স্পোর্টস রিপোর্টার : অনেক আশা আর স্বপ্ন নিয়ে প্রথমবারের মতো খেলতে যান ইংল্যান্ডের কাউন্টিতে। সাসেক্সের হয়ে অভিষেকও হয় রাসজিক। প্রথম ম্যাচে টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন মুস্তাফিজুর রহমান। পরের ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য। ওয়ানডে কাপে কাটার মাস্টারের অভিষেক হওয়ার কথা ছিল গত রোববার। কিন্তু এর আগেই মাথাচাড়া দেয় বাঁ কাঁধের পুরোনো চোট। আর এই চোটেই আপাতত সাসেক্স অধ্যায় শেষ বলেই ধরে নেওয়া যায় মুস্তাফিজের। গতকাল দুপুরে নিজেদের ওয়েবসাইটে কাউন্টি ক্লাবটি জানিয়েছে, চোটের কারণে ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট ও রয়্যাল লন্ডন ওয়ানডে কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলি আর খেলতে পারবেন না বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার। সাসেক্স যদি নক আউট পর্বে ওঠে, তাহলেও খেলা নিশ্চিত নয় মুস্তাফিজের। এই সপ্তাহে আরেকবার কাঁধের চোটের জায়গায় স্ক্যান করানোর পর পরিস্থিতি বুঝে বিসিবির সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সাসেক্স। তবে সাসেক্সের নক আউট খেলার সম্ভাবনা কমই। ন্যাটওয়েস্ট টি-টোয়েন্ট ব্লাস্টে সাউথ গ্রুপে তারা আছে ছয় নম্বরে। আর ওয়ানডে কাপে ৫ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে সাউথ গ্রুপের ৯ দলের মধ্যে আছে তলানিতে। তাছাড়া কোনোভাবে সাসেক্স সক আউট পর্বে গেলেও মুস্তাফিজের চোটের যে অবস্থা, তাতে খেলার সম্ভাবনা সামান্যই। গতকালই বিসিবি জানিয়েছে, মুস্তাফিজকে নিয়ে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নেওয়া হবে না।
আগের দিন সন্ধ্যায় ইংল্যান্ডে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করেছেন মুস্তাফিজ। গতকাল বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস জানালেন, মুস্তাফিজকে নিয়ে খুবই সতর্ক বিসিবি, ‘ওর কাঁধে বাড়তি কিছু লিকুইড জমে আছে। আরেকটি এমআরআই করানো হবে ওখানে। এরপর বুঝতে পারব আমাদের করণীয়। ইনজেকশন দেওয়া হবে নাকি অপারেশন, সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ওখানকার চিকিৎসকদের মতামত শুনব আমরা, আমাদের ফিজিও-ডাক্তাররা তো আছেনই। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
এই ধরনের চোটের চূড়ান্ত সমাধান করতে হলে অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই। তবে অস্ত্রোপচার করলে মাস ছয়েকের জন্য মাঠের বাইরে ছিটকে যেতে পারেন মুস্তাফিজ। কিন্তু অক্টোবরে ইংল্যান্ড সিরিজ থেকে আগামী জুলাই পর্যন্ত টানা খেলা মুস্তাফিজের। সেক্ষেত্রে এখনই অস্ত্রোপচার করানো হবে কিনা, সেই প্রশ্নও থাকছে। জালাল ইউনুস জানালেন, পরিস্থিতি যেটা দাবি করবে, সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, ‘অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হলে সেটাই করা হবে। পরিস্থিতি মতোই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুস্তাফিজ আমাদের বড় এক সম্পদ। ওকে নিয়ে কোনো ঝুঁকিই নেওয়া হবে না।’
সাসেক্সও একরকম বিদায়ই জানিয়ে দিয়েছে মুস্তাফিজকে। মুস্তাফিজের প্রশংসা করে সামনে আবার তাকে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ জানিয়েছেন সাসেক্সের অধিনায়ক লুক রাইট, কোচ মার্ক ডেভিস ও সতীর্থরা। চোট থেকে মুস্তাফিজের দ্রুত আরোগ্য লাভ এবং ভবিষ্যতের জন্য শুভকামানও জানিয়েছে সাসেক্স। কাজেই ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে মুস্তাফিজের প্রথম অভিযান আপাতত শেষ, ধরে নেওয়াই যায়। অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডে খেলতে গিয়ে মাত্র এক ম্যাচ খেলেই চোট নিয়ে ফিরেছিলেন দেশে। এবার তার ইংল্যান্ড অভিযান হয়তো শেষ হচ্ছে ২ ম্যাচেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন