দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজে বাধা দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে আওয়ামীলীগ নেতা দুই হালি মামলার আসামী ময়নুল মাস্টার (৪৬) কে হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে হাকিমপুর থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার আসামী ময়নুল মাস্টার দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চাঁটশাল বিলপাড়া গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে এবং পালশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।
থানার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ডুগডুগীহাট হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার বারান্দা নির্মাণ কাজ চলাকালীন মইনুল মাস্টার ও ফয়সাল হোসেনের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদাবাজি করে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে ম্যানেজিং কমিটির লোকজন এসে পুনরায় কাজ চালু করে।
একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ম্যানেজিং কমিটির লোকজন মাদ্রাসার অফিস কক্ষে বসে থাকা অবস্থায় সংঘবদ্ধ দলটি মইনুল মাস্টারের নেতৃত্বে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে আসে। এসময় তারা ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিয়ে পুনরায় কাজ শুরু করায় অকথ্য ভাষা গালাগালি করতে থাকে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে। এক পর্যায়ে সে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এবং উপস্থিত ম্যানেজিং কমিটির লোকজনের ওপর চড়াও হয়ে লাঞ্ছিত করে। পরের দিন পয়লা অক্টোবর মাদ্রাসা কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ময়নুল মাস্টার সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় চাঁদাবাজির একটি মামলা দায়ের করে।
এজাহার অনুযায়ী মামলার অন্য আসামীরা হলেন,উপজেলার ডুগডুগিহাট বাজারের পুড়ইল মোল্লাভাগ গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে ফয়সাল হোসেন (৩৬), দেওগ্রামের মৃত ছাবেদ আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৪২), পালশা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে মেহেদী হাসান (৩৬), বিশাইনাথপুর গ্রামের সহিদ হোসেনের ছেলে সজিব মিয়া (৩৭), দেওগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ছামসুল ইসলামের ছেলে ইরফানুল হক জুয়েল (৩৫) ও পুড়ইল মোল্লাভাগ গ্রামের মৃত মোখলেছুর রহমানের ছেলে সুমন মিয়া (৩২)।
এদিকে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজে বাঁধা দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়েরের পরের দিন মামলার অন্যতম আরেক আসামী দেওগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের ছামসুল ইসলামের ছেলে ইরফানুল হক জুয়েল (৩৫) কে গ্রেপ্তার করে গত বৃহঃপতিবার (১লা অক্টোবর) জেলহাজতে প্রেরণ করা হয় এবং অন্য আসামীদেরকে গ্রেফতার করতে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়। গতকাল রোববার (৪ অক্টোবর) ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ খবর পেয়ে ময়নুল মাস্টারকে হিলি সীমান্ত এলাকা থেকে হাকিমপুর (হিলি) থানা পুলিশের সহযোগীতায় ৯টায় গ্রেপ্তার করে ।
থানা সূত্রে জানা যায়, ময়নুল মাস্টারের বিরুদ্ধে ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ঘোড়াঘাট সহ দেশের বিভিন্ন থানায় চাঁদাবাজি, বিলাস বহুল মাদক কোকেন পাঁচার, মারামারি ও পুলিশ এ্যাসাল্টসহ ৭ টি মামলা রয়েছে। সর্বশেষ ১ অক্টোবর ঘোড়াঘাট থানায় চাঁদাবাজির আরেকটি মামলা রুজু হয়। বহুল আলোচিত ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ময়নুল মাস্টারকে আটক করেছিল দিনাজপুর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
ঘোড়াঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিম উদ্দীন জানান, গ্রেপ্তারকৃৃত ময়নুল মাস্টারকে আজ দিনাজপুরে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। চাঁদাবাজির মামলা দায়েরের পর থেকেই তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত ছিল। গতকাল দুই থানার সমন্বয়ে তাকে সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলায় অপর ৫জন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলমান রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন