বিশেষ সংবাদদাতা : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষে ৫০ ওভারের ম্যাচের বাইরে মুস্তাফিজুর গত ৮ মাস ! সর্বশেষ যে চারটি আসরে খেলেছেন, তার সবক’টিই টুয়েন্টি-২০ ফরমেটের। ওই ৪টি আসরে তিন তিনবার পড়েছেন ইনজুরির কবলে। প্রথমবার সোলডার ইনজুরি, পরের বার সাইড স্ট্রেইন, পরে হ্যামেস্ট্রিং। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের ধাঁধায় ফেলতে কাটার ডেলিভারীর বৈচিত্র্য আনতে যেয়ে একটার পর একটা চোট পাচ্ছেন ২০ বছরের ছেলেটি। ওই চারটি আসরেই বিসিবির ফিজিও নির্দেশিত ফর্মুলা মেনে সংক্ষিপ্ত স্পেলে বোলিং করেছেন মুস্তাফিজুর। টুয়েন্টি-২০ ম্যাচে ৩ স্পেলে ৪ ওভার, কোন স্পেলই ২ ওভারের বেশি নয়। গত ৮ মাস ওয়ানডের বাইরে বলেই এই মুখস্থ নিয়মে বোলিং করছেন মুস্তাফিজুর। কিন্তু ৫০ ওভারের ম্যাচে তো আর এই নিয়মে চলবে না, অন্তত: একটি স্পেল তো ৪ ওভার করতেই হবে। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার আগে ভ্রমণ ক্লান্তি নিয়ে এসেক্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ খেলেছেন, করেছেন বাজিমাত (৪/২৩) মুস্তাফিজুর মনের জোরেই। কিন্তু ইংলিশ কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার আগে ম্যাচ খেলা যে কতোটা দুরূহ, দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে তা টের পেয়েছেন মুস্তাফিজুর। গত পরশু গøুস্টারশায়ারের বিপক্ষে ৫০ ওভারের ম্যাচে খেলানোর জন্য একদিবসীয় ম্যাচের অনুশীলনে মুস্তাফিজুরকে নামিয়ে দিয়ে ঠিক করেনি সাসেক্স কোচ। সোলডার ইনজুরিতে মুস্তাফিজুর পড়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট প্রেমীদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছেন। চুক্তিতে আছে বলেই টি-২০’র পাশাপাশি সাসেক্সের হয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলার কথা মুস্তাফিজুরের। তবে মুস্তাফিজুরকে ব্যবহারে সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের শর্ত আছে বিসিবির, সাসেক্সকে সে কথাই মনে করিয়ে দিয়েছেন বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজনÑ ‘মুস্তাফিজ আমাদের ক্রিকেটের সম্পদ। শুধু মুস্তাফিজ একাই নন, কোনও ক্রিকেটারকে নিয়েই আমরা ঝুঁকি নেয়ার পক্ষে নই, আপোষ করার প্রশ্নই উঠে না। মুস্তাফিজের ইংল্যান্ড যাওয়ার জন্য আমরা তখনই এনওসি দিয়েছি, যখন সবদিক থেকেই সে ভ্রমণ করে ম্যাচ খেলার যোগ্য হয়েছে।’
রোহিত শর্মা, রায়না, কোহলী, মাইকেল ক্লার্করা ধরতে পারেনি তার কাটার। ম্যাচের আগে এই কাটার মাস্টারকে নিয়ে যতোই ভিডিও এনালাইসিস করুক না কেন, কোন লাভ হচ্ছে না প্রতিপক্ষদের। ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন কৌশল নিজ থেকে করছেন উদ্ভাবন। গত পরশু অনুশীলনের সময়ে সোলডারে চোট পাওয়ার নেপথ্য কারণ নাকি এটাই। এমনটাই মনে করছেন বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার খালেদ মেহমুদ সুজনÑ‘আন্তর্র্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিদিন তাকে কেউ না কেউ মনিটর করছে, তার বোলিং সম্পর্কে কিছু জানছে এমন ধারণা থেকেই প্রতিনিয়ত ছোটখাটো পরিবর্তন আনতে চায়। ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতে ও চায় ম্যাচের মধ্যে নতুন নতুন কিছু করতে। হয়তো এ কারণেই একটু পেয়েছে।
রয়েল লন্ডন ওয়ানডে কাপে সাসেক্সের পরবর্তী ম্যাচ ২৮ জুলই, গøামারগনের বিপক্ষে। আগামীকাল ন্যাট ওয়েস্ট টি-২০ বøাস্টে হোম গ্রাউন্ড হোভ এ সাসেক্স খেলবে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে। তবে ওই দু’টি ম্যাচে মুস্তাফিজুরকে বিশ্রামে রাখার পক্ষে বিসিবি। ব্যথা থেকে পুরোপুরি উপশম না হলে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে খেলানো হবে না মুস্তাফিজুরকে এটাই জানিয়েছেন সুজনÑ ‘যদি হালকা ব্যথা থাকে তাহলে অই ব্যথা নিয়ে খেলবে না মুস্তাফিজুর, সে নির্দেশনাই দেয়া আছে। ইংল্যান্ডে চিকিৎসা সেবার মান ভাল বলে সেখানেই মুস্তাফিজুরের চিকিৎসার পক্ষে বিসিবি পরিচালক খালেদ মেহমুদ সুজন- ‘এখনই দেশে আনার কথা ভাবছি না। তার ইনজুরির সকল দায়িত্ব ক্লাবই নিবে। কারণ যেহেতু ও সাসেক্সে চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়, ইনস্যুরেন্স তো থাকবেই। আর যদি নাও থাকে তাহলে বোর্ড থেকে ওকে সেরা চিকিৎসাটা দিয়ে আনার চেষ্টা করবো। যদি বড় কোন ইনজুরিও হয় তাহলে আমার মতে বোর্ডেরও উচিৎ ওইখানে রেখে ইনজুরিটা একেবারে সারিয়ে আনা উচিৎ।’
সাসেক্সের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় বলেই মুস্তাফিজুরের চিকিৎসা ভার এই ক্লাবটির বলেও জানিয়েছেন সুজনÑ‘ওর ইনজুরির সকল দায়িত্ব ক্লাবই নিবে। কারণ যেহেতু ও চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়, ইনস্যুরেন্স তো থাকবেই। আর যদি নাও থাকে তাহলে বোর্ড থেকে ওকে সেরা চিকিৎসাটা দিয়ে আনার চেষ্টা করবো, যেহেতু ও ওখানে আছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন