বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার দুই প্রীতি ম্যাচের নামকরণ হয়েছে ‘মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ’। এই সিরিজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করা হবে। রোববার এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) চারবারের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন। এদিন মতিঝিলস্থ বাফুফে ভাবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,‘নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের দু’টি ফিফা ফ্র্ন্ডেলি ম্যাচ আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করবো।’
আগামী ১৩ ও ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচ দু’টি। দু’টি ম্যাচই বিকাল ৫টায় শুরু হবে। সব প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এখন বাকি খেলা মাঠে গড়ানোর। প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে গত মধ্য মার্চ মাস থেকে দেশের সব ধরণের খেলাধুলা বন্ধ থাকলেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ থেকে শুরু হয় ‘মুজিববর্ষ’। যার সময়কাল আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত। দেশে বর্তমানে উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’। তাই এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার ফিফা প্রীতি ম্যাচ দু’টিকে বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফুফে। কাজী সালাউদ্দিন যোগ করেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য মাঠে ফুটবল ফেরানো। যে কারণে নেপাল দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়ে ঢাকায় এনেছি। এই ম্যাচ দু’টি সরকারের নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনেই আয়োজন করা হবে।’
সম্প্রতি জাতীয় দলের ফুটবলারদের ফিটনেস নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করলেও সালাউদ্দিনের কথায়, ‘ফুটবলাররা ৭-৮ মাস অনুশীলনের বাইরে ছিল। তাই দ্রুত তাদের ফিটনেসের শতভাগ ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। এখনো কয়েকদিন বাকি আছে। প্রথম ম্যাচের পরই বোঝা যাবে তাদের ফিটনেসের কি অবস্থা।’
প্রধান কোচ ব্রিটিশ জেমি ডে’সহ ৫ বিদেশি রয়েছেন জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে। বলতে গেলে পূর্ণাঙ্গ ও শক্তিশালী কোচিং স্টাফোর অধীনেই জাতীয় দলকে প্রস্তুত করছে বাফুফে। বর্তমানের সঙ্গে অতীতের অবস্থা বিবেচনা করে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘জাতীয় দলের অনুশীলন দেখতে কাল (শনিবার) মাঠে গিয়েছিলাম। এখন ছেলেরা যে জার্সি গায়ে অনুশীলন করে, এমন জার্সি আমরা ম্যাচের সময়ও পেতাম না। আমাদের সময় অনুশীলনের জন্য মাত্র দু’টি বল থাকত। একটি দিয়ে অনুশীলন, আরেকটি দিয়ে অনুশীলন ম্যাচ খেলতাম।’ জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা দেয়ার বিপরীতে সফলতাই চাইলেন বাফুফে বস।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজনের ইচ্ছা থাকলেও করোনার কারণে তা সম্ভব হয়নি বলেই জানান সালাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আমাদের অনেক কিছু করার পরিকল্পনা ছিল। চার-পাঁচটা আন্তর্জাতিক প্রোগ্রাম করতে চেয়েছিলাম। ইচ্ছা ছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আয়োজনের। কিন্তু কোভিড-১৯ এর কারণে তা আর সম্ভব হয়নি।’
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের স্মৃতি রোমন্থন করে বাফুফে বস বলেন, ‘ফুটবলাররা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর ডাকে সরাসরি যুদ্ধে গেছেন। আমরা করোনাকে হার মানিয়ে মুজিব শতবর্ষ প্রোগ্রাম করবো। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারের সব নিয়ম-কানুন মেনে ফিফা থেকে অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার ম্যাচ আয়োজন করছি। আশা করছি, সাফল্যের সঙ্গে সেটি শেষ করতে পারবো।’ সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম সচিব অজয় কুমার চক্রবর্তী, বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ।
এদিকে বাংলাদেশ-নেপাল প্রীতি ম্যাচের টিকিট মূল্য নির্ধারণ করেছে বাফুফে। ভিআইপি গ্যালারির ৫০০ টাকা এবং সাধারণ গ্যালারির টিকিট ১০০ টাকা করে বিক্রি হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। জানা গেছে, প্রত্যেক ম্যাচে আট হাজার করে টিকিট ছাড়া হবে। হাতে গোনা ক’টি গ্যালারি খোলা থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন