চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যাত্রী সংকটে পড়েছে লঞ্চগুলো। ধারণ ক্ষমতার চারভাগের একভাগ যাত্রীও মিলছে না লঞ্চে । এমন পরিস্থিতিতে ইতোমধ্যে ১০টি লঞ্চের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী সংকট অব্যাহত থাকলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে আরো কিছু লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাবে ৬২ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৩১ মে থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। ওই সপ্তাহে যাত্রীদের ব্যাপক চাপে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হয়। যাত্রীদের চাপ সামলাতে গিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে বিপাকে পড়তে হয়। কিন্তু এক সপ্তাহ পরেই পাল্টে গেছে চিত্র।
একান্ত ঠেকায় না পড়ে কেউ এই সময় লঞ্চে যাত্রী হতে চান না। যারা নিয়মিত চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যাতায়াত করতেন তারা করোনা দুর্যোগে নিজেকে সুরক্ষার চেষ্টা করছেন।
চাকরিজীবিরা নিয়মিত আসা যাওয়ার পরিবর্তে এখন কর্মস্থলে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে চাঁদপুরের অধিকাংশ ব্যবসায়ীরা তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে পণ্য সামগ্রী কেনাকাটা করে কুরিয়ার সার্ভিসে নিয়ে আসছেন। এসব কারণে নৌপথে বিশেষ করে যাত্রীবাহী লঞ্চে চাপ কমেছে অধিকহারে।
চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে দেখা গেছে লঞ্চগুলো একেবারেই যাত্রী শূন্য। মালিক পক্ষের প্রতিনিধি তথা বেশ ক'জন ঘাট সুপারভাইজার জানান, 'করোনা সংক্রমনের ভয়ে যাত্রিরা লঞ্চে উঠতে চায় না। ধারন ক্ষমতার চারভাগের একভাগ যাত্রী ও পাচ্ছিনা। এমন পরিস্থিতিতে মালিকপক্ষ লঞ্চ বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।'
চাঁদপুর লঞ্চ টার্মিনালে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত সাড়ে ১২ পর্যন্ত সিডিউল সময়ে ৩০ টির মতো লঞ্চ চলাচল করে। গত ৩১ মে সরকার লকডাউন তুলে নিলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌ পথে লঞ্চ চলাচল শুরু করে। ৪/৫ দিন যাত্রীর ভীড় থাকলেও এখন একেবারেই যাত্রী শুন্য।
চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটের একাধিক সূত্র জানায়, যাত্রী সংকটে রফ রফ কোম্পানীর ৩টি লঞ্চ, সোনার তরীর ২টি লঞ্চ, ময়ূর কোম্পানীর ২টি লঞ্চ, জম জম কোম্পানীর ১টি লঞ্চ, তাকোয়া ও মিতালি ৭ নামক লঞ্চসহ ১০টি লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিআইডব্লিটিএর পরিবহন পরিদর্শক মাহতাব জানান, ঢাকা থেকে যে সব লঞ্চ চাঁদপুর ঘাটে আসে, সেগুলোই আবার ছেড়ে যাচ্ছে। তবে ১শ' থেকে ২৫০ জন যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। এতে মালিক পক্ষের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
লঞ্চ মালিক পক্ষের প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, করোনা মহামারিতে যাত্রী না পেয়ে ইতিমধ্যে ১০টির মতো লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এভাবে যাত্রী সংকট দেখা দিলে চাঁদপুর-ঢাকা নৌপথে যেকোনো সময় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কারণ ধারন ক্ষমতার যাত্রী পাওয়া না গেলে মালিকপক্ষ খরচ মেটাতে পারে না। তাই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন