মার্তা আর মেসির দুঃখটা যেন একই সুতোয় গাঁথা! মেসির মতো ব্রাজিল নারী ফ্টুবল দলের অধিনায়কও পাঁচবারের ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড়। ২০০৬ থেকে ২০১০- টানা পাঁচবার মেয়েদের বর্ষসেরার পুরস্কার উঠেছে তাঁর হাতেই। মেয়েদের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডও (১৫টি) তাঁর। এত সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার, অথচ সব হয়ে যাচ্ছে অর্থহীন। হবে নাই-বা কেন। জাতীয় দলের হয়ে যে জিততে পারলেন না কিছুই! ৩০ বছর বয়সী মার্তার জন্য এবারের অলিম্পিককে বলা হচ্ছিল শেষ সুযোগ। কিন্তু ব্রাজিলের সেই স্বপ্ন হোঁচট খেল সেমিফাইনালে। টাইব্রেকারে সুইডেনের কাছে হেরে গেল মার্তার দল। মার্তার জোড়া গোলে এই সুইডেনকেই গ্রুপ পর্বে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল।
এ নিয়ে তৃতীয়বার অলিম্পিক স্বর্ণ পদকের এত কাছে গিয়েও পারেননি মার্তা। ২০০৪ ও ২০০৮ অলিম্পিকে তবু রুপা জিতেছিলেন, এবার তো ঘরের মাঠের অলিম্পিকে লড়তে হবে ব্রোঞ্জের জন্য। দুঃখটা তাই আরও বেশি। আর তাই সেমিফাইনাল শেষে মার্তা হু হু কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এমন কান্না দেখা গিয়েছিল ২০০৭ বিশ্বকাপে। সেই আসরে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা আর সেরা খেলোয়াড়ের দুটি পুরস্কার জিতেছেন মার্তা। কিন্তু তা হলে কী হবে, ফাইনালে ব্রাজিল যে হেরে গিয়েছিল জার্মানির কাছে।
এখানেও মেসির সঙ্গে মিল মার্তার। মেসিও একবারই বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছেন, সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতেছেন। কিন্তু জার্মানির কাছেই সেই কখনোই ভুলতে না-পারার যন্ত্রণার হার! একটুর জন্য না পারার আক্ষেপে মেসি পুড়েছেন আরও তিনবার। ২০০৭ সালে মার্তার দুঃখের স্রোতে মিশেছিল তাঁর কোপা আমেরিকা হতাশা। ২০১৫ আর ২০১৬ সালেও তা-ই।
স্বর্ণালী যুগল
প্রথমে ট্র্যাকে নামলেন লরা ট্রট। ৯০ মিনিট পর জেসন কেনি। সময়ে পার্থক্য থাকলেও সাফল্যে দু’জন মিললেন এক বিন্দুতে। অবশ্য হৃদয়ের মোহনায় তাঁরা মিলেছেন আরও আগে। রিও অলিম্পিকে মঙ্গলবার রাতটা ছিল এই ব্রিটিশ প্রেমিক-প্রেমিকার। দুই ব্রিটিশ সাইক্লিস্ট জিতেছেন সোনা। প্রথমে মেয়েদের সাইক্লিং অমনিয়ামে ট্রট, খানিক পরেই পুরুষ কিরিনে কেন। সোনা জয়ের পর আনন্দে ট্র্যাকে জড়িয়ে ধরলেন, চুমু এঁকে দিলেন একে অপরের ঠোঁটে।
ব্রিটেনের হয়ে অলিম্পিক সাইক্লিংয়ে সবচেয়ে বেশি ছয়টি স্বর্ণ জেতার রেকর্ড স্যার ক্রিস হয়ের। হয়কে ছুঁয়ে তৃপ্তি ছুঁয়ে যাচ্ছে কেনির, ‘ক্রিসকে ছোঁয়াটা দারুণ ব্যাপার। বেইজিংয়ে যখন শুরু করেছিলাম, তিনটি সোনা জিতেছিলেন তিনি। এখানে তাঁকে স্পর্শ করা অসাধারণ ব্যাপার।’ প্রথম ব্রিটিশ নারী হিসেবে অলিম্পিকে চারটি স্বর্ণ জয়ের কীর্তি গড়ে ভীষণ উচ্ছ্বাসিত কেনির বাগ্দত্তা ট্রট, ‘বিশ্বাসই করতে পারছি না। এমনটা আশা করিনি। ভীষণ খুশি। সব একসঙ্গে পেলাম। দুর্দান্ত একটা দিন। আক্ষরিক অর্থেই আমি চাঁদে আছি।’ অলিম্পিকে কেনি-ট্রট যুগলের স্বর্ণ সংখ্যা দাঁড়াল ১০ (কেনির ৬, ট্রটের ৪)। দু’জনের গলায় একের পর এক সোনার পদক ওঠায় কেনির কণ্ঠে রসিকতা, ‘১০টা মেডেলে, মন্দ নয়।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন