স্পোর্টস রিপোর্টার : ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী সাম্বা নাচে উন্মাতাল মারাকানাসহ গোটা বিশ্ব। সুপার মডেলদের মোহনীয় নাচ ছড়ায় ভিন্ন মাদকতা। বিশ্বখ্যাত পিয়ানোবাদক পাওলো জোবিমের তৈরি সঙ্গীতের মূর্ছনার মধ্য দিয়ে মঞ্চে আসেন ব্রাজিল-কন্যা বুন্দচেন। বোসানোভা জ্যাজ গান, ‘দ্য গার্ল ফ্রম ইপানেমা’র সঙ্গে নাচেন তিনি। সঙ্গে একশো সঙ্গী। যাঁরা অনেকেই ব্রাজিলের উঠতি এবং পরিচিত মডেল। এই নাচের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় ‘ফিউচারিস্ট গেটওয়ে’র সাম্বা থিম। এসব মিলিয়ে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে হয়ে গেল ৩১তম অলিম্পিকের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন। মাঠে স্ব-শরীরে থাকা ৭৮ হাজার দর্শকের সঙ্গে এদিন টেলিভিশনে এই মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠানটি দেখেছে প্রায় ৩ বিলিয়ন দর্শক। তবে একটি কারণে এর সবই গৌণ হয়ে গেল বাংলাদেশের জন্য। অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথমবারের মত মশাল বহন করলেন কোন বাংলাদেশিÑ ড. মোহাম্মদ ইউনূস। আগের দিন অলিম্পিক কমিটির সভায় দীর্ঘ ৪৫ মিনিট বক্তৃতা দিয়েছেন বাংলাদেশের বরেণ্য এই অর্থনীতিবিদ। এবার মশাল হাতে দেখা মিলল তাকে রিওর রাস্তায়।
গ্রিসের অলিম্পিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু হয়েছিল গত ২১ এপ্রিল। এরপর অলিম্পিকের সেই মশাল ব্রাজিলে আসে গত মে মাসে। অবশেষে গতকাল সেই মশাল হাতে নিয়ে রিওর রাজপথ প্রদক্ষিণ করলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রথমবারের মতো কোনো বাংলাদেশি পেলেন এই সম্মান। অলিম্পিকে যে মশাল হাতে নেবেন, সেটা তিন দিন আগেই জানা গিয়েছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগের দিন সেই সৌভাগ্য হলো নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদের। গতকাল শিখার যাত্রা শুরু হয় রিওর অলিম্পিক-পল্লি থেকে। এরপর রিওর পশ্চিমের শহরতলি কাম্পো গ্রান্দেতে আসার পর সেটি হাতে নেন ড. ইউনূস। ২০০ মিটার পর্যন্ত দূরত্ব হেঁটেছেন সেই শিখা নিয়ে। রাস্তার দুই ধারে সার বেঁধে দাঁড়িয়েছিলেন অনেক দর্শক। তাঁদের দিকে হাত নেড়ে অভিবাদনও জানিয়েছেন ইউনূস। দুই পাশে নিরাপত্তারক্ষীরা অবশ্য সতর্ক ছিলেন, কোনো অনাহূত আগন্তুক যাতে ভেতরে ঢুকে না যায়। ইউনূসের এই মশাল হাতে নেয়ার একটা ভিডিও পোস্ট করেছে রিও অলিম্পিকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
এই মশাল ধীরে ধীরে অলিম্পিক স্টেডিয়ামের দিকে এগিয়ে চলে। শেষ মুহূর্তে মশাল দিয়ে স্টেডিয়ামের মূল বিশাল মশালটি প্রজ্বালন করেন ফুটবল কিংবদন্তি পেলে। রোগা শরীরে ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে এমন উপলক্ষ্যকে আরো হাজারগুণে আলোকিত করে তোলেন ব্রাজিলিয়ান গ্রেট। যার সঙ্গেই শুরু হয় এবারের অলিম্পিকের পথচলা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন