বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভারতের ঢলে নদ-নদীর পানি বাড়ছে উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে

সক্রিয় মৌসুমি বায়ু-লঘুচাপ দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:১৩ এএম

ভারতে অতি বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, অরুণাচল, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হচ্ছে। ভারতের উজান থেকে ভাটির দিকে অব্যাহতভাবে নামছে ঢল। এরফলে দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদ-নদীর পানি ফের বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল বুধবার ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্ব ভারতের সিকিম, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়।

এরমধ্যে জলপাইগুড়িতে ১৮০ মিলিমিটার, চেরাপুঞ্জিতে ১৬৫ মি.মি, দার্জিলিংয়ে ১০৪ মি.মি., পাসিঘাটে ৫৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশের উপর মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় ও সেই সাথে লঘুচাপের প্রভাবে দেশজুড়ে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশ ও এর সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ভারতে জলীয়বাষ্প ও মেঘমালা বিস্তৃত রয়েছে। এতে করে আশ্বিন মাসে বৃষ্টি ঝরছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিহারে।

গতকাল পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর সংলগ্ন উত্তর-পূর্ব ভারতের মেঘালয়, দার্জিলিং অঞ্চলসমূহে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। এরফলে উক্ত সময়ে ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার এবং আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি দ্রæত বৃদ্ধি পেতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র আরো জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। কুশিয়ারা নদী ছাড়া উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।

দেশের নদ-নদীর ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৪৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫৩টি পয়েন্টে হ্রাস পায়। সিংড়ায় গুড় নদীর পানি গতকাল বিকেল পর্যন্ত আরও বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার নদ-নদীর ৫৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৪০টিতে হ্রাস পায়। ৩টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে। গত সোমবার ৩৭টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৬০টি পয়েন্টে হ্রাস পায়, ৪টি স্থানে অপরিবর্তিত থাকে।

মৌসুমী বায়ু আবারও সক্রিয় হওয়ায় প্রধান নদ-নদীর উজানে ভারতে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ২২ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এবং ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মেঘালয়, অরুণাচলে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। অতিবৃষ্টিতে প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানের অববাহিকায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেখানকার অনেকগুলো বাঁধ-ব্যারেজ খুলে দিয়েছে ভারত। পানি গড়াচ্ছে ভাটিতে।

এদিকে বৃষ্টিবাহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, দেশের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে তাপমাত্রা অপরিবির্তত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, ভারতের ছত্রিশগড় ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গতকাল আরও উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে মধ্যপ্রদেশ এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন