শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আড়ালে সাবেক স্বাস্থ্য সচিবের নতুন কৌশল

রিজেন্ট কেলেঙ্কারি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ জুলাই, ২০২০, ১২:০১ এএম

স্বাস্থ্য সচিব থাকাকালে বেরিয়ে আসা রিজেন্ট কেলেঙ্কারি আড়াল করতে নতুন কৌশল গ্রহণ করেছেন স¤প্রতি নিযুক্ত পরিকল্পনা সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় চত্বরে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন।

পরিকল্পনা কমিশনের প্রধান ফটকের পুলিশের ইনচার্জ গোলজারকে বলেন, কোনো সাংবাদিক এই চত্বরে প্রবেশ করতে পারবে না। সচিবের অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করা যাবে না। রিজেন্ট হাসপাতালের আলোচিত চেয়ারম্যান গ্রেফতারকৃত মোহাম্মাদ সাহেদের সাথে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নিয়ে তার সাথে চুক্তির ঘটনা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক। তাই তিনি মিডিয়াকে এড়িয়ে যেতে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরে উপস্থিত ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের ক্ষোভ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের হস্তক্ষেপে সিনিয়র সচিব আসাদুল ইসলাম অনুমতি দিতে বাধ্য হন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা ২০ মিনিটে প্রতিদিনের মতেই পরিকল্পনা কমিশন চত্বরে প্রবেশ করতে গেলে প্রধান ফটকে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা গোলজার দৈনিক নয়া দিগন্তের সাংবাদিককে প্রবেশে বাধা দেন। এরপরে একে একে দৈনিক যুগান্তর, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক বণিকবার্তার সাংবাদিকদেরকে প্রবেশে বাধা দেন কর্তব্যরত পুলিশ ও আনসারের সদস্যরা। তারা বলেন, সচিব
স্যারের নির্দেশ কোনো সাংবাদিক তার অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না। তার পিএস ফোন করে আমাদের স্যারকে জানিয়েছেন।

পরে সাংবাদিকরা সচিবের দফতরে তার নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণ জানার জন্য গেলে তার পিএস আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, স্যারের নির্দেশেই তিনি পুলিশকে ফোনে এই প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।
এদিকে, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র রির্পোটার নাফিসাদ্দৌলা সাহেদ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচিবের বক্তব্য জানার জন্য সকাল ১০টা থেকে ওয়েটিং রুমে বসে থাকেন। পৌনে একটার সময় সচিব মো. আসাদুল ইসলাম যখন তার দফতর ত্যাগ করেন তখন সাংবাদিকরা প্রশ্ন করার আগেই নিজ থেকে সচিব বলেন, যে বিষয়টা আপনারা জানতে চাচ্ছেন সেটা অফিসিয়াল বিষয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি দেখছে। ফলে তারা সেখানে কি লিখেছে, তারা যদি আমার কাছে ব্যাখ্যা চায় আমি অবশ্যই ব্যাখ্যা দেবো। তার বাইরে সরকারী চাকুরি করে মিডিয়াতে কোনো বক্তব্য দেয়া আমার পক্ষে ঠিক হবে না।

সাংবাদিকদের পরিকল্পনা কমিশনে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, এ ধরণের অর্ডার আমি দেই নি। আপনার নির্দেশে আপনার পিএস পুলিশকে বলেছেন বলেও তিনি স্বীকার করেছেন। তখন সচিব বলেন, পরিকল্পনামন্ত্রী আমাকে ফোন করে বলেছেন, এই চত্বরে যেসব সাংবাদিক নিয়মিত কাজ করছেন তাদের প্রবেশের ক্ষেত্রে বাধা নেই। তারা আসতে পারবেন। কেন এমনটা হলো আমি বিষয়টি দেখছি।

সাংবাদিকদের পরিকল্পনা কমিশনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে সেল ফোনে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই সচিবকে বলা হয়েছে। পরে ওখানেই ঘটনাটি শেষ হয়েছে। আমি রোববার বিষয়টি কেন ঘটেছে জানবো।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ১৭ জুলাই, ২০২০, ৯:৩১ পিএম says : 0
এই সংবাদে বিষয়টা পরিষ্কার হয়েছে যে, সাবেক স্বাস্থ সচিব বর্তমান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে কর্মরত সিনিয়র সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম সাহেদের কেলেঙ্কারির সাথে জড়িত। এখন বিষয়টা জনগণের কাছে আয়নার মত পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। সিনিয়র সচিব বুঝতে পেরেছিলেন সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে অনেক কথা বেড়িয়ে যাবে তাই তিনি বিষয়টাকে সামাল দেয়ার জন্যে প্রস্তুত হতে কিছু সময় নিয়েছিলেন। তাই দিনের প্রথম দিকেই সাংবাদিকদেরকে তিনি ব্যারিক্যাড দিয়েছিলেন যাতে তাঁকে বিরক্ত করতে না পারে আর এরই মধ্যে তিনি তাঁর যায়গা শক্ত করে নিতে পারেন। এরপর কায়দা করে দিনের শেষে কিছু কথা বলেই চম্পট দিয়েছেন সচিবি কায়দায়। এনারা দেশের অবশ্যই মেধাবী লোকজন কিন্তু এনারা মেধাটা খাটিয়ে থাকেন নিজের স্বার্থে যদিও তাদের রক্ত মাংস দেশের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিস্ফুটিত হয়ে থাকে। তারপরও তারা দেশের সাথে এবং জনগণের সাথে বেঈমানী করে নিজের পকেট মোটা করে থাকেন আর এসব অপকর্মের দোষ গিয়ে বর্তায় মন্ত্রী বা সরকারই দলের নেতাদের ঘাড়ে। আমি এই বিষয়টা বহু বছর ধরে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় মন্তব্য আকারে লিখে আসছিলাম। আজ আমার সেইসব লিখা কাজে লাগতে যাচ্ছে দেখে নিজের কাছে খুবই ভাল লাগছে। আমি বিশ্বাস করি মহান আল্লাহ্‌ তালা এবার সচিবদের জারিজুরি প্রকাশ্যে আনবেন ইনশ’আল্লাহ।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন