শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মির্জাপুর মহিলা কলেজের সেই অধ্যক্ষকে পুনর্বহাল

শ্লীলতাহানি অভিযোগে অভিযুক্ত

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০২০, ১১:২৩ এএম

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে দুই স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগে অভিযুক্ত মির্জাপুর মহিলা কলেজের বরখাস্ত হওয়ার এক বছর পর পুনরায় কলেজে যোগদান করেছেন। এতে ওই মহিলা কলেজের ছাত্রী, অভিভাবকসহ শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঘটনার বিবরনে জানা যায়, মির্জাপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর দুপুরে কলেজের একটি কক্ষে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে কলেজ দেখানেরা কথা বলে অধ্যক্ষ শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ সময় ওই দুই ছাত্রীর চিৎকারে কলেজের পাশের বাড়ির এক ছাত্রীর মা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে তাদের উদ্ধার করেন। পুলিশ খবর পেয়ে থানা পুলিশ গিয়ে কলেজ অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে ওই দুই ছাত্রীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল মালেকের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়। ঘটনা টাঙ্গাইলের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. শহীদুল ইসলাম অবগত হলে তিনি ইউএনওকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. হারুন অর রশিদ আহবায়ক কৃষি অফিসার মো. মশিউর রহমান ও মহিলা বিষয়ক অফিসার মিনু পারভীনকে সদস্যকে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির দুই ছাত্রী ও অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনা সত্যতা পেলে ইউএনও তাকে বরখাস্ত করার জন্য কমিটিকে নির্দেশ দেন। ২৪ জুন ২০১৯ তারিখে মহিলা কলেজ পরিচালনা পরিষদের এক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে কলেজের অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়। উপযুক্ত কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়। এদিকে বরখাস্ত হওয়ার এক বছর পর অধ্যক্ষ ৩০ জুন পূনরায় কলেজে যোগদান করেন। এদিকে ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর মতো ঘৃণ্য অপরাধের পর মহিলা কলেজের মতো জায়গায় সেই অধ্যক্ষ স্বপদে পুনবহাল হওয়ায় স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রী, অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, এমন শিক্ষকের কাছে তারা নিরাপদ নয়। একই কথা বলেন অভিভাবকরাও। তারা অভিযুক্ত অধ্যক্ষকে এই কলেজ থেকে বিদায়ের দাবি জানান। মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ ওয়াহীদ ইকবাল বলেন, ওই অধ্যক্ষ স্বপদে বহাল থাকলে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি সংকট দেখা দেবে। এছাড়া ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে বলে তিনি মনে করনে। মির্জাপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম ফারুক সিদ্দিকী বলেন, এত বড় অপরাধের পর মহিলা কলেজের মতো জায়গায় তিনি আবার কিভাবে স্বপদে বহাল হন। এটা মেনে নেওয়া যায়না।

মহিলা কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. জাকির হোসেন বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে পূনরায় যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদ বলেন, তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের নিকট আপিল করেন। সিন্ডিকেট তাকে পূনরায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, ঘটনার পর গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কলেজ পরিচালনা পরিষদ অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরিচালনা পরিষদের ব্যবস্থা নেওয়া বিধি সম্মত না হওয়ায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের নিকট আপিল করেন। আপিলের প্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট তাকে কলেজে যোগদানের অনুমতি দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন