স্পোর্টস ডেস্ক : গত মার্চে মেলবোর্নে বিশ্বকাপ ফাইনালটির কথা মনে আছে? বিশ্ব সেরার লড়াইকে মহারণে রূপ দিয়েছিল দুই তাসমান প্রতিবেশির লড়াইটি। সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে কাঁদিয়ে সেরার মুকুট নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তার পরে দশ মাসে এই দুই দল মুখোমুখি হয়নি আর। বিশ্বকাপের ফাইনালের পর এই প্রথম দুই দলের দেখা। স্বাভাবিকভাবেই হয়তো বলা হবে ‘ফাইনালের কী মধুর প্রতিশোধ!’ যদিও বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে যাওয়ার শোধ আরেকটি ফাইনালে হারিয়ে দেয়া ছাড়া বোধহয় নেয়া যায় না। তবে তারপরও নিউজিল্যান্ড এখন উল্লাসে মেতে উঠতেই পারে। অস্ট্রেলিয়াকে গতকাল তারা এমন এক হারের লজ্জা দিয়েছে, এর আগে মাত্র তিনবার যার মুখোমুখি হয়েছিল ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা দলটি। ওয়ানডে চতুর্থবারের মতো ১৫০-এর বেশি রানে হারল অস্ট্রেলিয়া। সবচেয়ে বড় কথা, এই প্রথম কোনো ওয়ানডেতে ২৫ ওভার পুরো হওয়ার আগেই অলআউটের লজ্জাতেও পড়ল ক’দিন আগে ভারতকে ৪-১ সিরিজ হারানো অস্ট্রেলিয়া।
যদিও ‘দুঃস্বপ্নের’ ফাইনালের আগে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বেও মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। সেই একই ভেন্যুতে গতকাল মুখোমুখি হলো আবার। অকল্যান্ডে প্রথমে ব্যাট করে নিউজিল্যান্ড তুলল ৮ উইকেটে ৩০৭। জবাব দিতে নেমে শুরু থেকেই রীতিমত গলদঘর্ম অস্ট্রেলিয়া, মাত্র ৪১ রান তুলতেই নেই ৬ উইকেট! ২০০২ সালের পর থেকে এই প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ছয় উইকেট হারাল দলটি। সপ্তম উইকেটে ম্যাথু ওয়েড আর জেমস ফকনার ৭৯ রানের জুটিটা না গড়লে কী হতো বলা কঠিন। তখন হয়তো অনেকের মনে ফিরে আসছিল ১৯৮৬ সালের অ্যাডিলেডের সেই ম্যাচটি। নিউজিল্যান্ডের ২৭৬ রানের জবাবে অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয়ে গিয়েছিল মাত্র ৭০ রানে। ম্যাচ হেরেছিল ২০৬ রানে। অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসেই একমাত্র ২০০ রানে হেরে যাওয়া ওয়ানডে ম্যাচ। বোল্ট-হেনরির বোলিং তোপে অস্ট্রেলিয়া ৯ ওভারেই যখন ৬ উইকেট হারিয়ে বসল গতকাল, তখনো পরাজয় ২৬৬ রান দূরে। সাত আর আটে নেমে ওয়েডের ৩৭ আর ফকনারের ৩৬ রানের ইনিংস দুটি না এলে আরো বড় লজ্জাতেই পড়ত অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য পরপর দুই ওভারে এই দু’জন ফিরে এলে অস্ট্রেলিয়া আর দাঁড়াতেও পারেনি।
খেলতে পারেনি নিজেদের বরাদ্দের ৫০ ওভারের অর্ধেকটাও। ২৫ ওভারের চার বল বাকি থাকতেই অলআউট। ওয়ানডেতে এর আগে সবচেয়ে কম বলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস গুটিয়ে দেয়ার কৃতিত্ব ছিল ইংল্যান্ডের। ১৯৭৭ সালের ৪ জুন বার্মিংহ্যামে অতিথিদের ২৫ ওভার ২ বলে অলআউট করেছিল দলটি। ১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭০ রানে থেমে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস স্থায়ী হয়েছিল ১৫২ বল। এর আগে গাপটিলের ৯০, নিকোলসের ৬১, শেষ আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে নামা ম্যাককালামের ৪৪ রানের সৌজন্যে বড় পুঁজি পায় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের কেউই সেঞ্চুরি না পেয়েও স্কোর তিনশ’ পেরিয়েছে। দলের আট ব্যাটসম্যানই যে দুই অঙ্ক ছুঁয়েছেন। তাতেই চ্যাপেল-হ্যাডলি সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্মরণীয় জয়।
স ং ক্ষি প্ত স্কো র
নিউজিল্যান্ড : ৩০৭/৮ (৫০ ওভার) গাপটিল ৯০, ম্যাককালাম ৪৪, নিকোলস ৬১, স্যান্টনার ৩৫*; হ্যাজলউড ২/৬৮, ফকনার ২/৬৭, মার্শ ২/৩৫; অস্ট্রেলিয়া : ১৪৮/১০ (২৪.২ ওভারে) ওয়েড ৩৭, ফকনার ৩৬, রিচার্ডসন ১৯, স্মিথ ১৮; বোল্ট ৩/৩৮, হেনরি ৩/৪১, স্যান্টনার ০/২। ফল: নিউজিল্যান্ড ১৫৯ রানে জয়ী । ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মার্টিন গাপটিল। সিরিজ : ৩ ম্যাচে ১-০ তে এগিয়ে নিউজিল্যান্ড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন