আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও এর ওয়েভভিত্তিক বিভিন্ন এন্টারটেনমেন্ট অ্যাপসগুলোর ব্যাপারে আসক্তি থেকে আমাদের তরুণ সমাজকে বের করে আনতে হবে। কিশোর-যুবাদের অবক্ষয়মুক্ত রাখতে খেলাধুলার বিকল্প নেই।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা আয়োজিত ফুটবল টুর্ণামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ছেলেরা এখন আর মাঠে গিয়ে খেলে না। আমাদের ছোটবেলায় আমরা মাঠে গিয়ে খেলার জন্য এবং সন্ধ্যার আগে বাসায় না ফেরার জন্য প্রতি সপ্তাহে বাবা-মা’র বকা শুনতাম। আর এখনকার ছেলেদের জোর করে ধরে মাঠে পাঠাতে হয়। বিষয়টা উল্টো হয়ে গেছে। আসলে খেলাধুলার কোন বিকল্প নাই। সেই জন্য খেলাধুলার আয়োজনও করতে হবে। আয়োজন না থাকলে তো ছেলেমেয়েরা খেলাধুলা করবে না। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস) একটি ভাল উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে ধর্ষণসহ কিশোর গ্যাং নানা অপরাধ করছে, নানা ধরণের অপরাধের সাথে বিভিন্ন কিশোর গ্যাং যুক্ত হচ্ছে। এটি থেকে রক্ষা করার একটি বড় উপায় হচ্ছে পাড়ায় পাড়ায় খেলাধুলার ব্যাপকতা বাড়ানো। এটি অত্যন্ত প্রয়োজন। করোনাকালে আমরা যেভাবে স্থবির হয়ে গেছি, এই স্থবিরতা বেশিদিন রাখা যায় না। এই স্থবিরতা কাটানোর জন্য খেলাধুলার কোন বিকল্প নাই। আমি মনে করি খুব শিগগির চট্টগ্রামে লীগের খেলাও আয়োজন করা প্রয়োজন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে গেছে। বাংলাদেশের কোথাও করোনার কারণে এ টুর্ণামেন্ট শুরু করা হয়নি এখনো। কিন্তু করোনার জন্য জীবন স্তব্ধ হয়ে থাকতে পারে না। আমাদের সবাইকে করোনা মোকাবেলা যেমন করতে হবে, জীবন এবং জীবিকা দুটিই আমাদেরকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। একইভাবে জীবনের সাথে ওঁৎপ্রোতভাবে যুক্ত খেলাধুলা, সেটাও আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়েই করোনাকালে বাংলাদেশে প্রথম সিজেকেএস ফুটবল টুর্ণামেন্টের যাত্রা শুরু করলো। সেজন্য সিজেকেএসকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, এখানে অনেকে জানেন না বঙ্গবন্ধু নিজেও কিন্তু ফুটবল খেলতেন। বঙ্গবন্ধু যখন স্কুলের ছাত্র তখন স্কুৃল ম্যানেজমেন্টের সভাপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমান। তখন শেখ লুৎফর রহমানের টিমের সাথে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন টিমের খেলা হয়েছিল টুঙ্গিপাড়ায়। সেই খেলায় বাবার টিমকে তিনি হারিয়ে দিয়েছিলেন।
উদ্বোধনী দিনে আবু তাহের পুতু একাদশ এবং রফিক আহমেদ চৌধুরী একাদশের মধ্যকার ম্যাচটি উভয় দল পাল্টা আক্রমন খেললে ম্যাচটি প্রাণবন্ত হয়ে উঠে। এতে প্রথমার্ধের ২০তম মিনিটে আবু তাহের পুতু একাদশকে এগিয়ে দেন রহিম। এর ৪ মিনিট পর রফিক আহমদ চৌধুরী একাদশ পেনান্টি পেলেও অধিনায়ক আমিনুলের শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রফিক একাদশের সায়মুন গোল করে সমতায় আনে (১-১)। এর ১০ মিনিট পর পুতু একাদশের রুম্মন গোল করে দলকে এগিয়ে নেন (২-১)। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত খেলাটি চলছিল।
করোনার মধ্যেও গতকাল গ্যালারিতে দর্শক ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শকদের খেলা উপভোগ করতে দেখা যায়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিজেকেএস’র সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, টুর্ণামেন্ট কমিটির সভাপতি ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান, সিজেকেএস’র সহ-সভাপতি দিদারুল আলম চৌধুরী, এহসানুল হায়দার বাবুল, হাছান সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, টুর্নামেন্টের সদস্য সচিব মো. শাহজাহান প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন