ভরা গ্রীষ্ম ঋতু। জ্যৈষ্ঠ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে। আবহাওয়া এ মুহূর্তে বৈরী নয়। তাপমাত্রার পারদ অর্থাৎ ‘গরম’ সহনীয় রয়েছে। আকাশে বিক্ষিপ্ত মেঘ। কোথাও কোথাও হিমেল দমকা বাতাসের সঙ্গে ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিও পড়ছে। কালবৈশাখীর ঘননটা ও সতর্কবার্তা আপাতত নেই।
তবে ঘন ঘন বজ্রপাতের শঙ্কার মৌসুম এটি। বেড়েছে বজ্রপাতের হার। বজ্রপাতে হতাহতের আধিক্যও উদ্বেগজনক।
চলতি সপ্তাহের কৃষি আবহাওয়া পূর্বাভাসে উপ-পরিচালক কাওসার পারভীন জানান, এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। মাঝেমধ্যে থাকবে কিছুটা মেঘ-বৃষ্টির প্রবণতা।
গত ২৪ ঘন্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ হয়েছে। রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় সর্বোচ্চ বর্ষণ নেত্রকোনায় ৭৫ মিলিমিটার। দেশের অধিকাংশ জেলায় তাপমাত্রা ৩২/৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে। স্বস্তিকর অবস্থা আবহাওয়ায়।
ঘূর্ণিঝড় আমফান দুর্বণ স্থল লঘুচাপ আকারে ভারতের দিকে কেটে যাওয়ার পরই সমুদ্র বন্দরকে দেয়া সতর্ক সঙ্কেত তুলে নেয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ বৈরী আবহাওয়ায় বন্দরসমূহকে ফের সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে। সতর্ক বার্তায় আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থনীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সমুদ্রে বায়ুচাপের তারতম্য ও আধিক্য এবং সেই সঙ্গে অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের
নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি
হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। আজ দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে।
এদিকে বঙ্গোপসাগর অশান্ত থাকার ফলে এবং অমাবস্যার সক্রিয় প্রভাবে দেশের প্রত্যন্ত চর-উপকূল-দ্বীপাঞ্চলের নিচু এলাকায় আবার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা ও সতর্কতার কথা জানায় আবহাওয়া বিভাগ। এতে করে গত ২২ মে’র ঘূর্ণিঝড় আমফান জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে এবং তারও আগেই কমবেশি বিধ্বস্ত অবস্থায় রয়েছে। এখনই যদি ফের জলোচ্ছ্বাস ছোবল হানে তাহলে উপকূলবাসী জানমালের আরও ঝুঁকিতে গিয়ে পড়বেন। দক্ষিণে উপকূলীয় বিভিন্ন স্থানে গ্রাম-জনপদ ডুবে আছে। নিয়মিত জোয়ারের পানি ঢেউ খেলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন