বোদা (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা : বোদা উপজেলাসহ পঞ্চগড় জেলায় গবাদিপশু, গরু-ছাগল ও গাভী পালন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন। উপজেলা ঘুরে গবাদিপশু পালনকারীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা এখন অনেকেই স্বাবলম্বী। এ উপজেলায় ছোট-বড় ও মাঝারি ধরনের বেশ কিছু গরুর খামার গড়ে উঠেছে। এসব গরুর খামারের পাশাপাশি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর নিজস্ব উদ্যোগে গবাদিপশু পালন করা হচ্ছে। অনেক গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষজন বিভিন্ন এনজিও থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে বাজার থেকে ছোট ছোট গরু ও ছাগল ক্রয় করে বাড়িতে লালন-পালন করছেন। বর্তমান বাজারে গরু ও ছাগলের দাম ভালো থাকায় গবাদিপশু পালনকারীরা লাভবান হচ্ছেন। অনেকে গাভী পালন করে লাভবান হচ্ছেন। কারণ গাভী থেকে দুধ বিক্রিসহ গাভীর বাচ্চাটি থেকে আরো বেশি লাভবান হওয়া যায়। অনেকে গাভী পালন করে নিজেদের দুধের চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্যের চাহিদা পূরণ করছেন। অনেকে গরু মোটাতাজাকরণ করছেন। গরু মোটাতাজা থাকলে বাজারে এর মূল্য বেশি থাকে। অনেক খামারিসহ গবাদিপশু পালনকারীরা বলেন, বর্তমানে এ অঞ্চলে বেশি ঘাস পাওয়া যায় না। অনেক আগে এ অঞ্চলগুলোতে প্রচুর ঘাস থাকত। তখন মানুষজন তাদের জমিগুলো একটি ফসল আবাদ করলে ফেলে রাখত। এখন আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির যুগে মানুষজন কোনো জমি ফেলে রাখে না। কেউ কেউ একটি জমিতে বছরে তিনটি ফসল উৎপাদন করছেন। এ অঞ্চলের একমাত্র গবাদিপশুর খাদ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ধানের খড়। বেশি বেশি গবাদিপশু পালন করায় বর্তমানে খড়ের বাজারমূল্য বেড়ে গেছে। এ ব্যাপারে বোদা পৌর শহরের সর্দারপাড়া গ্রামের খামারি তোফাজ্জলের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি ৬টি গাভী ও ৪টি গরুসহ মোট ১০টি গরু লালন-পালন করছি। গাভীগুলো বর্তমানে ‘মা’ হওয়ার অপেক্ষায়। তিনি গবাদিপশু পালনে সরকারিভাবে কোনো সাহায্য-সহযোগিতা কোনো দিন পাননি। আরো কথা হয় মাড়েয়া ইউনিয়নে প্রধানপাড়া গ্রামের গবাদিপশু পালনকারী সারোয়ার আলম প্রধানের সাথে। তিনি তার বাড়িতে একটি খামার গড়ে তোলেন।
এতে ১০টি গরু আছে। এর মধ্যে তারও ৫টি গাভী আছে। তিনিও সরকারিভাবে কোনো সাহায্যে-সহযোগিতা পাননি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: সহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনেক খামারি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন। ওষুধপত্রসহ বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন নিয়ে যান, আমরা গবাদিপশু লালন-পালনকারীদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। তিনি বলেন, গবাদিপশু পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। সরকার যদি ভর্তুকিসহ ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে পারে এবং পর্যাপ্ত ওষুধ সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে গবাদিপশু পালনে মানুষজন আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে লোকবলের অভাব। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে ভেটেরিনারি মাঠ সহকারীর ৩টি পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে। এছাড়াও উপজেলা প্রাণিসম্পদ সহকারীর পদটিও শূন্য রয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল থাকলে মাঠপর্যায়ে সুন্দরভাবে কাজ করা যায় এবং মানুষজন ঠিকমতো সেবা পেলে গবাদিপশু পালনে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে উঠবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন