ময়মনসিংহে করোনা হাসপাতাল স্থাপনে প্রশাসনের রশি টানাটানির পর অবশেষে নতুন ভবনের ৫ তলা থেকে ৮ তলায় স্থাপনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে মন্ত্রণালয়। ফলে পক্ষে বিপক্ষের ক্ষোভ অসন্তোষের মধ্যেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনে শুরু হচ্ছে করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ২৮মে এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ লক্ষী নারায়ণ। তিনি জানান, নতুন ভবনের ৫ তলা থেকে ৮ তলায় করোনা হাসপাতাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয়ের। এ সিদ্ধান্ত আমার নয়, কর্তৃপক্ষের।
গত বৃহস্পতিবার ২৮ মে পর্যন্ত ময়মনসিংহ বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ময়মনসিংহ জেলায় ৪১৬, নেত্রকোনায় ২২৫, জামালপুরে ১২৮ ও শেরপুরে ৮৯।
তবে সিভিল সার্জন ডাঃ মশিউল আলম জানান, এ পর্যন্ত জেলায় করোনা সনাক্ত হয়েছে ৪০৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৪৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ৩ জন। বাড়ী ফিরেছে ২২৯ জন। হাসপাতালে এখনো ভর্তি আছে ২০জন।
সূত্র জনায়, নগরীর এস.কে হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে মাত্র ২৯ জনের। কিন্তু এই হাসপাতালে চিকিৎসা ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৩শ’ জনের মত। এই হাসপাতালটি আরো পরিচর্যা করে ধারণ ক্ষমতা বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য অনেকের।
ময়মনসিংহ নাগরিক আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট আনিসুর রহমান খান বলেন, ময়মনসিংহবাসীর প্রত্যাশা ও চাহিদার প্রেক্ষিতে গত চার বছরে হাসপাতালের নতুন ভবন তিল তিল করে গড়ে তোলা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে বহুল প্রত্যাশিত ক্যাথল্যাব, করোনারি কেয়ার ইউনিট, আইসিইউ ও ডায়ালাইসিস সহ আধুনিক প্রযুক্তি ও চিকিৎসা সেবার ওয়ার্ড ইউনিট। নতুন ভবনে করোনা হাসপাতাল রুপান্তরের সিদ্ধান্তে এসব সেবা ভেঁঙ্গে পড়বে, ধ্বংসের মুখে যাবে মূল্যবান মেশিনারিজ সামগ্রী। সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতি সাধন হবে এবং লন্ডভন্ড হয়ে যাবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় স্বাস্থ্যখাত।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাছির উদ্দিন আহমেদ জানান, করোনার কারণে একাধিক ভবন খালি থাকার পরও নতুন ৮ তলা ভবনকে করোনা হাসপাতাল করার ঘোষনা আত্বঘাতী ছাড়া আর কিছুই নয়। কোভিট-১৯ চিকিৎসায় জড়িত চিকিৎসক ও নার্সসহ স্বাস্থ্য কর্মীদের থাকা খাওয়াসহ ব্যাক্তিগত সুরক্ষায় সব ধরনের উদ্যোগ নেয়ার কথা উল্লেখ করেন হাসপাতাল পরিচালক।
একাধিক ব্যক্তি জানান, নতুন ভবনকে কোভিট হাসপাতাল করার চিন্তা থেকে বের হয়ে না আসলে নেফ্রোলজি, আইসিইউ, সিসিইউসহ গাইনী ও জেনারেল সার্জারী রোগীরা এতে মারাত্বক সমস্যায় পড়বে। তবে বিকল্প হিসাবে শহরের প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে কোভিট হিসাবে প্রস্তুুত রাখা উচিত বলেও তারা দাবি করেন । তাছাড়া এসকে হাসপাতালে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হচ্ছে, প্রয়োজনে সেখানে বেড বাড়িয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম আরো জোরদার করা যায়।
হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ সূত্র জানায়, অপর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন ও সেন্টাল এসির এই নতুন ভবনটিকে কোভিড হাসপাতাল করা হলে গুরুত্বপূর্ন এসব ওয়ার্ড ইউনিট মেশিনারিজসহ ক্যাবল, ওয়্যারিং ও প্লান্ট সরিয়ে পাশের পুরনো চারতলা ভবনে স্থানান্তর যেমন বহু সময় দরকার তেমনি মোটা অংকের টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা স্পর্শকাতর মেশিনারিজ অকেজো ও বিনষ্ট হওয়ার আশংকা থেকে যাচ্ছে ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন