শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তারার আলোয় ঝলমলে রাত

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

নতুন মৌসুমে বার্সেলোনার প্রথম ম্যাচে আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে মুগ্ধ করেছেন আনসু ফাতি। তবে উচ্ছ্বাসের জোয়ারে ভেসে না গিয়ে ‘একটু একটু’ করে আরও উন্নতির কথা বললেন ১৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। জানালেন, বেড়ে উঠতে তাকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করছেন দলের তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি।

ফাতির জোড়া গোলে গতপরশু রাতে লা লিগায় ভিয়ারিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দেয় বার্সেলোনা। দলটির কোচ হিসেবে রোনাল্ড কোম্যানের প্রথম অফিসিয়াল ম্যাচে স্কোরবোর্ডে নাম লেখান মেসিও। ক্যাম্প ন্যু’য়ে অন্য গোলটি ছিল আত্মঘাতী। ম্যাচ শেষে বার্সা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লা লিগায় বার্সেলোনার সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা ফাতি জানালেন, মেসির সঙ্গে খেলে স্বপ্ন পূরণ হওয়ার কথা, ‘আমি যখন ছোট, তখন থেকেই লিওনেল মেসির সঙ্গে খেলার স্বপ্ন ছিল এবং এখন আমি তার সঙ্গে খেলতে পারি। সবসময় তিনি আমাকে সাহায্য করেন, পরামর্শ দেন এবং এজন্য আমি খুব খুশি। কেবল মাঠে নয়, অনুশীলনেও তিনি অনেক সাহায্য করেন।’
ম্যাচের শুরু থেকেই প্রতিপক্ষের রক্ষণ ভাঙার সৃজনশীলতা ছিল মেসি-ফাতিদের খেলায়। তবে পঞ্চদশ মিনিটে ফাতির প্রথম গোলটি ছিল জর্দি আলবার সঙ্গে তার দারুণ বোঝাপড়ার ফল। মাঝমাঠ থেকে বল পাওয়া আলবার কাটব্যাকে চমৎকার ফিনিশিংয়ে জাল খুঁজে নেন ফাতি। চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করা গোলটিও ফাতির। নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে দারুণ গতিতে এগিয়ে যান ফিলিপে কৌতিনিয়ো। বাঁদিকে অরক্ষিত তরুণ ফরোয়ার্ডকে খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। ঠান্ডা মাথায় বাকিটা সারেন তরুণ ফরোয়ার্ড, কাছের পোস্ট ঘেঁষে বল পাঠান জালে। গোলের জন্য ক্ষুধার্ত ফাতি কৃতিত্ব দিলেন সতীর্থদের, ‘কোনো ফরোয়ার্ড যখন গোল করে তখন তারা আরও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এবং আমার ক্ষেত্রেও এটিই হয়েছে। প্রথম গোলে জর্ডি আলবার পাসটা ছিল আসলেই দারুণ, আমাকে এটাতে কেবল একটু সহায়তা করতে হয়েছিল।’ বার্সেলোনা এদিন চারটি গোলই করে প্রথমার্ধে। এই পারফরম্যান্সটাই আরও এগিয়ে নেওয়ার আশাবাদের কথা জানান চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা ফাতি।
এদিকে বার্সেলোনা ছেড়ে লা লিগার আরেক ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে যোগ দিয়েছেন লুইস সুয়ারেজ। আর ক্লাবটিতে আগে থেকেই আছেন দিয়াগো কস্তা। এ দুই খেলোয়াড়েরই আগ্রাসী মেজাজের জন্য বদনাম রয়েছে। তাই এ জুটির ফলাফল দেখার জন্য অধীর অপেক্ষায় ছিলেন সমর্থকরা। সেটির এক ঝলক দেখে নিলেন ভক্তরা। গতপরশু রাতে গ্রানাদাকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দেয় অ্যাটলেটিকো। ওই ম্যাচে শুরুতেই দলকে এগিয়ে নেন কস্তা। ৭১তম মিনিটে স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ডের বদলি নেমে জোড়া গোল করেন সুয়ারেস। আর তাতে নতুন ক্লাবের হয়ে মাঠে নেমেই ইতিহাস গড়েছেন সুয়ারেজ। একবিংশ শতাব্দীতে লা লিগায় প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অভিষেক ম্যাচে জোড়া গোল করেন এই উরুগুইয়ান। পাশাপাশি অ্যাটলেটিকোর হয়ে প্রথম ফুটবলার হিসেবে অভিষেকেই জোড়া গোল পেলেন এ ফরোয়ার্ড। অথচ মাঠে ছিলেন মাত্র ১৯ মিনিট। দুজন একসঙ্গে খেললে প্রতিপক্ষের জন্য তা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, কোনো কিছুতেই যারা তারা ছাড় দিচ্ছেন না তা কস্তার কথায় স্পষ্ট, ‘এটা খুব দারুণ ব্যাপার। আমাদের একজন মারবে এবং অন্যজন কাটবে।’ সুয়ারেজের মতো খেলোয়াড়কে বার্সেলোনা কেন ছেড়ে দিয়েছেন তা বুঝতে পারছেন না কস্তা, ‘ভাগ্যক্রমে আমাদের লুইসের (সুয়ারেজ) মতো খেলোয়াড় আছে। বার্সেলোনা ছেড়েছে। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না একটি ক্লাব কীভাবে তাকে ছেড়ে দেয়। তবে দিনশেষে এটা আমাদের জন্য খুবই ভালো। তার গোল এবং ড্রেসিং রুমে লড়াকু মানসিকতা ও শিরোপা জয়ের ইচ্ছা দিয়ে সে আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছে।’
এদিকে ইতালিতেও আলো ছড়িয়েছেন সময়ের আরেক সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তার জোড়া গোলেই দুই দফা পিছিয়ে পড়েও রোমার মাঠ থেকে স্বস্তির ড্র নিয়ে ফিরেছে জুভেন্টাস। সিআর সেভেনও জানালেন, কঠিন হয়ে যাওয়া পরিস্থিতিতে পয়েন্ট পাওয়াটা তাদের জন্য ছিল গুরুত্বপূর্ণ। নতুন কোচের অধীনে সবাই হাসিমুখে কাজ করছে বলেও স্পোর্টস ইতালিয়াকে জানান রোনালদো, ‘আমি মনে করি, এই এক পয়েন্ট আমরা অর্জন করেছি। জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এবং আমরা ঘুরে দাঁড়াই, এমনকি একটা লালকার্ড পাওয়ার পর। মৌসুম শেষে এটাই প্রমাণ হতে পারে, রোমার বিপক্ষে পাওয়া পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা মৌসুমের শুরুর পর্যায়ে আছি। নতুন কোচ, নতুন আইডিয়া কিন্তু আমার মনে হচ্ছে দল উদ্যেম নিয়ে ভালোভাবে কাজ করছে এবং আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছি আমি। দলকে হাসিমুখে কাজ করতে দেখছি আমরা।’
৬১তম মিনিটে রাবিওর লালকার্ডে দশজনের দলে পরিণত হয় জুভেন্টাস। এর কিছুক্ষণ পরই পিছিয়ে পড়া সেরি আর চ্যাম্পিয়নদের সমতায় ফেরান রোনালদো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন কোচ আন্দ্রেয়া পিরলো, ‘রানালদো থাকায় আমরা খুবই খুশি। সে শুধু গোল এনে দেয় না। যখন আমরা দশ জনের দলে পরিণত হয়েছিলাম, তখন সে আরও বেশি ছুটেছে এবং সেটা তার সতীর্থদের জন্য অনেক বড় সাহায্য ছিল।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন