সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লর্ডসের পাকিস্তানকেই চান আর্থার

প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ১৮৮০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সাদা পোশাকে প্রথম ক্রিকেট খেলতে নামে ইংল্যান্ড। এরপর কেটে গেছে ১৩৬ বছর। কালের এই বিবর্তনে দেশের মাটিতে ৪৯৯টি টেস্ট খেলে ফেলেছে তারা। এর মধ্যে জিতেছে ২০৬টি, হার ১১৫টি ও ড্র হয়েছে ১৭৮টি ম্যাচ। নিজেদের মাটিতে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্নÑদুটি স্কোরই ওভালে অ্যাশেজ সিরিজে। ১৯৩৮ অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড করেছিল ৯০৩ রান। ১৯৪৮ অ্যাশেজ সিরিজের পঞ্চম টেস্টে ইংল্যান্ড গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ৫২ রানে। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, ১৬৬টি। এর মধ্যে ইংল্যান্ডের জয় ৫১টি, হার ৪৯টি আর ড্র হয়েছে ৬৬টি ম্যাচ।
এ ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮৩, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬৪, ভারতের বিপক্ষে ৫৭, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৪, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৯, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৮, বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ৪টি করে টেস্ট ঘরের মাঠে খেলেছে ইংলিশরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের জয়ের রেকর্ড শতভাগ, চার টেস্টের চারটিতেই জয়। আর সর্বনিম্ন ৩১ ভাগ জয় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। আজ থেকে এজবাস্টনে শুরু হতে যাওয়া ৫০০তম টেস্ট খেলতে যাওয়া এজবাস্টনে ৪৮ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয় ২৫টি, হার ৮টি ও ড্র ১৫টি। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পর আর কোনো সফরকারী দল এই মাঠে ইংল্যান্ডকে হারাতে পারেনি। পাকিস্তান এই মাঠে সাত টেস্ট খেলে কখনোই জেতেনি। এবার এজবাস্টন জয় করতে পারবে মিসবাহ-উল-হকের দল?
এমন ইতিহাস রচনার দিনে ইতিহাস রচনা করতে চায় পাকিস্তানও। সিরিজের তৃতীয় টেস্টে কোচ মিকি আর্থার চান, লর্ডসের ছবিটাই ফিরে আসুক। ঐ টেস্টে যেভাবে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা একেকজন ‘যোদ্ধা’ হয়ে উঠেছিলেন, এজবাস্টনে ফিরে আসুক তাঁদের সেই যুদ্ধংদেহী রূপই। লর্ডস টেস্টটা জিতে কী দারুণভাবেই না সিরিজটা শুরু করেছিল পাকিস্তান। ৭৫ রানের জয় কি আকাশে তুলে দিয়েছিল তাদের? ওল্ড ট্রাফোর্ডে যে হারতে হলো ৩৩০ রানের ব্যবধানে। আত্মবিশ্বাসও যেন দুমড়ে-মুচড়ে গেল। আর্থার তো রীতিমতো বিধ্বস্ত এমন হারে। পাকিস্তান ক্রিকেট দলের দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ বলেছেন, ‘খেলায় হার-জিত আছে। অনেক হার আছে সম্মানের। কিন্তু কিছু হার আছে, যেটাকে আপনাকে মাটিতে ফেলে স্টিম রোলার চালিয়ে পিষে দেওয়ার সঙ্গে তুলনা করা যায়, ওল্ড ট্রাফোর্ডের হার অনেকটাই এমন। ওখানে পাকিস্তান দলকে মাটিতে ফেলে ¯্রফে পিষেছে ইংলিশরা।’
মিসবাহ-উল-হকের অনন্য এক সেঞ্চুরিতে লর্ডসে জয়ের রসদ মিলেছিল পাকিস্তান দলের। কিন্তু ওল্ড ট্রাফোর্ডে ব্যাটিং ব্যর্থতাই মূলত ডুবিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ হাফিজ কিংবা শান মাসুদরা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। এই দুজন যে লর্ডসেও ভালো কিছু করেছেন, তা নয়। কিন্তু ওল্ড ট্রাফোর্ডের সবকিছুই যেন মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। মাসুদ তো রীতিমতো খেলনায় পরিণত হয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসনের কাছে। অ্যান্ডারসন গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের সিরিজ থেকে এই সিরিজ পর্যন্ত অ্যান্ডারসনের বলে আউট হয়েছেন ৬ বার। অ্যান্ডারসনের ৫৭টি বল খেলে তাঁর রান মাত্র ১৫। এখন মাসুদের জায়গা নিয়েই ভাবছে পাকিস্তানের টিম ম্যানেজমেন্ট। ওয়ানডে অধিনায়ক আজহার আলীকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে মাসুদের জায়গায় সামি আসলামকে খেলানো হতে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলছে, তবে আর্থার বলেছেন, ভাবনা-চিন্তাটা গুরুত্বের সঙ্গে হলেও বিষয়টা সবাইকে জানিয়ে করার মতো নাকি নয়। ওল্ড ট্রাফোর্ডে হারের পর আর্থার দলের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে রীতিমতো গলদঘর্ম, “আমি দলের খেলোয়াড়দের বলেছি, লর্ডসে তোমাদের ‘সত্যিকারের যোদ্ধা’ মনে হলেও ম্যানচেস্টারে এসে (ওল্ড ট্রাফোর্ড) মনে হয়েছে পুরোপুরি উল্টোটা।”
টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়ার ধরনটাই হতাশায় ফেলে দিয়েছে আর্থারকে। ইংলিশ বোলারদের বলে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের খোঁচা দিয়ে ¯িøপে ধরা পড়ার দৃশ্যটি এবারের ইংল্যান্ড সফরের বিজ্ঞাপনে পরিণত হওয়াতেই সবচেয়ে বেশি হতাশ আর্থার, ‘ব্যাটসম্যান আউট হবেই। এটাই নিয়ম। কিন্তু কোনো বিশেষ ধরনের আউট যদি নিয়মিত বিষয়ে পরিণত হয়, সেটা কোচ হিসেবে যে কারোর জন্যই দারুণ উদ্বেগের।’
সমস্যা ধরা গেছে। দাওয়াইও দিয়েছেন। এবার ওষুধে কাজ হলো কি না, সেটাই দেখার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন