করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লাগাতার ছুটির প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের সমৃদ্ধ প্রাণিসম্পদ খাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে। গত প্রায় এক মাসে ডিমের দাম প্রায় ৩৫% হ্রাস পাবার সাথে ব্রয়লার, সোনালী ও কক মুরগির দর পতনে খামারিরা চরম বিপর্যয়ের কবলে। পাশাপাশি চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় খামারিরা গরুর দুধ নিয়েও চরম বিপাকে।
পরিস্থিতি উত্তরণে কোন পথ জানা নেই কারো। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক বেসরকারি পোল্ট্রি ইতোমধ্যে বন্ধের মুখে। চাহিদা না থাকার সাথে দর পতনের কারণে নতুন করে কেউ আর বাচ্চা সংগ্রহ ও পালন করছেন না। ফলে আগামী দিন পনের পরে বাজারে সব ধরনের মুরগির সঙ্কট সৃষ্টিরও আশঙ্কা রয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের দায়িত্বশীল কাউকে টেলিফোনে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে মাঠ পর্যায়ে একাধিক খামারি ও বিক্রেতাদের দাবি লাগাতার সরকারি ছুটিতে বাজারে ক্রেতা সঙ্কট চলছে। পরিবহন ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার কারণেও বাজারে মুরগি আসছে কম। আবার সম্প্রতি বরিশাল ও পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় লকডাউন ঘোষিত হওয়ায় ক্রেতারা বাজারেই আসছেন না। উপরন্তু বেশিরভাগ ক্রেতার হাতে টাকা না থাকায় তারা এখন কেনাকাটা করছেন যথেষ্ট হিসেব করেই।
ফলে পল্ট্রি শিল্পে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। বাজারে ব্রয়লারসহ অন্যান্য মুরগি থাকলেও ক্রেতা নেই। ফলে ইতোমধ্যে সব ধরনের মুরগির দামও প্রায় ৩৫% হ্রাস পেয়েছে। ব্রয়লার মুরগি এখন ১১০ টাকা। তারপরেও ক্রেতা নেই। স্থানীয় গাভীর দুধের লিটার ৮০ টাকা থেকে ইতোমধ্যে ৬০-৬৫ টাকায় হ্রাস পেয়েছে।দক্ষিণাঞ্চলে প্রাণিসম্পদের হালনাগাদ তথ্য অধিদফতরের কাছে নেই। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী এ অঞ্চলে বছরে প্রায় ৫০ কোটি ডিম, দেড় লাখ টন দুধ এবং দেড় লাখ টন গোশত উৎপাদন হয়ে থাকে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চল গোশত উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৬ হাজার বেসরকারি লেয়ার, ব্রয়লার ও হাঁসের খামারে প্রায় ২৫ লাখ হাঁস-মুরগি পালন হয়ে থাকে। যার মধ্যে হাঁসের সংখ্যা প্রায় ১.৬০ লাখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন