শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঝিনাইদহে ১৯ কোটি টাকার সেই রাস্তার বাকি অংশের পিচও উঠে যাচ্ছে

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২০, ৪:০৮ পিএম

নির্মাণের ২০ দিনের মাথায় আবারও পিচ ঢালাই উঠে যাচ্ছে ১৯ কোটি টাকার রাস্তার বাকি অংশেও। বুধবার সকালে কালীগঞ্জ-ডাকবাংলা সড়কের সিংদহ আলাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের অংশে পিচ উঠে যায়। এসময় স্থানীয়রা হাত দিয়ে কাপেটিং তুলে ফেলতে দেখা যায়। এর আগে নির্মাণের তিনদিনের মাথায় কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার পিচ ঢালাই উঠিয়ে ফেলে ঠিকাদার। ২২ কিলোমিটার রাস্তার মাত্র তিন কিলোমিটার শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে তা উঠে যেতে শুরু করে। গত ২০ দিনে অনেক স্থানে ফেটে গেছে। নী¤œমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ করায় এমনটি হয়েছে বলছেন সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও স্থানীয় জনগন। এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ঠিকাদার সেই রাস্তার সম্পুর্ণ পিচ কার্পেটিং তুলে ফেলে। 

যদিও ঠিকাদারের দাবি, বৃষ্টির মধ্যে অল্প কিছু অংশে রাস্তার কাজ করার কারণে এমন হয়েছে। তবে, রাস্তা তৈরির তিন বছরের মধ্যে কোন ক্ষতি হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা ঠিক করে দেবেন বলে উল্লেখ করেছেন ঠিকাদার।

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে গান্না হয়ে ডাকবাংলা পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তা মজবুতিসহ ওয়ারিং এর কাজ চলছে তিন বছর ধরে। এক ২০ দিন আগে কালীগঞ্জ নীমতলা বাস স্টান্ড থেকে পাকাকরণের জন্য কার্পেটিং বা পিচিকরণের কাজ শুরু করে। ৪ থেকে ৫ দিনে তিন কিলোমিটর কাজ সম্পন্ন করে। এরপর বৃষ্টির জন্য কাজ বন্ধ রাখেন। কিন্তু এরই মধ্যে সড়কের শ্রীরামপুর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার অংশে রাস্তার পিচ ঢালাই উঠে গেছে। কোথাও বড় বড় ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। এভাবে থাকলে কয়েক মাসের মধ্যে তা সম্পূর্ণ উঠে যাবে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীরা। একই ভাগে গতকাল বুধবার থেকে একই রাস্তার আলাইপুর,সিংদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় রাস্তার কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেন্ডারে রাস্তার কাজ পান খুলনার মুজাহার ইন্টার প্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯ কোটি টাকা। কিন্তু হাত বদল হয়ে রাস্তার কাজটি করছেন ঝিনাইদহের ঠিকাদার মিজানুর রহমান মাসুম মিয়া। টেন্ডার শেষে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শুরু হয় তিন বছর আগে। রাস্তা খোড়া এবং ইট বালুর কাজ শেষ হয়েছে ছয় মাস আগেই। এরপর সম্প্রতি শুরু করেছে কার্পেটিং এর কাজ। এদিকে কাজের ঠিকাদার মিজানুর রহমান ওরফে মাসুম মিয়া রাস্তার কাজ নিয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি।

সড়কটির কাজ দেখাশোনার দ্বায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, নী¤œ মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের কারনে এমটি হয়েছে। তবে সিডিউল অনুযায়ী সড়কে কাজ সম্পন্নের তিন বছরের মধ্যে কোন সমস্যা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুন:মেরামত করবেন। এরই মধ্যে রাস্তার সমস্যা হয়েছে বলে তিনি স্বীকার করেন।

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ জানান, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। এই ব্যাপারে আইন শৃংখলা, সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। ইতিমধ্যে রাস্তার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি তিনি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসক আরো জানান, ঝিনাইদহে বেশ কয়েকটি রাস্তা নির্মাণের পর এমন সমস্যা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে এবং মন্ত্রণালয় থেকেও তদন্ত করবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন