বিশেষ সংবাদদাতা : সাসেক্সে খেলতে যেয়ে এতো বড় বিপদে পড়বে মুস্তাফিজ, কে জানতো। বিসিবি’র মন সায় দেয়নি প্রথমে, নাছোড়বান্দা সাসেক্সের পিড়া-পিড়িতে মুস্তাফিজুরকে কাউন্টি খেলতে শেষ পর্যন্ত অনুমতি দিয়েই বড় ভুল করে ফেলেছে বিসিবি। সাসেক্সের হয়ে প্রথম ২ ম্যাচ ঠিক-ঠাকই ছিল। ন্যাট-ওয়েস্ট টি-২০ বøাস্টে এসেক্সের বিপক্ষে কাউন্টিতে নিজের অভিষেকে জাত চেনানো বোলিংয়ে (৪/২৩) দলটিকে বড় আশান্বিতই করেছিলেন মুস্তাফিজুর। তবে এ বছরজুড়ে ছোট ছোট স্পেলে টি-২০ ক্রিকেটে বোলিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে পড়া ছেলেটিকে লন্ডন কাপ ওয়ানডে চ্যালেঞ্জ ট্রফিতে নামিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত করেই ভুলটা করেছে সাসেক্স। অনুশীলনের সময়ে কাধের চোট পেয়ে ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলা হয়নি। মুস্তাফিজুরের ওই চেটকে প্রথমে গুরুতর বলা হয়নি, প্রাক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই ম্যাচ খেলা থেকে মুস্তাফিজুরকে বিরত রাখা হয়েছে বলে সাসেক্স এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। প্রথম এম আর আই রিপোর্টেও সোলডারের চোটে বড় ধরনের শঙ্কার আলামত যায়নি পাওয়া। তবে দ্বিতীয় এম আর রিপোর্ট বিসিবিকে করে তুলেছে উদ্বিগ্ন। এই রিপোর্টে শুধু কাউন্টি মিশনই শেষ হয়নি, রিপোর্টের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ বছরের শেষ ২টি আন্তর্জাতিক সিরিজও মিস করবেন মুস্তাফিজুর।
দ্বিতীয় এমআরআই রিপোর্টে মুস্তাফিজের বাম কাঁধের ল্যাবরামে ধরা পড়েছে (সুপিরিয়র ল্যাব্রাম অ্যান্টিরিয়র অ্যান্ড পোস্টিরিয়র) গ্রেড-২ শ্রেণির চোট। কাঁধের ইনজুরি থেকে মুস্তাফিজুরকে পুরোপুরি সারিয়ে তুলতে হলে অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই। এমআরআই রিপোর্ট দেখার পর ইউনিভার্সিটি অব গ্রিনউইচের শল্যবিদ টনি কোচার এমন পরামর্শই দিয়েছেন। এই প্রেসক্রিপশন মেনে দ্রæত মুস্তাফিজুরের অপারেশনের পক্ষে বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসক ডা. দেবাশিষ চৌধুরীওÑ ‘মুস্তাফিজের এমআরআই রিপোর্ট অনুযায়ী কাঁধের এই ইনজুরি পুরোপুরি নির্মূল করতে অস্ত্রোপচারের কোনও বিকল্প নেই। তাই যত দ্রæত সম্ভব অস্ত্রোপচার করতে হবে।’
তবে এই অস্ত্রোপচার ইংল্যান্ডে বসে করানো হবে, না মুস্তাফিজুরকে পাঠিয়ে দেয়া হবে অস্ট্রেলিয়ায়, আজ-কালকের মধ্যে সে সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিসিবি। এমন তথ্যই দিয়েছেন বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসকÑ ‘মুস্তাফিজের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে ইংল্যান্ডের পাশাপাশি কথা বলা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের সঙ্গেও। আগামী ২-১ দিনের মধ্যেই মুস্তাফিজের অস্ত্রোপচার কবে, কোথায় হবে, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসতে পারবো।’ অপারেশনের মুখোমুখি হতে হলে ফিট হয়ে ক্রিকেটে ফিরতে মুস্তাফিজুরের লেগে যাবে প্রায় ৫ মাস। এমন ধারণাও দিয়েছেন বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসকÑ ‘এই ধরনের ইনজুরি সারতে কমপক্ষে ৫ মাস সময় লাগে। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে আমরা জেনেছি ৫ মাসের মধ্যেই খেলার মতো ফিট হয়ে যাবে মুস্তাফিজ। সময়টা ৫ মাস বলেই বাংলাদেশ দলের প্রধান বোলিং অস্ত্র মুস্তাফিজুরকে নিয়ে উদ্বিগ্ন বেশি। কারণ এই সময়ের মধ্যে (অক্টোবর-নভেম্বর) হোমে ইংল্যান্ড দলের বাংলাদেশ সফর, ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে বাংলাদেশ দলের নিউজিল্যান্ড সফর মিস করবেন কাটার মাস্টার। আয়ের অন্যতম মাধ্যম বিপিএলও হারবেন এই বাংলাদেশী। সিদ্ধান্তটা তাই ভেবে চিন্তে নিতে হচ্ছে বিসিবিকে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন