সরকারি কর্মচারীরা ১৯৭৩ সালের মতো তিনটি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পুনর্বহালসহ সাত দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন। আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্লেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে কর্মচারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশন ও বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের নেতারা এসব দাবি তুলে ধরবেন। একই সঙ্গে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এর আগে এসব সংগঠনের নেতারা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ৬টি ইউনিটের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। দাবি আদায় না হলে বিভাগীয় পর্যায়ে সফর শুরুসহ সার্বিক কর্মসূচির ডাক দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
সরকারি কর্মচারী সংহতি পরিষদের সভাপতি নিজামুল ইসলাম ভ‚ঁইয়া মিলন ইনকিলাবকে জানান, কয়েকটি কর্মচারী সংগঠনের সমন্বয়ে আমরা গত জানুয়ারি থেকে তাদের এক প্ল্যাটফরমে কর্মসূচি দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে সেটি বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিল। কর্মচারীদের ন্যায়সঙ্গত বেশকিছু দাবি দাওয়া নিয়ে কথা বলা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আজ আমরা সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করবো। তবে এ মাসের যে কোনো সময় থেকে ৮টি বিভাগে তারা সফর শুরু করবেন। তবে তারা সরকার বিরোধী কোনো কর্মসূচি দেবেন না। নিয়মের মধ্যে থেকে তাদের ন্যায়সঙ্গত দাবিগুলোকে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলের কাছে নিয়ে যাবেন। ১৯৭৩ সালের পে-স্কেল বাস্তবায়ন, বেতন ও পদ বৈষম্য দূরসহ সাতদফা দাবি। এগুলো হচ্ছে, জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন করে ১০ ধাপবিশিষ্ট নবম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। আগের মতো ১০০ শতাংশ পেনশন প্রথা পুনর্বহাল করতে হবে। এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের মতো সচিবালয়ের বাইরের সরকারি কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে। বøক পদধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে এ পদ্ধতিতে নিয়োগ করা কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টাররোল ও অন্যান্য দপ্তরে কর্মরত মাস্টাররোল কন্টিজেন্ট ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। সরকারি কর্মচারীদের আগের মতো তিনটি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পুনর্বহাল করতে হবে। জীবনযাত্রার মান স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ ও গ্র্যাচুইটির হার এক টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করতে হবে। নবম পে-স্কেল দেয়ার আগ পর্যন্ত দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনা করে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্যভাতা অবিলম্বে দিতে হবে। প্রশাসন ক্যাডারে কর্মচারীদের মতো ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বিনা সুদে ৩০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মতো অন্যান্য সকল দপ্তরে পোষ্য কোটা চালু করতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো. ওয়ারেছ আলী ইনকিলাবকে বলেন, আমরা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। আমাদের বঞ্চনার জায়গা রয়েছে। দাবি আদায়ে শৃঙ্খলা রক্ষা করে আমরা আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমরা বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ, কালো ব্যাচ ধারণ, কর্মবিরতিসহ বিভিন্ন শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করব। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পরপর পে- স্কেল দেয়ার কথা। অষ্টম পে-স্কেল ঘোষণার পর পাঁচ বছর হয়ে গেছে। আমরা নবম পে-স্কেল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন