কক্সবাজাররে করোনা সংক্রমণ কিছুটা শিথিল হওয়ায় ঈদুল আজহার পরে খুলে দেয়া হচ্ছে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল-ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
করোনা পরিস্থিতির করণে দেশের প্রধান পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে হোটেল-মোটেল ও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ সাড়ে তিন মাস ধরে। গত সাড়ে তিন মাস ধরে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সৈকত এবং বিনোদন কেন্দ্রগুলো নিরব নিস্তব্ধ। এতে করে কক্সবাজারের পর্যটনসহ দেশের পর্যটন কাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। এই খাতে ৪০ লাখ জনবল বেকার হওয়ার পাশাপাশি বিপদে পড়েছে তাদের উপর নির্ভরশীল কমপক্ষে দেড় কোটি মানুষ। এসব বিবেচনায় এনে ঈদুল আজহার পর খুলে দেয়া হচ্ছে কক্সবাজারের হোটেল-বিনোদন কেন্দ্রগুলো।
দেশের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে সচল হওয়ার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহল থকে দাবী উঠে পর্যটন সংশ্লিষ্ট কক্সবাজারের হোটেল-বিনোদন কেন্দ্রগুলো সচল করার। এরই প্রক্ষিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন কক্সবাজারের হোটেল-বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সম্প্রতি 'আমরা কক্সবাজারবাসী' নামের একটি সংগঠন হোটেল-বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার দাবীতে জেলা প্রশাসকের সাথে মত বিনিময়কালে জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তবে এজন্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কঠোর শর্তারূপ করা হয়েছে। যেসব হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ এবং পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে শুধু কেবল সেগুলোই খুলে দেয়া হবে।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজর শহরের সাড়ে ৪ শতাধিক আবাসিক হোটেল, ১৪০ টিরও অধিক রেষ্টুরেন্ট, ২ শতাধিক ট্যুর অপারেটর অফিসসহ পর্যটন শিল্প নির্ভর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর সাথে অর্ধশত পরিবহন সংস্থা ও বিমান পর্যটক পরিবহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সব কিছুই এখন বন্ধ। আর এর সাথে জড়িত শত শত পরিবারের হাজার হাজার মানুষ এখন বেকার। আর এই খাতে ক্ষতির পরিমাণ অবর্নণীয়।
ঈদুল আজহার পরে পর্যটন সংশ্লিষ্ট হোটেল-বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার।
ইতোমধ্যে কক্সবাজারের সাথে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পরিবহণ সংস্থা গুলো সচল হলেও পর্যটক না থাকায় যাত্রী সংকটে ভোগছে এগুলো। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) থেকে চালু হয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দর।
এদিকে কয়েকটি তারাকা হোটেলসহ বিলাসবহুল হোটেল গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে, ঈদুল আজহার পরের জন্য পর্যটকরা অগ্রীম বুকিং দিচ্ছেন। তবে পরিমানটা বেশী না বলে জানান কয়েকজন হোটেল মালিক।
পর্যটন মন্ত্রনালয়ের সূত্র মতে করোনা মহামারীতে দেশের পর্যটন খাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। আর ট্যুরিজন বোর্ডের তথ্য মতে ৪০ লাখ জনবল বেকার হওয়ার পাশাপাশি বিপদে পড়েছে তাদের উপর নির্ভরশীল কমপক্ষে দেড় কোটি মানুষ।
ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স এসোসিয়েশনের মতে সবমিলিয়ে শুধু কক্সবাজারের পর্যটন নির্ভর সাড়ে পাঁচ শতাধিক প্রতিষ্ঠানে করোনাকালীন লকডাউনে স্থবির হয়ে আছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিশাল বিনিয়োগ।
এদিকে কক্সবাজারের কলাতলী হোটেল মোটেল জোনে খবর নিয়ে জানা গেছে, হোটেল - মোটেলে চলছে বিরামহীন প্রস্তিতি। ধুয়ামুছা ও স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ তৈরীতে ব্যস্ত হোটেল কর্তৃপক্ষ।
সৈকতে দায়ীত্বরত ট্যুরিষ্ট পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা না হলে হোটেল গুলোতে যেমন পর্যটক এলাও করা হবেনা। তেমনি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা না হলে, মাক্স পরা না হলে সৈকতেও পর্যটক এলাও করা হবেনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন