বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

লিওঁর রূপকথায় বায়ার্নের থাবা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০২০, ১২:০৭ এএম

একের পর এক চমক উপহার দিয়ে এক দশক পর উঠেছিল উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। দারুন ফুটবলের পসরা সাজিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে ওঠার পথও তৈরী করতে চলেছিল অলিম্পিক লিওঁ। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থেকে মাঠে নামা ফরাসি দলটি লড়াই করল ভালোই। তবে ফিনিশিংয়ের ব্যর্থতায় তাদের কপালে জুটল শুধুই হতাশা।
ধীরে ধীরে নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিল বায়ার্ন মিউনিখ। আরও একবার নজরকাড়া ফুটবল উপহার দিয়ে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা জায়গা করে নিল ইউরোপের সেরা ক্লাব আসরের ফাইনালে।
গতপরশু রাতে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের স্তাদিও হোসে আলভালাদেতে তাদের জয়টি ৩-০ গোলের। প্রথমার্ধে জার্মান পরাশক্তিদের পক্ষে জোড়া গোল করেন সার্জ জিনাব্রি। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৯ ম্যাচে এটা তার নবম গোল। দ্বিতীয়ার্ধে আসরে নিজের ৯ম ম্যাচে ১৫তম গোলটি করে ব্যবধান বাড়ান রবার্ত লেভান্দোভস্কি। আসরের সব ম্যাচে গোল পাওয়া পোলিশ স্ট্রাইকারের মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে মোট গোল হলো ৫৫টি।
এই জয়ে সেমি-ফাইনাল গেরোও খুলতে পারলো এর আগে চারটি আসরে শিরোপার খুব কাছ থেকে বিদায় নেওয়া দলটি। সব মিলিয়ে ১১তম বারের মতো ফাইনালে উঠল বাভারিয়ানরা। শিরোপা লড়াইয়ে আগামী রোববার রাতে পিএসজির মুখোমুখি হবে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। লাইপজিগকে ৩-০ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো প্রতিযোগিতাটির ফাইনালে উঠেছে ফ্রান্সের দলটি।
এমন ম্যাচে ঠিক কাকে দুষবেন লিঁও কোচ রুদি গার্সিয়া; নিজের ভাগ্যকে নাকি খেলোয়াড়দের? কারণ তিন তিনবার যে সুযোগ মিস করেছেন তার ফরোয়াডর্রা, তা এক প্রকার অবিশ্বাস্যই বটে। ফাঁকায় গোলরক্ষককে পেয়েও একবারও লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। সেই হতাশায় পুড়ছেন লিঁও ফরোয়ার্ড টুকু একাম্বিও। মনে করছেন, অপরাজেয় নয় জামার্ন জায়ান্টরা। হারানোই যেত তাদের। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ইউরোপ সেরার লড়াই হতে পারত দুই ফরাসী ক্লাবের মধ্যেই। স্কোর লাইন ভিন্ন গল্প বললেও খেলার শুরুর দিকে সেই সম্ভাবনা ছিল প্রবল।
বড় দায় নিতে হবে ক্যামেরুনের ফুটবলার একাম্বিকেই। পরিষ্কার দুই সুযোগ যে নষ্ট করেছেন একাই। এছাড়া মিডফিল্ড থেকে আরও কয়েকটি তৈরি করা দারুণ বল কাজে লাগাতে পারেননি দৃষ্টিকটুভাবে। ম্যাচ শেষে আরএমসি স্পোর্টসকে একাম্বি প্রকাশ করেন সুযোগ হারানোর ক্ষত, ‘আমরা আরও অনেক ভাল করতে পারতাম। আমরা গোল করতে পারতাম- আমিই পারতাম প্রথমে। আজ (পরশু) রাতে তা আমাদের পক্ষে যায়নি। আমরা সহজ কিছু সুযোগ হারিয়েছে আবার ওদের সেরা গোলরক্ষকের কারণেও বল জালে জড়ায়নি।’
তবে বায়ার্নকে নাগালেও পেয়েও ধরতে না পারার আফসোস নিয়ে একাম্বি বলছেন তারা অপরাজেয় নয়, ‘আমি মনে করি না তারা অপরাজেয়। আমরা জানি তারা দারুণ দল। আমরা জানতাম তাদের হারাতে পারব কিন্তু সব কিছু ঠিকঠাক করেও আমরা সেটা করতে পারিনি। মাঝে মাঝে আপনি পারবেন, মাঝে মাঝে না। আজ রাতে কিছু জিনিস গোলমাল করায় জিততে পারিনি আমরা।’
পাঁচবারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন আছে দুরন্ত ছন্দে। গত ডিসেম্বর থেকে জার্মান জায়ান্টরা অপরাজেয়। সর্বশেষ ২০ ম্যাচে জয়, ২৯ ম্যাচ থেকে হারের দেখা পায়নি। সবমিলিয়ে সিঙ্গেল রাউন্ডের কোয়ার্টার ও সেমির আসরে এখন পর্যন্ত ৪২টি গোল দিয়েছে তারা। নকআউট পর্বের শেষ দুই রাউন্ডে আরও একটি রাউন্ড থাকলে হয়তো পরিমাণটা আরও বাড়ত। বর্তমান দলটি আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী বলে মনে করেন দলের অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়ার, ‘যে কোনো সময়ের চেয়ে আমাদের দলটি অনেক ভালো অবস্থানে আছে। এখন আমাদের যে ক্লাস রয়েছে তা শুধু ১৮ জন খেলোয়াড়ে সীমাবদ্ধ নয়, সবমিলিয়ে দারুণ একটি দল আছে আমাদের।’ তবে কোয়ার্টার-ফাইনালে বার্সেলোনাকে ৮-২ গোলে বিধ্বস্ত করা বায়ার্নের দুর্ভাবনার কারণ হতে পারে তাদের রক্ষণ। লিওঁর গতিময় আক্রমণে তাদের রক্ষণের দুর্বলতা বারবার ফুটে উঠেছে। ফাইনালেও এই দশা থাকলে নেইমার-কিলিয়ান এমবাপেদের বিপক্ষে চড়া মাশুল দিতে হতে পারে হান্স ফ্লিকের দলকে।
বায়ার্ন মিউনিখ ৩
অলিম্পিক লিওঁ ০

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন