শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

প্লাস্টিকের মসজিদ : সর্বদা মুখরিত কুরআন তেলাওয়াতে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২০, ১১:৪২ এএম

পরিবেশের জন ক্ষতিকর প্লাস্টিক বর্তমান বিশ্বে এক জ্বলন্ত সমস্যা। প্রতিদিনই টন কে টন প্লাস্টিক তৈরি ও ব্যবহার হয়। এরপর এগুলো হয়ে যায় অমর। কোনও কোনও পরিবেশবান্ধব সংস্থা অবশ্য প্লাস্টিক রিসাইকেল করে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে পারে। ফেলনা বোতল দিয়ে অনেকেই টুকিটাকি কারুশিল্প গড়ে তোলেন। এসব জিনিস দেখতেও বেশ নান্দনিক ও রুচিসই হয়ে থাকে। শো-পিস হিসেবে এই শিল্পের বেশ কদর রয়েছে বর্তমান বিশ্বে। আবার প্লাস্ট্রিকের ঝুড়ি দিয়েও অনেকে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে থাকেন। তবে সে সংখ্যা খুবই কম!

এবার এরকমই প্লাস্টিকের ঝুড়ি ব্যবহার করে নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদ! দেখতেও বেশ নান্দনিক। এই মসজিদে মুসল্লিরা দল বেধে নামাযও পড়তে যান। এই মসজিদের অবস্থান ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায়। .মোট ১২০৮টি ফেলনা প্লাস্টিকের ঝুড়ি দিয়ে নান্দনিক এই মসজিদটি তৈরি করা হয়েছে। এই ছোট মসজিদটিতে সবসময় মুসল্লিদের সালাত ও কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজে মুখরিত থাকে। প্লাস্টিকের ঝুড়ি দিয়ে তৈরি এই মসজিদটির আয়তন ৪৪০ বর্গফুট। এটি নির্মাণ করা হয় ২০১৯ সালে। ইন্দোনেশিয়ার কেবিন আইডিয়া নামক প্রাকৃতিক আমেজে ঘেরা একটি রেস্তরাঁকে বানানো হয়েছে প্রার্থনাকক্ষ। বিনতারো শহরে নির্মিত কোটাক্রাট নামক এই প্রার্থনাকক্ষটি তৈরির উদ্দেশ্য ছিল ইবাদতের পাশাপাশি সুন্দর স্থাপত্য প্রদর্শন করা। বাতিল প্লাস্টিকের ঝুড়ি ব্যবহার করে এই ছোট মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনাটি ছিল খুবই চমৎকার। এই ছোট মসজিদটি স্থানীয় স্থাপত্যশিল্প প্রতিষ্ঠান প্যারাসৌলি আর্কিটেক্ট স্টুডিও কর্তৃক নির্মিত হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি সমাজে বহুমুখী উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান স্থাপত্যশিল্পী এরিও উইরাসটোমো জানান, ‍‌‌‌‌‌‌’বহুমুখী উন্নয়নমূলক কাজের অংশ হিসেবে আমরা এই মসজিদটি তৈরি করেছি। শুধু এই মসজিদটি নয় বরং বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট দোকান, প্রার্থনাকক্ষ, আশ্রয়স্থান, বাসস্টপ, নিরাপত্তা চৌকি ইত্যাদিও আমরা স্বেচ্ছামূলক উপায়ে তৈরি করে থাকি।’

তিনি আরও বলেন, ‍‌‌‌‌‌‌’এসব স্থাপনা আমরা বাতিল প্লাস্টিকের ঝুড়ি দ্বারা নির্মাণ করি। কারণ প্লাস্টিকের ঝুড়ি দিয়ে তৈরি কোনও স্থাপনা যে কোনও সময় যে কোনও আকৃতিতে পরিবর্তন করা যায়, আর এসব ঝুড়ি দিয়ে খুব সহজেই স্থাপনার ছাদ ও দেওয়াল বানানো যায়।’ এই মসজিদটির ছাদ, দেওয়াল ও জুতা রাখার স্থান বানানোর জন্য সর্বমোট ১২০৮ টি প্লাস্টিকের ঝুড়ির প্রয়োজন হয়েছে। এই মসজিদটিতে মুসল্লিদের ওজু করার জন্য পানির কলও রয়েছে। দেয়াল ও ছাদ বানাতে ঝুড়িগুলো জোড়া লাগানোর জন্য লোহার লক ব্যবহার করা হয়েছে। আর ছাদ ধরে রাখার জন্য ফাঁপা ধাতব খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে। সৌন্দর্য বর্ধনে মসজিদের চারপাশে বিভিন্ন গাছ লাগানো হয়েছে। যাতে করে পরিবেশটা ঠাণ্ডা থাকে। তাছাড়া মসজিদের মধ্যে নামাযের পাটি রাখার তাকও রয়েছে। মসজিদটিতে নারী-পুরুষের প্রবেশের জন্য দুটি ভিন্ন দরজাও রয়েছে। ছোট্ট এই প্রর্থনাকক্ষে মোট তিন কাতারে নামায পড়া যায়। প্রতিটি কাতারে ৯ জন করে মুসল্লি দাঁড়াতে পারে।

স্থাপত্যশিল্পী এরিও উইরাসটোমো জানান, যেহেতু মুসলমানরা যেখানেই থাকুক না কেন তাদেরকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত অবশ্যই আদায় করতে হয়। তাই এই ছোট প্রার্থনাকক্ষটি রেস্তরাঁয় আসা অতিথিদের উপকারে আসবে। পুরোনো প্লাস্টিকের ঝুড়ি ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আমরা জনগণের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারি। পাশপাশি প্লাস্টিকও পুনরায় ব্যবহার করতে পারি।
সূত্র : পুবের কলম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
আব্দুল্লাহ ৩ জুলাই, ২০২০, ৪:০৮ পিএম says : 0
মাশাআল্লাহ
Total Reply(0)
SHABBIR KHILOGRAMY ৪ জুলাই, ২০২০, ৯:১৫ এএম says : 0
Alhamdulillah
Total Reply(0)
Jack Ali ৫ জুলাই, ২০২০, ৮:৫৮ পিএম says : 0
We can follow their step to build house/masjid/shop so that we can save our Environment.
Total Reply(0)
Jack Ali ৫ জুলাই, ২০২০, ৮:৫৮ পিএম says : 0
We can follow their step to build house/masjid/shop so that we can save our Environment.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন