয়েছে। এটিকে ঠিক পিপিই বলা যাবে না, এটি রেনকোর্ট বা গাউন। এছাড়া, ডাক্তার নার্সদের এপর্যন্ত একটিও এন নাইনটি মাস্ক দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি ফেস শিল্ড। করোনা চিকিৎসায় উন্নত মানের পিপিই যেমন দরকার তেমনি এন নাইনটি মাস্ক ও ফেস শিল্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারি হাসপাতাগুলোতে জীবনের ঝুঁকি ও কিছুটা শংকা নিয়েই ডাক্তারদের কাজ করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, করোনা চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে নির্ধারণ করা হয়েছে অথচ এখানে আজ পর্যন্ত একটি ভেন্টিলেশন মেশিন চালু করা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে পড়ে থাকা কয়েকটি ভেন্টিলেশন সম্প্রতি মেরামত করা হলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় তা কার্যকরি হচ্ছে না। তিনি বলেন, ভেন্টিলেশন যাতে দ্রুত সচল করা যায় সেবিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ চলছে। তবে, কবে নাগাদ এটি চালু হবে তা এখুনি বলা যাচ্ছে না।
মেডিকেল কলেজের এই অভিজ্ঞ ডাক্তার বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেশন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। কোনো রোগি যখন স্বাভাবিকভাবে সিলিন্ডারে অক্সিজেন নিতে পারেন না তখন তাকে ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। যদিও এখন পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় কোনো করোনায় আক্রান্ত পজেটিভ রোগি শনাক্ত হয়নি তারপরও সার্বিক প্রস্তুতির প্রয়োজন। তিনি ডাক্তার, নার্সসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত সকলকে উন্নত মানের পিপিই, এন নাইনটি মাস্ক ও ফেস শিল্ড সরবরাহ করা এবং দ্রুত ভেন্টিলেশন চালু করার আহবান জানিয়েছেন সরকারের কাছে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের একজন নার্সিং সুপারভাইজার বলেন, এখানে ১৬৫ জন নার্স দুই শিফটে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এর মধ্যে ৫ জন নার্স করোনা রোগি সেবা দেওয়ার জন্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পোস্টিং হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের নার্সরা সুরক্ষিত নয়। জীবন মরনের ঝুঁকিতে নার্সরা রোগিদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরায় ডাক্তারদের সংগঠনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সাতক্ষীরা জেলায় ২২ লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করেন। অথচ জেলায় স্বাস্থ্যসেবার অবস্থা খুবই নাজুক। এরপর করোনা নিয়ে ডাক্তারদের সাথে সরকারের বৈষম্যতা চলছে। ডাক্তার নার্সসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতদের পর্যাপ্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে একাধিকবার বিষয়টি জানানোর পরও অদ্যবধি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন