শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

খেলছে এক দল, অপেক্ষায় বাকিরা

কিশোর-যুবাদের খেলাধুলায় মুখরিত সিআরবি শিরীষতলা

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মাঠের চারপাশে বিভিন্ন বয়সের মানুষ বসে আছে। তাদের সাথে রয়েছে শিশুরাও। এ মাঠে খেলছে এক দল কিশোর-যুবক। আর কয়েকটি দল অপেক্ষা করছ কবে তারা খেলা শুরু করবে। কারো মুখে নেই কোন মাস্ক। সবাই খেলছে মনের আনন্দে। কেউ বা ক্রিকেট আবার কেউ বা খেলছে ফুটবল। করোনার ভয়কে তারা যেন আগেই জয় করে নিয়েছে। এমন দৃশ্য প্রতিদিন বিকেল হলেই দেখা যায় নগরীর সিআরবি শিরীষতলা মাঠে।
এটি বালির মাঠ, নেই কোন ঘাস। এখানে সকালে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ফুটবল খেলে। তখন লোকসমাগম একেবারে নেই বললে চলে। কিন্তু বিকেল হলেই শিশু-কিশোর-যুবকরা খেলার আনন্দে মেতে উঠে এ মাঠে। নগরীর মাঠ সঙ্কট এতটা তীব্র হচ্ছে যে তাদের খেলতে হচ্ছে পালাবদল করে। তারপরও এসব শিশু-কিশোররা খেলতে পারলেই খুশি। তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। ইট-পাথরের এ নগরীতে খেলাধুলার জায়গার যে বড়ই অভাব। দীর্ঘ কয়েক মাসের বেশি সময় ঘরবন্দি হয়ে থাকা শিশু-কিশোররা রাস্তা, বাসাবাড়ির গলি কিংবা খালি মাঠ যে যেদিক পাচ্ছে সেদিকেই ছুটছে খেলার জন্য।
সিআরবির শিরীষতলা মাঠে বিকেল হলেই দলে দলে আসতে থাকে শিশু-কিশোররা। এক দলের খেলা শেষ হলে অন্য দল মাঠে নামে। তাই অনেক সময় নিজের ইচ্ছেমতো খেলতে পারে না তারা। তারপরও দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো যেটুকু সুযোগ পায় তাতেই নিজেদের খেলা শেষ করে ঘরে ফিরে এসব কিশোররা। তাদের কথা একটাই খেলতে পারলেই তারা সুস্থ থাকবে। কিন্তু কোথায় তারা খেলবে।
পলোগ্রাউন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র রাজীব বলেন, করোনাকালে বন্দি জীবন আর ভালো লাগেনা। একেতো স্কুল বন্ধ, ঘরবন্দি কতক্ষণ থাকা যায়। তাই এ মাঠে এসেছি ফুটবল খেলতে। তাও আবার দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে আমাকে মাঠে নামতে হয়েছে। আগে বিকেলে খেলতাম আউটার স্টেডিয়ামে। কিন্তু ঐ মাঠটিতে বৃষ্টিতে পানি জমে। মাঝখানে পানি আর চারপাশে আবর্জনা। তাই শিরীষতলার এ মাঠে এসে ফুটবল খেলছি।
এনায়েত বাজার এলাকার বেশকিছু কিশোর প্রতিদিন বিকেলে এ মাঠে ক্রিকেট খেলে থাকে। তাদের একজন তাসকিন। সে মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র। খেলার জন্য মাঠের খুব অভাব। শিরীষতলার এ মাঠে ছোট পরিসরে খেলতে হচ্ছে ক্রিকেট। অথচ এ পরিসরে ক্রিকেট খেলা সম্ভব নয়। তারপরও কি করব। কতক্ষণ ঘরে থাকব। বিকেল হলেই কিভাবে মাঠে যাব তা নিয়ে থাকে চিন্তা। যত তাড়াতাড়ি যাওয়া যায় খেলার সময় পাওয়া যায় বেশি। এ মাঠে কোন ঘাস নেই। বালির মাঠেই খেলতে হচ্ছে ক্রিকেট। কষ্ট হলেও শিশু-কিশোররা খেলছে এখানে। অথচ এমন হওয়ার কথা ছিল না। খেলার মাঠের সঙ্কট কিভাবে নিরসন হবে তা একমাত্র কর্তাব্যক্তিরাই বলতে পারবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন