বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

আবারো ঊর্ধ্বমুখী মসুর ডালের দাম ৯ দিনে দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা

প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : দীর্ঘদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গত মাসের শেষের দিকে মসুর ডালের দাম কিছুটা কমে আসে। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকে আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে পণ্যটির দাম। চলতি মাসে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে মসুরের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে ডালের বুকিং দর নিম্নমুখী হলেও সরবরাহ সঙ্কটে এর দাম আবারো বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল ডালের আড়ত ও পাইকারি দোকানগুলোয় মানভেদে দেশী মসুর বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১৩৮-১৪০ টাকায়। জুলাইয়ের শেষের দিকে একই পণ্য ১৩২-১৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। সে হিসেবে নয় দিনের ব্যবধানে পাইকারিতে দেশী মসুর ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৫ টাকা।
একসময় খাতুনগঞ্জে নেপালি মসুরের ভালো সরবরাহ থাকলেও কয়েক মাস ধরে তা কমে এসেছে। গত বছর দেশটিতে ভূমিকম্পের পর পণ্যটির উৎপাদন কমে যাওয়ায় আমদানি হ্রাস পেয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল পাইকারিতে নেপালি মসুর ডাল বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১৩০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের এক পাইকারি ডাল ব্যবসায়ী জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী দর ও বাড়তি চাহিদায় পাঁচ-ছয় মাস মসুর ডালের দাম ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবে গত মাসের শেষের দিকে পণ্যটির দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা কমে যায়। কিন্তু চলতি মাসে বাজার ফের ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখী থাকলেও কয়েক মাসে পণ্যটির আমদানি কম হওয়ায় বাজারে সরবরাহ কমেছে। এতে বাজারদর আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠেছে। তবে আমদানির জন্য বুকিং হওয়া পণ্যগুলো বাজারে পৌঁছলে এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজার আবার নিম্নমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অপর একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আলতাফ হোসেন বলেন, বিশ্ববাজারের প্রভাবে চার-পাঁচ মাস ধরে মসুরের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। এমনকি গত মৌসুমে দেশী মসুর বাজারে আসার পরও পণ্যটির দামের পরিবর্তনে প্রভাব পড়েনি। বরং দীর্ঘদিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় মোকামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যবসায়ীরা দেশী মসুরের মজুদ বাড়িয়েছে। এতে ভর মৌসুমেও পণ্যটির দাম না কমে উল্টো বেড়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাবে জুলাইয়ে দেশী মসুর ডালের দামও কেজিতে ৭-৮ টাকা হ্রাস পায়। সরবরাহ সঙ্কটে বর্তমানে বাজার আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে নিম্নমুখী থাকলেও দেশে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে আমদানি করা মসুরের দামও। জানা যায়, এক মাস আগে খাতুনগঞ্জে অস্ট্রেলিয়ার মসুর বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯৮-১০০ টাকায়। এক মাসে কেজিতে প্রায় ৫ টাকা বেড়ে গতকাল তা বিক্রি হয় ১০৫-১০৮ টাকায়। এদিকে গতকাল অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা মাঝারি মানের (লোকাল মিলিং) মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ১০৪ টাকায়, যা ৩০ দিন আগে ৯৫-৯৮ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
অন্যদিকে গতকাল কানাডা থেকে আমদানি করা মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯৪ টাকায়, যা গত মাসের শেষের দিকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। আর কানাডার (লোকাল মিলিং) মসুর দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৮৫ টাকায়। বর্তমানে একই পরিমাণ পণ্য ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ডাল মিল মালিক সমিতির সভাপতি আহমেদ রশিদ আমু গণমাদ্যমকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে কয়েক মাস মসুরের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকায় পণ্যটির বুকিং কম হয়েছে। ফলে গত এক-দেড় মাসে পণ্যটির আমদানি কমে যায়। এদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর কমলেও দেশের বাজারে সরবরাহ সঙ্কট দেখা দেয়ায় তা বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে নতুন করে বুকিং দেয়া পণ্য বাজারে পৌঁছলে দাম কমে আসার প্রত্যাশা করছেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন