দক্ষিণাঞ্চলে পুনরায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হ্রাসের ফলে সনাক্তের সংখ্যা কমলেও মৃত্যুর তালিকায় আরো দু জনের নাম যুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে বরিশাল মহানগরীর বটতলা এলাকায় ৬৫ বছর বয়স্কা এক নারী শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পটুয়াখালী শহরের মুসলিপাড়া এলাকার ৮৫ বছর বয়স্ক এক পুরুষ জেলা সদর হাসপাতালে মারা গেছেন। ফলে দক্ষিণঞ্চলের ৬ জেলায় সরকারী হিসেবে এ পর্যন্ত ৭ হাজার ৬০৬ জন আক্রান্তের মধ্যে মুত্যু হল ১৫৮ জনের। আর মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় আরো ৬৪ জন সহ সর্বমোট ৫ হাজার ৯২৭ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমিত হিসেবে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহধীককাল যাবতই দক্ষিণাঞ্চলে করোনার নমুনা পরিক্ষার সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে যেখানে প্রায় ৩শ নমুনা পরিক্ষা সম্ভব সেখানে গত কয়েকদিন তা আড়াইশর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। সোমবার নমুনা পরিক্ষা হয়েছে মাত্র ১৯৪ জনের। রবিবার সংখ্যাটা ছিল ২৪৯, শণিবারে তা ছিল মাত্র ৯০। অপরদিকে ভোলায় স্থাপিত পিসিআর ল্যাবে আজ পর্যন্ত কোন দিনই ৫০ জনের নমুনা পরিক্ষা হয়নি। অথচ পটুয়াখালীতে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করলে তা বরগুনা ও পটুয়াখালী সহ সন্নিহিত বিশাল এলাকার জনগোষ্ঠীর নমুনা পরিক্ষায় সহায়ক হতে পারত। বিষয়টি নিয়ে পটুয়াখালীবাসি সহ স্বাস্থ্য প্রশাসন থেকেও বহু আর্জি জানান হলেও তা ফলপ্রসু হয়নি। সোমবার ভোলা পিসিআর ল্যাবে মাত্র ৩৬ জনের নমুনা পরিক্ষা সম্পন্ন হয়। যা আগের পুরো সপ্তাহেই ছিল ৩০-এর নিচে।
এদিকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে মঙ্গরবার সকাল পর্যন্ত ৪৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিল। যা আগের দিন ছিল ৪০। অপরদিকে হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে এ সময়ে চিকিৎসাধীন ছিল আগের দিনের ৩৮-এর স্থলে ৩৯ জন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরো ৭ জন।
মঙ্গলবার দুুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘন্টায় ভোলা ও পিরোজপুরে করেনা রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে বেড়েছে। এ সময়ে ভোলোতে করোনা সংক্রমনের সংখ্যা আগের দিনের ২ থেকে ১০ এবং পিরোজপুরে ১ থেকে ১২ জনে উন্নীত হয়েছে। ভোলা ও পিরোজপুরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬৫ আক্রান্তের মধ্যে ৬ জন ও ৯৮৬ জনের মধ্যে ২০ জন।
অপরদিকে নমুনা পরিক্ষা হ্রাসের কারনে বরিশালে আগের দিনের ৩৫ জন আক্রান্তের স্থলে মঙ্গলবার দুপুরের পূবর্বর্তী ২৪ ঘন্টায় ১০জনে হ্রাস পেলেও মৃত্যুর সংখ্যাটা আগের দিনের মত একজনই রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে করোনা হটস্পট বরিশালে এপর্যন্ত ৩,১৪৩ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলাটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ সংখ্যার প্রায় ৭৫ ভাগই বরিশাল মহানগরীতে বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিন ধরেই বরিশাল মহানগরীতে একের পর এক করোন আক্রান্তের মৃত্যু ঘটছে। সেমাবার নগরীর বটতলা এলাকায় এক নারীর মৃত্যুর আগের দিন অনতিদুরের গোড়াচাঁদ দাস রোডে ও জর্ডন রোডে অঅরো দুজনের মৃত্যু হয়। তারে আগেই বি এম স্কুল রোডে ও বাজার রোডে একজন করে মারা গেছেন। পুরো বরিশাল মহানগরী যুড়ে করেনা সংক্রমন আরো আগেই মহামারি রূপ লাভ করলেও এখন প্রতিদিনই কোন না কোন এলাকা থেকে মৃত্যুর খবরও আসছে। কিন্তু নগর প্রশাসন সহ স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোন হেলদোল লক্ষনীয় বলে জানিয়েছেন ওয়াকিবাহল মহল।
এদিকে বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলায় গত ২৪ ঘন্টায় নতুন কোন আক্রান্তের খবর দেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে এ দুটি জেলাতেই মৃত্যু হার যথেষ্ঠ বেশী। বরগুনাতে ৮৫৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৮ এবং ঝালকাঠীতে ৬৩৪ জনের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে ইতোমধ্যে।
পটুয়াখালীতেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ১০ জন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ জনে হ্রাস পেয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ জেলাটিতেও মৃত্যু হার এখনো অনেক বেশী।পটুয়াখালীতে এপর্যন্ত ১,৩১৭ জন আক্রান্তের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন