রোগীর সেবা দিতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। তাকে সারিয়ে তুলতে এগিয়ে আসেন সবাই। করোনাজয়ী এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজন তাকে প্লাজমা দেন। চট্টগ্রামে তাকেই প্রথম প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়। তিনি করোনাজয়ও করেন। তবে এরপরও তাকে বাঁচানো যায়নি। সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন ডা. মো. সমিরুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সমিরুল ইসলাম বুধবার বেলা আড়াইটায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। তার বন্ধু চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন শ্যামল জানান তিনি আর বেঁচে নেই। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, গত ১৩ জুন থেকে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। করোনার কারণে তার ফুসফুসে যে ক্ষতি হয়েছে তা সারানো যায়নি। হঠাৎ ভেন্টিলেশন প্রয়োজন হলে তাকে ভেন্টিলেটর সাপোর্ট দেয়া হয়। তারপরও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
মেধাবী এবং মানবিক এ চিকিৎসকের ইন্তেকালের খবরে চট্টগ্রামের চিকিৎসকসহ সর্বস্তরে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্ত্রী চমেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোনা ইসলাম ও দুই সন্তান রেখে গেছেন তিনি। বিখ্যাত অর্থোপেডিক চিকিৎসক ডা. মনজুরুল ইসলামের জামাতা ডা. সমিরুল চিকিৎসক হিসাবে ছিলেন রোগীবান্ধব।
চিকিৎসা দিতে গিয়ে তিনি এবং তার স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হন। পরে তার দুই সন্তানের করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। পরিবারের বাকি সদস্যরা বাসায় থেকে সুস্থ হলেও তাকে নিতে হয় হাসপাতালে। ২ মে তাকে চমেক হাসপাতালের কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে আইসিইউতে রাখতে হয়। দুই দফা তাকে প্লাজমা দেওয়া হয়। প্লাজমা দেওয়ার পর গত ৩১ মে দ্বিতীয় দফা করোনা টেস্ট করানো হলে ফলাফল নেগেটিভ আসে। চিকিৎসকেরা জানান, করোনামুক্ত হলেও করোনার কারণে তার ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তার পরও আশা ছাড়েননি কেউ। তবে একমাসের বেশি সময়ের এই লড়াইয়ে সবাই পরাজিত হলেন। একজন মানবিক চিকিৎসককে হারালো চট্টগ্রাম। এনিয়ে চট্টগ্রামে করোনা আর করোনা উপসর্গ নিয়ে সাতজন চিকিৎসক মারা গেলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন