বার্সেলোনার বিপক্ষে দুবার পিছিয়ে পড়ল সেল্টা ভিগো। কিন্তু হাল ছেড়ে না দিয়ে লড়াইয়ের মানসিকতা দেখিয়ে দুবারই সমতায় ফিরল তারা। গতপরশু রাতে স্প্যানিশ লা লিগার ম্যাচে পয়েন্ট খুইয়েছে কিকে সেতিয়েনের শিষ্যরা। পয়েন্ট তালিকার ১৬ নম্বরে থাকা সেল্টার মাঠে আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ম্যাচ শেষ করেছে ২-২ সমতায়। বার্সার হয়ে দুটি গোলই করেন উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেস। সেল্টার দুই নায়ক ফিওদর স্মোলোভ ও ইয়াগো আসপাস।
কদিন ধরে প্রতি ম্যাচেই ক্যারিয়ারের ৭০০তম গোলের সন্ধানে নামছেন মেসি। কিন্তু প্রতিদিনই সে অপেক্ষা আরেকটু দীর্ঘ হচ্ছে। এদিনও বার্সেলোনার দুই গোলে অবদান রেখেও নিজে গোল পাননি। তবে মেসির ব্যক্তিগত হতাশা দলীয় হতাশার তুলনায় কিছুই না। সেল্টা ভিগোর মাঠ থেকে জয় না নিয়ে ফেরার অভ্যাসটা আরও এক বছর দীর্ঘ হলো বার্সার। ২০১৫ সালের পর থেকে বালাইদোসে জয় পাচ্ছে না বার্সা। নভেম্বরে লিগে প্রথম দেখায় এই মেসির হ্যাটট্রিকে দলটিকে ৪-১ গোলে হারিয়েছিল বার্সেলোনা। তবে সেল্টার মাঠে তাদের গত কয়েক মৌসুমের পারফরম্যান্স ভীষণ হতাশাজনক। লিগে এখানে গত চার সফরে তিনটিতেই হেরেছে কাতালান ক্লাবটি, অন্যটি ড্র। সেল্টার হোম ভেন্যু যেন মেসিবাহিনীর জন্য মৃত্যুকূপ! পাঁচ মিনিট যোগ করা সময়ের শেষ কয়েক সেকেন্ড আগে এদিনও বার্সেলোনার ড্রয়ের স্বস্তিও কেড়ে নিতে বসেছিল সেল্টা। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড নলিতো গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে বসেন। একই সঙ্গে হার এড়ানোর স্বস্তি ও মহামূল্যবান ২ পয়েন্ট হারানোর কষ্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে মেসি-সুয়ারেসরা।
ম্যাচের অধিকাংশ সময় আধিপত্য ছিল বার্সেলোনার। যথেষ্ট সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে না পারায় সেল্টা ভিগোর মাঠে দল পয়েন্ট হারিয়েছে বলে মনে করেন বার্সেলোনা কোচ কিকে সেতিয়েন। তার মতে, ভাগ্যকে পাশে না পাওয়াও অন্যতম কারণ। ম্যাচ শেষের প্রতিক্রিয়ায় তাই কণ্ঠে ফুটে উঠলো হতাশা, ‘শেষ কয়েক মিনিটে তারা (সেল্টা ভিগো) অনেক ঝুঁকি নিয়েছে এবং একটি গোলও পেয়ে গেছে, যা তাদের একটি পয়েন্ট এনে দিয়েছে। আমাদের এমন পরিস্থিতিতে পড়াই উচিত ছিল না। কারণ প্রথমার্ধে আমরা অনেক ভালো খেলেছি। বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আমাদের বিরতিতে যেতে হতো।’
অধিকাংশ সময় বলের দখল রেখে আক্রমণ শানিয়ে গেলেও পুরো ম্যাচে লক্ষ্যে কেবল দুটি শটই রাখতে পারে সফরকারীরা। সুযোগ পেয়েও বারবার সেগুলো নষ্ট হওয়ায় হতাশা ঝরল সেতিয়েনের কণ্ঠে, ‘আমরা অনেক কিছু ভালোভাবে করেছি। ম্যাচটা আমাদের জন্য সহজ হওয়া উচিত ছিল। প্রথমার্ধে আমারা যে আধিপত্য ধরে রেখে খেলেছি, ম্যাচ জয়ের জন্য সেটাই যথেষ্ঠ হওয়ার কথা, কিন্তুৃগোল করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে। অবশ্য গোল করার বিষয়টা কখনও কখনও ভাগ্যের ব্যাপারও।’ লিগের মাত্র ছয় ম্যাচ বাকি থাকতে হোঁচট খাওয়ায় শিরোপা ধরে রাখার রাস্তাটা বেশ কঠিন হয়ে গেল তাদের জন্য। পয়েন্ট ভাগাভাগি করে আপাতত তালিকার শীর্ষে আছে বার্সেলোনা। কিন্তু গতরাতেই লিগের তলানিতে থাকা এস্পানিওলকে হারালেই ফের শীর্ষস্থান দখল করবে রিয়াল মাদ্রিদ (তখনও ফল জানায় যায়নি)। তাই ওই ম্যাচের ফলের দিকে নজর রাখতে হবে কাতালানদের। কেননা এই ড্রতে শিরোপা লড়াইয়েও রিয়াল মাদ্রিদকে পরিস্কার ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিল বার্সেলোনা। এক ম্যাচ বেশি খেলে রিয়ালের চেয়ে এক পয়েন্ট এগিয়ে আছে বার্সেলোনা। ৩২ ম্যাচে বার্সার পয়েন্ট ৬৯, ৩১ ম্যাচে রিয়ালের ৬৮। লিগে দুদলের পয়েন্ট সমতা থাকলে ব্যবধান হয় মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাবে, তাতে এগিয়ে আছে রিয়ালই। এই কঠিন সফরে বার্সার পরবর্তি ম্যাচ ৩২ মাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তিনে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে। গতকাল যারা দাপট ধরে রেখেই ২-১ গোলে হারিয়েছে আলাভেসকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন