টানা বর্ষণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার কৃষি খাতের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এর আগেও গত ২১ অক্টোবর অতিবৃষ্টি এবং জুলাই মাসে মহুরী নদীর বাঁধ ভাঙনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষকরা।
ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম বলেন, বন্যাকবলিত সদর ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ৪শ’ ২০ হেক্টর রোপা আমন আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে ১শ’ ৫ হেক্টর আমন এবং ৬ হেক্টর শীতকালীন আবাদি ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বন্যা কবলিত ৫ গ্রামের সাড়ে ৪শ’ থেকে ৬শ’ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি। বন্যার্ত এলাকার মাছ চাষিদের ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম। দুইদিনের বন্যায় উ. দৌলতপুর, দ. দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া, শাহাপাড়া, শ্রীপুর এলাকার ৬০টি পুকুর পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলেন তিনি। এতে পোনা ও চাষকৃত মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, বর্তমানে ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সাড়ে ১৩ টন চাল মজুদ রয়েছে। এছাড়া বন্যার্তদের জন্য ২ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্দ রয়েছে। মোস্তাফিজ নামে ক্ষতিগ্রস্ত এক তরুণ কৃষক বলেন, মাত্র ৪ মাসের মধ্যে তিনবারই আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ঋণ আর ধার-দেনা করে নিজে পরিশ্রম করে চাষ করি। মুহুরী-কহুয়া নদী আমাদের দুঃখ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকরা সর্বস্ব হারাচ্ছি। রেহেনা আক্তার নামে বিধবা এক মহিলা বলেন, প্রতিবারই বাঁধ ভাঙনের পর কয়েকদিন কিছু চাল, ডাল বিতরণ করে। কিন্তু এধরণের কোন ত্রাণ চাই না। সকলের চাওয়া টেকসই বাঁধ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বোরো মৌসুমে পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার আওতায় বীজ এবং সার প্রদান করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এছাড়াও জেলা প্রশাসকের পরামর্শ মতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে কোন ধরণের সহযোগিতা করা যায় কিনা সে বিষয়েও আলোচনা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন