প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সারা বাংলাদেশে দৃষ্টান্ত হতে পারে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সেবা। দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে সরকারী নিষেধাজ্ঞা শুরুর সাথে সাথেই ইউনিয়নবাসীর জরুরী সেবায় নেমে পড়ে বাঁশগাড়ি এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান সুমন। তিনি ইউনিয়নবাসীকে ঘরে রাখার জন্য বাংলাদেশে প্রথম চালু করেন হটলাইন সেবা। যেখানে ইউনিয়নবাসীর কারো ঘরে খাদ্য সংকট দেখা দিলে হটলাইনের নাম্বারে ফোন দিলে বা অনলাইন/ফেসবুকে শুধু খাদ্য সহায়তা লাগবে বলে তথ্য দিলেই সর্বোচ্চ ৩০মিনিটের মধ্যে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, রোশন, লবন, আলু, আটা সহ চেয়ারম্যান নিজে অথবা তার পক্ষ থেকে হাজির হচ্ছে সেই গ্রামবাসীর দরজায়। তবে এক্ষেত্রে কেউ কারো পক্ষে ফোন কল বা অনলাইনে তথ্য দিলেও খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
অপরদিকে হটলাইন চালুর পরেও নিজস্ব অর্থায়নে ১৬৯০জনকে রাতে অতিগোপনে উক্ত খাদ্য সামগ্রী ত্রাণ বিতরন করা হয়েছে এবং তা এখনো চলমান রয়েছে।
সরকারী বরাদ্দ ১০টন চাল ইউপি সদস্যদের মাঝে সমভাবে বন্টন করা হয়েছে এবং তারা তা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পৌঁছে দিয়েছে। অপরদিকে সারা বাঁশগাড়ি ইউনিয়নে জীবানু নাশক স্প্রে করা হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে এবং একই সাথে সচেতনতামূলক মাইকিং ও লিফলেট বিতরন শুরু থেকে এখনো অবিরাম চলমান রয়েছে।
বাজার ব্যবস্থাপনায় নেয়া হয়েছে শক্ত অবস্থান। যেখানে খাসেরহাট সেতু থেকে শুরু করে ৩০মিটার দূরে দূরে কাঁচা বাজারের দোকান বসানো হয়েছে। আর চেয়ারম্যান নিজে উপস্থিত থেকে ক্রেতাদের জন্য ৩/৪ফুট দূরুত্বে গোল বৃত্তাকার এঁকে দিয়ে বাজার ব্যবস্থাপনায় ঝুঁকি মুক্ত করেছেন। সাথে প্রতিনিয়ত জীবানু নাশক স্প্রে চলছেই। সাধারন মানুষের হাত ধোঁয়ার জন্য মোটর বসিয়ে স্থায়ী হাত ধোঁয়ার ব্যবস্থা করা সহ হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেছেন। এছারা বাঁশগাড়ি এলাকার এক যুবক করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলে তার বাড়িতে ৩মাসের খাদ্য সামগ্রী ১০টি মুরগি, ১৪টি মাছ, চাল, ডাল, তেল, লবন সহ কাঁচা বাজার দেয়া হয় চেয়ারম্যানের নিজস্ব অর্থায়নে। যদিও পরীক্ষার পরে রিপোর্ট আসে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হননি।
এমন মহোতি উদ্যোগ গ্রহন করায় বাঁশগাড়ি ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান সুমনের সেবা দানের দৃষ্টানের আলোচনা শুধু বাঁশগাড়ি ইউনিয়ন, কালকিনি উপজেলা ও মাদারীপুর জেলা নয় তা ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশের জেলা বরিশাল, শরিয়তপুর, ফরিদপুর সহ বিভিন্ন জেলা উপজেলায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন