শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তারপরও ফেরার স্বপ্ন দেখেন শাহরিয়ার নাফিস

প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ারের কি দুর্দান্ত শুরুটাই না শাহরিয়ার নাফিসের! দীর্ঘদিন পর বাঁ- হাতি টপঅর্ডারের অভাবটা বাংলাদেশ পূরণ করেছে তাকে দিয়ে।  কী টেস্ট, কী ওয়ানডেÑ কোনো ভার্সনের ক্রিকেটে এক বছরে হাজার রানের রেকর্ডে একমাত্র বাংলাদেশী শাহরিয়ার নাফিস। ২০০৬ সালে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১০৩৩ রান (৩ সেঞ্চুুরি, ৪ ফিফটি) কি উচ্চতায়ই না উঠে এসেছিলেন এই বাঁ-হাতি টপঅর্ডার। দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সে বছর বিসিবির বর্ষসেরা ক্রিকেটার পর্যন্ত নির্বাচিত হয়েছিলেন। আইসিসির সেরা উদীয়মানের শর্ট লিস্টে পর্যন্ত ছিলেন তিনি। সে বছর ফতুল্লা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার সর্বকালের সেরা দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরির ইনিংসে (১৩৮ রান) ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্পদ হিসেবে মনে করিয়ে দেয়া এই শাহরিয়ার নাফিস এখন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছেন। ২০০৮ সালে ভারতের বিদ্রোহী ক্রিকেট লিগ আইসিএলে ঢাকা ওরিয়র্সের হয়ে নাম লিখিয়েই নিজের বিপদ ডেকে এনেছেন। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২৩ মাস পর টেস্টে ফিরে প্রত্যাবর্তনকে স্মরণীয় করতে পারেননি। ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঢাকা টেস্টে ৯৭ রানের সেই ইনিংসটি এখনো পোড়ায় তাকে আক্ষেপে। ওই টেস্টের পর ৭ ইনিংসে ফিফটি শূন্য, ২০১৩-এর পর টেস্টে আর ফিরতেই পারেননি। ২০১১-এর পর আর ফিরতে পারেননি ওয়ানডেতে, তা নিয়তি বলেই মেনে নিয়েছেন। তবে সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে ব্যাটিংয়ে আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন (৩৫০ রান) ব্রাদার্সের এই টপঅর্ডার। সর্বশেষ প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট জাতীয় লিগে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক (৬ ম্যাচে ৭১৫ রান)  শাহরিয়ার নাফিস বরিশালকে দ্বিতীয় স্তর থেকে প্রথম স্তরে উঠিয়ে এনেছেন। বিসিএলে সাউথ জোনের হয়ে ৬ ইনিংসে করেছেন ৪০২ রান। ক্যারিয়ারে  ৯০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ৬ সেঞ্চুরির ৩টিই সর্বশেষ মওসুমে। ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচে এমন ব্যাটিং ধারাবাহিকতায় জানিয়ে দিয়েছেন, টেস্টে এখনো তার প্রয়োজন ফুরায়নি।
৪০ মাস পর তাই টেস্টে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন ২৪ টেস্টের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শাহরিয়ার নাফিস। টপঅর্ডারে বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে লড়াই চলছে ভালোই। তামীমের পাশে এই লড়াইয়ে আছেন সৌম্য, ইমরুল কায়েস, এনামুল বিজয়। এই তিনজনের সঙ্গে লড়াই করে জায়গা ফিরে পেতে কষ্ট হবে। ব্যাপারটা কিন্তু সহজ নয়।  তারপরও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জায়গাটা ফিরে পেতে চান এই বাঁ হাতিÑ ‘এখন অনেক কম্পিটিশন, তাই দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন। আমরা দুই-তিনজন  টপঅর্ডারে ঢোকার জন্য ফাইট করছি। এখন ফিটনেস ভালো আছে, ব্যাটিংয়ের অবস্থা ভালো আছে। যদি সুযোগ পাই তাহলে দলকে জেতানোর জন্য যতটুকু করা দরকার ততটুকু করার  চেষ্টা করব।’
জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ে ফেরার জন্য কম চেষ্টা করেননি, কোচের পক্ষ থেকেও সাড়া পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শাহরিয়ার নাফিসÑ ‘জাতীয় দলে তিন বছর ছিলাম না।  কিন্তু জাতীয় দলের পরিবেশটা  আমার কাছে নুতন নয়।  নয় বছরের অভিজ্ঞতা আছে। ড্রেসিং রুম খুব এনজয় করেছি,  নতুন ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে অল্প সময়ে খুব কাছে যেতে পেরেছি।’
বাংলাদেশ দল এখন অনেক উন্নতি করেছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় তা মনে করছেন শাহরিয়ার নাফিসওÑ ‘এখন  খেলোয়াড়রা আরেকটু প্রফেশনাল। তারা জিততে শুরু করেছে, জিতলে কেমন লাগে, জিততে কি প্রয়োজন সে বিষয়গুলো  ইমপ্রুভ করছে।’ বয়স এখন ৩১, টেস্টে টিকে থাকতে হলে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ফিল্ডিংয়েও তীক্ষè হওয়ার তাগিদ অনুভব করছেন তিনিÑ ‘ইংল্যান্ড-পাকিস্তান সিরিজে পাকিস্তান যদি আরেকটু ভালো ফিল্ডিং করত, ক্যাচ ড্রপ কম করত তাহলে তারা সিরিজ জিততেই পারত।  টেস্টে  জিততে চাইলে পাঁচ দিনের মধ্যে আড়াই দিন যদি ফিল্ডিং পাই, ওই আড়াই দিনই ভালো ফিল্ডিং করতে হবে। আমরা কিন্তু ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে একটা পজিশন করে নিয়েছি। ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টির তুলনায় টেস্ট ক্রিকেটে আমাদের পারফরম্যান্স কিন্তু অতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা যদি টেস্ট জিততে চাই পাঁচ দিন ভালো ফিল্ডিং করতে হবে, পাঁচ দিন ভালো ব্যাটিং করতে হবে, পাঁচ দিন ভালো বোলিং করতে হবে এবং পাঁচ দিন ফিট থাকতে হবে। নেক্সট টার্গেট সেটাই এবং আমরা সে লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন