রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

পুঠিয়া-বানেশ্বর আঞ্চলিক সড়ক সম্ভাবনার নতুন দ্বার

পুঠিয়া (রাজশাহী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম


নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে চলেছে পুঠিয়া-বানেশ্বর আঞ্চলিক সড়কটি। গত এক দশক থেকে সড়কটির উন্নয়ন না হওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। বর্তমানে সড়কটির সাইড বর্ধিতকরণ ও ডাবিøউবিএম, কার্পেটিং উন্নয়নের কাজ চলছে।
এলাকাবাসীর দাবি সড়কটির কাজ যেন মানসম্পন্ন হয়। এতে তারা ঠিকারদারি প্রতিষ্ঠানকে সবধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। এলাকার উন্নয়ন কাজ বলতে সাধারণ মানুষ যা বুঝে তা ভৌত অবকাঠামগত উন্নয়ন। বর্তমান সময়ের দৃশ্যমান উন্নয়নের মধ্যে পুঠিয়া-বানেশ্বরের এই আঞ্চলিক সড়কটি। সড়কটির উন্নয়নের ফলে এই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।
সড়কটি পুঠিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের কান্দ্রা, শাহবাজপুর, জরমডাঙ্গা, ভুবননগর ও চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া হয়ে উপজেলার বাণিজ্যিক রাজধানী বানেশ্বর হাটে গিয়ে মিলিত হবে। পুঠিয়া উপজেলার প্রায় সকল ব্যবসাই বানেশ্বর কেন্দ্রিক। এছাড়াও এই এলাকার কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্যের বেশির ভাগ কেনাবেচা হয় বানেশ্বর হাটে। পুঠিয়া সদরের ব্যবসায়ীদের অনেকেই তাদের মালামাল বানেশ্বর থেকে সংগ্রহ করে থাকেন। এসব মালামলা সংগ্রহে এবং কৃষকদের উৎপাদিত কৃষি পন্য কেনাবেচার জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চার্জার ভ্যানে নছিমন করিমন ব্যবহার করে থাকেন।
সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন উপজেলা সদরের মুদির ব্যবসায়ীগণ। বর্তমানে মহাড়কে আটোরিকশা, চার্জার ভ্যান, নসিমন ও করিমনসহ অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে চলাচল প্রশাসন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর ফলে এসব যানবাহন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ এর মালিকেরা। এসব অবৈধ যানবাহন মহাসড়কে চলাচলের কারণে আটক করে থাকে হাইওয়ে ফাঁড়ি পুলিশ। পরে মহাসড়কে না চালানোর শর্তে তাদের আটককৃত যানবাহন এক মাস থেকে চল্লিশ দিন পর ছাড় দেওয়া হয়।
এ সময় কিস্তিতে নেয়া এইসব যানবাহনের চালকেরা কর্মহীন হয়ে বিপাকে পড়েন। কিস্তি দিতে না পারায় বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হয় তাদের। অনেকেই কিস্তি দিতে না পারায় ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এই সড়কটি চালু হলে আবার প্রাণ ফিরে পাবে ব্যবসায়ী মহলসহ এসব যানবাহনের মালিকদের মধ্যে। সড়কটি চালু হলে একদিকে যেমন অযান্ত্রিক যানবাহন মুক্ত হবে মহাসড়ক অন্যদিকে হাজারো মানুষের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মাঝে মধ্যেই মহাসড়াকে এই সকল অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলের ফলে অনাকাঙ্খিত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তা এড়ানো সম্ভব হবে। সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর রুরাল কানেকটিভিটি ইমপ্রæমেন্ট প্রজেক্টের পুঠিয়া উপজেলা (কান্দ্রা জিপিএস)-বানেশ্বর (ইউ জেড আর) এর প্রায় সাড়ে এগারো কিলোমিটার সড়কটির চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৮ লাখ ৮ হাজার ২৪০ টাকা। কাজটি এ বছরের ফেব্রæয়ারি মাসের ১০ তারিখে শুরু হয়ে শেষ হবে আগামি বছরের আগস্ট মাসের ৯ তারিখে।
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে রাজশাহীর ঠিকাদিরী প্রতিষ্ঠান কাজটি করছেন। সড়কের কাছাকটি যেতেই দেখা গেল পূর্ণ উদ্যমে চলছে কাজ। এলাকার সাধারণ মানুষেরা সড়কটির উন্নয়নে খুবই আশাবাদী। তবে সড়কটির কাজের মান নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে অভিযোগ করেন, সড়কটির কাজের সঠিক মান নিয়ে। এজিংএ নিম্নমানের ইট দেয়া, সঠিক পরিমাণে বালু খোয়া না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যেহেতু সড়কটি বহুল ব্যবহৃত হবে কাজেই সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ করে টেকসই ও মজবুত সড়কটি নির্মাণের দাবি এলাকার সচেতন মহলের।
সাইটে উপস্থিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী কায়সার আলম জানান, সিডিউল মোতাবেক সঠিক মালামাল দিয়ে নিয়ম মেনেই নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। এছাড়াও কাজটি যেহেতু এলজিইডিসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান নিয়মিত তদারকি করছে কাজেই এক্ষেত্রে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। তবে বিগত কিছুদিন যাবত টানা বৃষ্টি হওয়ায় খননকৃত বর্ধিত সাববেজ অংশে পানি জমে থাকায় সাইডের কিছু মাটি এই অংশে পড়েছে যা আমরা এখন লেবার দিয়ে সরিয়ে কাজ করছি।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরা বলেন, এই সড়কটি চালু হলে এলাকার মানুষেরা যেমন উপকৃত হবে তেমনি বানেশ্বরের সাথে বিকল্প যোগাযোগে সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে মহাসড়কের অবৈধ যানবাহন চলাচল মুক্ত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা তাদের মালামাল এই সড়ক দিয়ে বানেশ্বর হাটে আনা-নেয়া করতে পারবে। সড়কটির নির্মাণ সমগ্রী নিয়ে অভিযোগ করেন তারা। সড়কটি সঠিক মান নিয়ন্ত্রণ রক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের তদারকি বাড়ানোর দাবি তাদের।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাইদুর রহমান জানান, এই সড়কটির উন্নয়ন হলে এই এলাকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। যার সুফল এলাকাবাসী সকল ক্ষেত্রে ভোগ করবে। সড়কটির কাজে এলজিইডির তিনটি অফিস তদারকি করায় অনিয়ম করার সুযোগ নাই বলে এই কর্মকর্তা জানান।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন