শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

ইউএনওর বাসায় চুরির ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য হয়নি

সাংবাদিকদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন সমন্বয় করে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় আনসার সদস্য মোতায়েনের পর এবার উপজেলা কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সঙ্গে ইউএনও’র উপর হামলার ঘটনার পেছনের গড ফাদারদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের এ সব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ইউএনওর বাসায় চুরির ঘটনা, এটা মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ এলে তিনি বলেন, নিজ নিজ গোয়েন্দা শাখার প্রধানদের কাছে রিপোর্ট দেবে এবং সব রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে কম্পাইল হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সব ডিপার্টমেন্টকে নিয়ে একটি ইন্টিগ্রেটেড কমিটি থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করে, সমন্বয় করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করা হয়েছে। সব রিপোর্ট একত্রে নিয়ে প্রতিকার করতে সহজ হবে। সবগুলোকে এক ছাতার নিচে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মন্ত্রী বলেন, সারাদেশে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখার যে বিভিন্ন বিভাগ আছে, তারা কী বলছেন বা কী মনে করছেন বা কী সাজেশন দিচ্ছেন এগুলো বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কী করা উচিত? প্রত্যেককে ইন্ডিভিজ্যুয়াল আসছে, সেটাকে আমরা একত্রিত করে কী সিদ্ধান্ত নেয়া যায় সেজন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিকারের ব্যবস্থা করতে পারে। ওনাদের (গোয়েন্দা সংস্থা) কাজ আমরা অবজ্ঞা বা অবমূল্যায়ন করছি না বা বিবেচনায় দেয়া হবে না, তা নয়। যারা নির্যাতিত, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মেইন ফাংশন, কেন এ ঘটনা ঘটলো, উৎস কী বা যে সমস্ত ক্রাইম সেগুলো দেখার। হয়তো একেক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট একেক রকম আসতে পারে, একই রকম আসতে পারে। সেজন্য আমরা একটা কমিটি গঠনের পরামর্শ দিয়েছি। সব শুনে একটা সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছি, উনি কমিটি গঠন করবেন।

শুধু ইউএনওদের বাসভবন নয়, পুরো উপজেলা কমপ্লেক্সেই নিরাপত্তা
শুধু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) বাসভবন নয়, পুরো উপজেলা কমপ্লেক্সেই নিরাপত্তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি আরো বলেন, আপনারা শুনেছেন, ইতোমধ্যে ইউএনওদের বাসভবনে পুলিশ মোতায়েন করেছি, যাতে তাদের রাত্রীকালীন নিরাপত্তা থাকে। আজকে আমরা সংশোধন করে বলেছি, পুরো উপজেলা কমপ্লেক্সে নিরাপত্তা দিতে। কারণ, সেখানে আরও অফিসার থাকেন। সেখানে অনেক অফিসারই পরিবার নিয়ে বাস করেন, তাদেরও নিরাপত্তার প্রশ্ন রয়েছে।

সিনহা হত্যা প্রসঙ্গঃ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যৌথভাবে তদন্ত হচ্ছে, তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে যাতে আইন খুব কঠোরভাবে প্রয়োগ হয় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে, দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দৃঢ়প্রত্যয়ী। বিএনপি এই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানিয়েছে- এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি বলেন, তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবেচনা নিতে পারে। আমাদের কাছে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেই।

২৪ ওয়াচ টাওয়ারে ২৪ ঘণ্টা মনিটরঃ মোজাম্মেল হক বলেন, রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে সেখানে কিছু আন্তর্জাতিক পৃষ্ঠপোষকতা আছে এনজিওদের নামে, যাতে রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে দ্বিধাবিভিক্ত হয়ে মারামারি কাটাকাটি বা মাদকদ্রব্য ও ক্রাইমের সঙ্গে জাড়িত হচ্ছে। সেগুলোও নিয়ন্ত্রণের জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে অচিরেই ভালোভালে ফাইন্যান্সিংয়ের ব্যবস্থা করবো এবং ২৪টি টাওয়ার নির্মাণ করে ২৪ ঘণ্টা মনিটর করতে পারি। প্রয়োজনীয় সংখ্যক সিসি ক্যামেরা দিয়ে তাদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ক্রাইমের সঙ্গে অল্পসংখ্যক জড়িত। মাদক পাচারে জড়িত হয়ে যায়। বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। কোন এনজিও অপব্যবহার করছে- প্রশ্নে তিনি বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা কিছু কিছু নাম বলেছে। সুনির্দিষ্টভাবে তারা কী খারাপ কাজ বা অন্যায় কাজ করছে, তার রিপোর্ট আমরা পেশ করতে বলেছি।

মাদকের পৃষ্ঠপোষকদের চিহ্নিত করার নির্দেশঃ মাদক যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে আছে জানিয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি বলেন, আমরা আরও উন্নত করতে চাই। বাংলাদেশের বিশাল বর্ডার। অনেক দুর্গম জায়গাও আছে। সেখান দিয়ে ক্রিমিনালরা সহজেই ঢোকে। আমাদের ধারণা যে ১০/২০ টাকার মাদকের ট্যাবলেট ৩০০-৪০০ টাকা করে বিক্রি করে। সেজন্য অনেকের মাথা কিনে ফেলে। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ের লোকেরাও, বড় বড় ব্যবসায়ীরা বা বিভিন্নভাবে সহজে অর্থের একটা উৎস। গোয়েন্দা সংস্থাকে বলা হয়েছে আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের আইডেন্টিফাই করে হাত দিতে হবে। আরও বেশি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি আরও বেশি মাদকবিরোধী অভিযান চলে, একই সঙ্গে মাদকবিরোধী নতুন আইনও হয়েছে, যা আছে মাদকের বিরুদ্ধে এদেশে আইন ছিল না। পুলিশ ধরে নিয়ে মামলা দিলে বেল পেত।

অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের ক্যাম্পে রেখে বিদেশঃ মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ৫০০-৭০০ এর উপরে বিদেশি নাগরিক আছেন, যাদের পাসপোর্টের মেয়াদ ও ভিসা নেই। তারা মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় এদেশে অবস্থান করছেন। এই বিদেশি চক্র টাকা পাচার করা বলেন, অন্য ক্রাইম বলেন আপনাদের মাধ্যমে মাঝে মধ্যে জাতি জানতে পারে। তারা এসব ক্রাইম করছে। বিক্ষিপ্তভাবে গুলশানে, এখানে-সেখানে, হোটেলে তারা থাকে। তাদের পরিপূর্ণ তালিকা পুলিশ বিভাগের কাছে আছে। তাদের সবাইকে ক্যাম্পে নিয়ে রেখে নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য তাদের যদি নিজেদের টিকিট কাটার সামর্থ্য না হয় সরকারি পয়সায় টিকিট কেটে তাদের দেশে পাঠানোর জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন