শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বাংলাদেশের টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে পাঁচ পেসার

প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে সিরিজের ঘোষিত স্কোয়াডে ছিলেন মোহাম্মদ মিঠুন। খেলেছেন ওই সিরিজে ২টি ম্যাচ। ৫০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটাই তার শুরু এবং শেষ। সে বছরের ফেব্রুয়ারীতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টুয়েন্টি-২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মিঠুনের টি-২০ ক্যারিয়ারও থমকে গিয়েছিল। ২০১৪ সালের আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টুয়েন্টি-২০ ম্যাচের পর জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান দেড় বছর। অথচ, দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই ক্রিকেটারকেই আগামী মাসে ভারতে অনুষ্ঠেয় টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপের জন্য বেছে নিয়েছেন নির্বাচকম-লী। গত নভেম্বরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে ৩ ম্যাচের একদিনের সিরিজে দুর্দান্ত পারফর্ম করায় (৩ ম্যাচে ১ সেঞ্চুরি, ২ ফিফটি) ২৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ মিঠুনকে টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নির্বাচিত করেছেন নির্বাচকম-লী।
মিঠুনের অবশ্য টি-২০ বিশ্বকাপে এবারই প্রথম সুযোগ নয়, এর আগে ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত টি-২০ বিশ্বকাপের দলেও ছিলেন এই টপ অর্ডার। তবে পাননি খেলার সুযোগ। ‘এ’ দলের হয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে মিঠুনের পারফরমেন্সের পুরস্কার দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচকÑ ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই কিন্তু এর আগেও সুযোগ পেয়েছিল মিঠুন। এবার এই স্টেজে দেখতে চাই সে কেমন করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজের সময় মিঠুন পুরোপুরি ফিট ছিল না। আমরা পরে তাকে বিশ্বকাপের প্রাথমিক দলে নিয়েছি। সে যে মানের খেলোয়াড়, তার পুরোটা আমরা দেখতে পারিনি। যদি সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় সে সুযোগ পায়, তাহলে কিছু করে দেখাতে পারবে। সেই সামর্থ্য তার আছে।’
দেড় বছর পর জাতীয় দলে ফেরাকে অবশ্য অপ্রত্যাশিত মনে করছেন না মিঠুনÑ ‘আসলে অপ্রত্যাশিত বলবো না, তবে যেখানে ছিলাম সেখান থেকে এখানে সুযোগ পাওয়াটা আসলে অনেক ভাগ্যের ব্যাপার। এই পাওয়াটাকে আমি অনেক বড় পাওয়া বলেই মনে করছি। এখন আমার লক্ষ্য একাদশে সুযোগ পেলে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দেয়া।’
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছে টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ স্কোয়াড। ইনজুরি থেকে পুরোপুরি ফিট হয়ে না ওঠায় দলে জায়গা পাননি পেস বোলার রুবেল হোসেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত মাসে খুলনায় অনুষ্ঠিত টি-২০ সিরিজের দল থেকে বাদ পড়া নাসির হোসেনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। এক সিরিজ বিরতি দিয়ে নাসিরকে না এনে উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচকÑ ‘আমরা যদি এমন একজনকে পেতাম যে নাসিরের চেয়ে সব দিক থেকে অনেক বেশি ভালো, তাহলে তো সেই জায়গাটা তাকে দিয়ে দিতে পারতাম। ওই জিনিসটা আমরা খুঁজে পাইনি। তাই অভিজ্ঞতা, বোলিং বা ব্যাটিং সব কিছু মিলিয়ে নাসির এগিয়ে থাকায়  তাকেই আমরা সুযোগ দিয়েছি।’
সর্বশেষ টি-২০ সিরিজের দল থেকে বাদ দেয়া হয়েছে লিটন দাস,আবুল হাসান রাজু, শফিউল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, ইমরুল কায়েস, শুভাগতহোম চৌধুরী ও মোহাম্মদ শহীদকে। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত জানুয়ারীতে খুলনায় অনুষ্ঠিত ৪ ম্যাচের টুয়েন্টি-২০ সিরিজে অভিষেক হওয়া পেস বোলার আবু হায়দার রনি এবং উইকেট কিপার কাম ব্যাটসম্যান নূরুল হাসান সোহান নির্বাচকদের পরীক্ষায় উতরে জায়গা পেয়েছেন টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ স্কোয়াডে।
বাংলাদেশ স্কোয়াডে ৫ পেস বোলারের দৃস্টান্ত এবারই প্রথম। টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ স্কোয়াডে ১৫ ক্রিকেটারের মধ্যে পাঁচজন পেস বোলার। মাশরাফির সঙ্গে আছেন মুস্তাফিজ, আল আমিন, তাসকিন, আবু হায়দার রনি। মিডিয়াম পেসার সৌম্য’র বোলিং সার্ভিস প্রত্যাশা করলে পেস বোলারের সংখ্যা দাঁড়াবে ৬এ। দলে পেস বোলারের সমাবেশের স্বপক্ষে প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের ব্যাখ্যাÑ ‘আমাদেরকে কোয়ালিফাই ম্যাচগুলোতে জিততে হবে। খোঁজ নিয়ে দেখেছি ধর্মশালার কন্ডিশন সিমিং। এ কারণে পেস বোলিং বিকল্প হাতে রেখেছি। তারপরও আমাদের দলে বাঁ হাঁতি স্পিনার সাকিব ও আরাফঅত সানি রয়েছে। এছাড়া নাসিরও ভালো বোলিং করছে বেশ কিছুদিন ধরে।’
টি-২০ অভিষেক সিরিজে উদ্ভাবনী শটে নির্বাচকদের বিস্মিত করেছেন নূরুল হাসান সোহান। তার উইকেট কিপিংও নির্বাচকদের করেছে আশ্বস্ত। দলে অপরিহার্য হয়ে ওঠা ২২ বছরের এই তরুণ টুয়েন্টি-২০ স্কোয়াডে থাকার দাবিটা জোরালো করেছেন বলেই জানিয়েছেন ফারুকÑ ‘এখনও আমাদের টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ নেই। গত দুই বছর ধরে সোহান ‘এ’ দলে খেলছে। বর্তমানে  উইকেটরক্ষক যারা আছেন, তাদের মধ্যে সে অন্যতম সেরা। ব্যাটিংয়ে তার কিছু আলাদা গুণ আছে তার। সে উদ্ভাবনী কিছু শট খেলে। আমরা মনে করি, এই সংস্করণে সে খুব কার্যকর হবে।’
১৫ সদস্যের স্কোয়াডের বাইরে মূল দলের বাইরে ইমরুল কায়েস, শুভাগত হোম চৌধুরী, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও মোক্তার আলীকে রাখা হয়েছে স্ট্যান্ড বাই তালিকায়। মাত্র ২ বছরে এতো পরিবর্তন। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের ৮ জনের জায়গা হয়নি আসন্ন টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। জায়গা হারিয়েছেন জিয়াউর রহমান, সামছুর রহমান, সোহাগ গাজী, মুমিনুল হক, ফরহাদ রেজা, এনামুল হক বিজয়, আবদুর রাজ্জাক এবং রুবেল হোসেন!  

টুয়েন্টি-২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ স্কোয়াড
মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুস্তাফিজুর রহমান, আবু হায়দার রনি, আল-আমিন হোসেন, আরাফাত সানি, নুরুল হাসান সোহান, নাসির হোসেন, তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ মিঠুন আলী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন