শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ডিএসসিসি’র ৩ হাজার ১৮৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের ৩ হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা করেছেন। এর আগে ডিএসসিসি’র নির্বাচিত কাউন্সিলরদের নিয়ে গঠিত এক বোর্ড সভায় এ বাজেট পাস করা হয়। একই সঙ্গে গত ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট ২ হাজার ৮৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা থেকে সংশোধিত ১ হাজার ৫২ কোটি ৪৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নগর ভবনের মেয়র হানিফ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে মেয়র এ বাজেট ঘোষণা করেন।
মেয়র জানান, এবার ২০১৬-১৭ অর্থবছরের নিজস্ব উৎস থেকে ১ হাজার ৩৯১ কোটি ২৭ লাখ টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যান্য উৎস থেকে ধরা হয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ টাকা এবং সরকারি ও বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক হাজার ৭০৩ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা।
মেয়র জানান, এবার বাজেটে ডিএসসিসি’র নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের খাতগুলো হলো- হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে ৫০০ কোটি টাকা, বাজার সালামি থেকে ৬৫০ কোটি, বাজার ভাড়া ৩০ কোটি, ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ৬৫ কোটি, রিকশা লাইসেন্স বাবদ ৩ কোটি ৬০ লাখ, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে ৫ কোটি ৬০ লাখ, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ৫ কোটি ৬০ লাখ, রাস্তা খনন ফি বাবদ ২৮ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ১০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ৬৫ কোটি, শিশু পার্ক থেকে ৬ কোটি ৭০ লাখ, কমিউনিটি সেন্টার বাবদ আয় ৩ কোটি, অস্থায়ী আমানতের সুদ বাবদ ৩ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।
অন্যদিকে, এবার অর্থবছরে সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও বাজেটে উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের খাতগুলো হলো- বেতন বাবদ ২৪০ কোটি টাকা, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৫৬০ কোটি ৬৯ লাখ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ৭৯ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৯ কোটি ৭৫ লাখ, মশক নিয়ন্ত্রণে ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা। এছাড়া নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়ন খাতে ১৫১ কোটি ৫০ কোটি, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ৫৩৪ কোটি ৬৬ লাখ, সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও সম্পদ ক্রয় বাবদ ২০৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মেয়র জানিয়েছেন।
বাজেট ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, আমরা উত্তর সিটি কর্পোরেশন থেকে উন্নয়ন কাজে শতভাগ এগিয়ে। গত বছর আমরা যখন দায়িত্ব নিই তখন ডিএসসিসি’র দায়-দেনা ছিল প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা। এবার আমরা সে দেনা থেকে মুক্তি পেয়েছি। এর অন্যতম কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা সরানো নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে জটিলতা আরো বাড়বে। তিনি বলেন, ৪০ বছরের সমস্যা চার দিনে সমাধান করা সম্ভব নয়।
সাঈদ খোকন বলেন, আমাদের লক্ষ্য নাগরিক দুর্ভোগ কমানো, বাড়ানো নয়। রাজধানীর আবাসিক এলাকায় যেসব স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল গড়ে উঠেছে সেগুলো হঠাৎ করে সরিয়ে দিলে নাগরিক দুর্ভোগ বাড়বে। হঠাৎ করে তারা কোথায় যাবে। নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরে গেলে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার ক্ষতি হবে। হাসপাতালগুলো সরে গেলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি হবে। এ কারণে এগুলো ধীরে ধীরে সরাতে হবে। ঢালাওভাবে সরাতে গেলে সমস্যা তৈরি হবে। যত সহজে আমরা বলতে পারি বাস্তবতা অত সহজ নয়।
মেয়র জানান, এ কারণে গত মন্ত্রিসভার মিটিংয়ে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি ধীরে চল নীতিতে আগাতে বলেছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো সরানোর ব্যাপারে তিনি আরেকটু বিবেচনার কথা বলেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ৫৭ সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, ১৯ মহিলা ওয়ার্ড কাউন্সিলর, ডিএসসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, সচিব খান মোহাম্মদ রেজাউল করিম, প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মাহমুদ হোসেন, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমোডর বখতিয়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন