বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়া একটি বিশেষ ফ্লাইটের ২১ যাত্রী করোনা পজিটিভ শনাক্ত নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে ইউরোপের দেশটিতে। ইতালির শীর্ষ জাতীয় পত্রিকা দৈনিক ইল মেসসাজ্জেরো'র বুধবার প্রধান খবর ছিল, বাংলাদেশ থেকে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট নিয়ে ইতালিতে ফেরত যাওয়াদের নিয়ে।
ইতালির শীর্ষস্থানীয় দৈনিক ‘ইল মেসেজেরো’ তাদের প্রথমপাতায় প্রধান শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশ থেকে ভুয়া পরীক্ষা দিয়ে’। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মাত্র ৩৬ ইউরো বা সাড়ে তিন হাজার টাকা হলেই জ্বর নিয়েও দেশত্যাগ করা যায়।
‘ইল মেসেজেরো’র মতো প্রায় একই শিরোনাম করেছে ইতালির আরেক প্রভাবশালী দৈনিক ‘লা নুয়োভা’। দৈনিক 'লেগো' তাদের খবরের শিরোনাম করেছে ‘সাড়ে তিন হাজার টাকায় জ্বর নিয়েই বাংলাদেশ ত্যাগ’।
বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের কারণে ইতালিতে নতুন করে ঝুঁকি তৈরি হওয়ার বিষয়টি প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে দেশটির ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমেও।
ইয়াহু নিউজের পার্টনার 'ইয়াহু ফিনাঞ্জা' লিখেছে, বাংলাদেশে দুর্নীতিবাজরা ভুয়া 'করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট' বানিয়ে দিচ্ছে, যা দিয়ে সহজেই দেশত্যাগ করা যায়।
এছাড়া, ইতালির বিভিন্ন গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় কলামে বাংলাদেশিদের নজরদারিতে আনারও জোরালো দাবি তোলা হয়েছে।
গত সোমবার বাংলাদেশ থেকে ইতালির রাজধানী রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের মধ্যে ৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। করোনার জীবাণুবাহী বাংলাদেশিদের যাত্রীদের স্থানীয় প্রশাসন 'সত্যিকারের বোমা' হিসেবে আখ্যা দেয়। আঞ্চলিক গভর্নর নিকোলা জিঙ্গারেত্তি বলেন, আমরা এই বোমাটি তাৎক্ষণিকভাবে অপসারণ করেছি।
বাংলাদেশ থেকে আগতরা কীভাবে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছে সেই গল্প তাইফুর রহমানের বরাতে উঠে আসে পত্রিকাটিতে। ফ্লাইটে করে ঢাকা ত্যাগ করে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ইস্যু করা স্বাস্থ্য সনদ দেখানো বাধ্যতামূলক। সেক্ষেত্রে অনেকে অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও বিদেশে কর্মস্থলে ফিরতে ভুয়া স্বাস্থ্য সনদ সংগ্রহ করছেন।
ইতাল-বাংলা এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্টের মন্তব্যে উঠে আসে, ঢাকায় রিজেন্ট হাসপাতালের কয়েকটি শাখায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের ঘটনাও।
এদিকে অঞ্চলটির বিভিন্ন এলাকায় করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশিদের নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। লকডাউন পরবর্তী ফিয়ামিকিনোতে দুইটি ব্যবসায়িক কেন্দ্রের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেখানে এক বাংলাদেশি কর্মীর করোনা শনাক্ত হওয়ায় কেন্দ্র দুইটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ থেকে তিনি ইতালিতে ফেরত গিয়েছিলেন।
সব কাস্টমারদের করোনা টেস্ট করানোর পর সেখানে নতুন করে ১২ জন আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সেসেনাতে করোনা আক্রান্ত আরও একজন বাংলাদেশি অন্যান্য বাংলাদেশিদের মধ্যে করোনা সংক্রমিত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন