শ্রীনগরে আইসোলেশন কেন্দ্রে আনা হয়না করোনা আক্রান্ত রোগী। প্রাথমিক চিকিৎসার অভাবে এই ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। উপজেলার পাটাভোগ, ষোলঘর ও ভাগ্যকুলসহ ৩টি ইউনিয়নে এপর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৯ জন। এদের মধ্যে এখনও কোনও করোনা রোগীর ভাল হওয়ার ছাড়পত্র আসার খবরও পাওয়া যায়নি। আক্রান্ত রোগীদের রাখা হচ্ছে বাড়িতেই লকডাউনে। এতে করে ওই পরিবারের অন্য সদস্যরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়াও লকডাউন অমান্য করে আক্রান্ত রোগীর বাহিরে আসার কারণেও এলাকায় আতঙ্কে বিরাজ করছে। অথচ করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশনে না রেখে লকডাউনে রাখা হচ্ছে কেন এনিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের ফৈনপুরে গত ১১ এপ্রিল প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়। এর পরে ওই আক্রান্ত ব্যক্তির পুত্রবধু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এর পরে পর্যায়ক্রমে ষোলঘর এলাকার গোল্ডেন সিটির ভাড়াটিয়া একই পরিবারে স্বামী-স্ত্রীসহ ৯ বছরের কন্যাও করোনায় আক্রান্ত হন। তার কয়েকদিন পরে পাটাভেগের বেজগাঁও গ্রামে এক নারী ও ভাগ্যাকুল এলাকার কামারগাঁও গ্রামে এক পুরুষ করোনা সনাক্ত হন। সর্বশেষ গত ২৭ এপ্রিল বেজগাঁও আক্রান্ত ওই নারীর স্বামী ও ষোলঘর সেনপাড়ায় এক মহিলা নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন। এনিয়ে উপজেলায় সর্বমোট ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হন।
এর আগে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাস রোধে সরকার সাধারণ ছুটির ঘোষনা করেন। তখন থেকেই করোনা যাতে সংক্রমিত হয়ে রোগীর সংখ্যা না বাড়ে সে বিষয়ে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহন করেন সরকার। এছাড়াও করোনা সংক্রমণ রোধে স্থানীয় সাংসদ মাহী বি চৌধুরীর ব্যক্তি উদ্যোগে আইসোলেশন কেন্দ্র খোলার জন্য ষোলঘরে অবস্থিত ট্রমা সেন্টারকে নির্ধারণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় তার উদ্যোগে ট্রমা সেন্টারে পানি, বিদ্যুৎ, বেডসহ প্রায় ৩০টি অক্সিজেন সেট, প্রোটেবল এক্সরে, থারমাল মিটার ও প্রয়োজনীয় ওষুধসহ প্রস্তুত করা হয়। আক্রান্ত রোগীদের এখানে রেখে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে। অথচ উপজেলায় করোনা রোগী সনাক্ত হলেও ট্রমা সেন্টারে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও আইসোলেশন কেন্দ্র প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়। সেখানেও নেই কোনও আক্রান্ত রোগী। অথচ আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন কেন্দ্রে না রেখে লকডাউনে রেখেই তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার দেওয়া হচ্ছে বলে দাবী সংশ্লিষ্টদের। স্থানীয়রা জানায়, নামে মাত্র লকডাউনে রাখা হয়েছে রোগীদের। নেই কোনও নিরাপত্তা কর্মী। মাঝেমধ্যে তকিদার দফাদার দেখা গেলেও বেশীর ভাগ সময়েই কাইকেই চোখে পরেনা। এতে করে আক্রান্ত রোগী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বাহিরে এসে পরছে। কয়েকজন জানান, গত সোমবার বিকালের দিকে সেনপাড়ায় করোনা আক্রান্ত রোগীকে রাস্তায় ঘুরাঘরি করতে দেখা গেছে। এতে করে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে খবর পেয়ে ইউএনও মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার এসে তাকে বুঝিয়ে সুজিয়ে লকডাউনে থাকতে বলেন। অন্যদিকে বেজগাঁও গ্রামে আক্রান্ত নারীও লকডাউনে নেই। তার স্বামী গত সোমবার করোনায় আক্রান্ত হন। বেজগাঁওয়ে কোভিট-১৯ আক্রান্ত নারী লকডাউনে না থাকায় তাকেও খোঁজা হচ্ছে বলে জানাযায়। সুশিল মহলের মানুষ বলেন, উপজেলায় আইসোলেশন কেন্দ্র থাকা সর্তেও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের কেন বাড়িতে লকডাউনে রাখা হচ্ছে। তাদেরতো আইসোলেশনে রাখা হলে প্রাথমিক চিকিৎসাসহ করোনা সংক্রমণের হাত থেকে হয়ত রক্ষা পাওয়া যেত। আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন কেন্দ্রে সংরক্ষিতভাবে রাখা গেলে হয়ত একই পরিবারে অন্যরা আক্রান্ত হতোনা এমনটাই মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের লকডাউনে রাখা হয়েছে। কারো অবস্থার অবনতি হলে আমাদেরকে জানাবেন। এর পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন