শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

সরবরাহ সংকটে কুমিল্লার বাজার বেড়েছে শাক-সবজির দাম

প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : এবারে আষাঢ়ের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়ে ভারী ও হালকা বৃষ্টিপাত শ্রাবণের মাঝামাঝিতে এসেও থেমে নেই। ফলে বর্ষার বর্ষণে কুমিল্লার কৃষিনির্ভর এলাকার সব ধরনের ফসলের ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বেশির ভাগ ফসলের জমির পাশে খাল বা পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় শাক-সবজির ক্ষেতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কুমিল্লার চান্দিনা, দাউদকান্দি, মেঘনা, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, বরুড়া, সদর দক্ষিণ ও সদরের পাঁচথুবি, আমড়াতলি, নেউরার নিচু এলাকার বেশিরভাগ শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে ডুবে বিরাটাকার জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। শাক-সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে কুমিল্লা নগরীর বাজারে। সবজির পাইকারি বাজারে সরবরাহ কম হওয়ায় এবং বেশি দামে কেনায় স্থানীয় বাজারে সবজির দরদাম বেড়েছে।
কুমিল্লায় শাক-সবজির সবচেয়ে বড় পাইকারি মোকাম হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বুড়িচং অংশে অবস্থিত নিমসার সবজি বাজার। কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত শাক-সবজি প্রতিদিন ভোর থেকেই জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে ট্রাক মিনিট্রাক বা ভ্যানে কুমিল্লার বাজারগুলোর কাঁচামালের আড়তে তরতাজা সবজি পৌঁছে যায়। কুমিল্লার নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজারের কাঁচামালের আড়তে নিমসারের সবজির পাশাপাশি সদর দক্ষিণের, ভুশ্চি, বাগমারা, বেলঘর, ইছাপুরা, চৌয়ারা, লালমাই, কালিরবাজার, কোটবাড়ি, নেউরা, রাজাপুর, কৃষ্ণনগর, মোস্তাফাপুর, বৌয়ারা, মনাগ্রাম, সদরের পাঁচথুবি, আমড়াতলি ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামের উৎপাদিত শাক-সবজি সকালে এবং বিকেলে এসে থাকে।
নগরীর রাজগঞ্জ বাজার ও চকবাজারের আড়ত মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারে বর্ষা শুরুর মাঝামাঝি সময় থেকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে নিচু এলাকার ফসলের জমি পানিতে ডুবে গেছে। এতে কৃষকদের বিপুল পরিমাণ শাক-সবজি নষ্ট হয়েছে। উঁচু এলাকার উৎপাদিত সবজি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বলেই মানুষের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ সবজি বা কাঁচামাল আড়তে আসে তা খুবই কম। বিক্রেতা সবজি নিয়ে একরকম কাড়াকাড়ি শুরু করেন। কেনা দর বেশি হওয়ায় খুচরা সবজি বিক্রেতাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রি দরও বেশি। শ্রাবণের শেষ সময়টাও যদি টানা বৃষ্টিপাতের মধ্যে পার হয় তাহলে সবজির দাম আরো বাড়তে পারে। পানি জমে বিপুল পরিমাণ ফসল নষ্ট হওয়ায় বাজারে শাক-সবজির সংকট দেখা দিয়েছে।
কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ, চকবাজার, নিউমার্কেট, বাদশামিয়ার বাজার, রাণীর বাজার ঘুরে সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- রোজায় শাক-সবজির দাম খুব একটা না বাড়লেও ঈদের পর থেকেই শাক-সবজির দাম হুহু করে বেড়েছে। রাজগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা আনোয়ার, ছালাম, শামসু, জানান, আড়তে এখন আগের মতো মাল আসে না। ভোরে আড়তে গিয়ে মালের জন্য বসে থাকতে হয়। কোনদিন দেরি হলে তো সবজির চেহারাই দেখা মেলে না আড়তে। আড়ত থেকে বেশিদামে কিনতে হয় বলেই বেশিদামে বিক্রি করতে হচ্ছে। দরদাম নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়ে থাকে। শাক-সবজির দাম শুনে ক্রেতারা অবাক হন ঠিকই হচ্ছেন। কিন্তু দাম বেশি হলেও প্রয়োজনের কারণে তো কিনে নিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
এদিকে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্ষার কারণে এভাবে শাক-সবজির দাম তো কখনো বাড়েনি। আড়তদার ও সবজি ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বর্ষার দোহাই দিয়ে দাম বাড়িয়েছে। সবজির দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার দাবী জানান সাধারণ ক্রেতারা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন