রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

রায়পুরে মাছঘাটে আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রায়পুর (ল²ীপুর) উপজেলা সংবাদদাতা : ল²ীপুরের রায়পুর উপজেলার ছয়টি মাছঘাটের প্রায় সাত হাজার জেলের কাছ থেকে খাজনার নামে অবৈধভাবে প্রতিদিন ৬ শতাংশ হারে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। সরকারদলীয় কয়েকজন নেতা এই চাঁদা আদায় করছেন বলে জেলেদের অভিযোগ। মেঘনা নদীর পাড়ে হাজীমারা, চরকাছিয়া পানিরঘাট, গোলগুইলা, বেড়ির মাথা, মিয়ারহাট ও কানি বগারঘাটের জেলেদের এই চাঁদা দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে রহস্যজনক কারেণ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে। জেলে ও মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার আগে হাজীমারা, পানিরঘাট, গোলগুইলা, বেড়ির মাথা ও চরজালিয়াঘাট ইজারা দেয়া হতো। ১৯৯১ সালে মাছঘাট ইজারা প্রথা বাতিল করা হয়। এরপর চারদলীয় জোট সরকারের আমলে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ কয়েক সন্ত্রাসীরা ঘাটগুলো দখল করে ছয় টাকা হারে চাঁদা আদায় শুরু করে। তবে এক/এগারোর পর গঠিত তত্ত¡াবধায়ক সরকারের দুই বছর জেলেরা এ যন্ত্রণা থেকে মুক্ত ছিল এবং ওই সময় চাঁদাবাজির কথা শোনা যায়নি। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন সরকার মাছঘাটগুলোকে মৎস্য অবতরণকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের আওতায় নেয়। একই বছরের নভেম্বর মাসের খাজনা আদায়ের জন্য করপোরেশন একজন কর্মকর্তা ও সাতজন কর্মচারীকে নিয়োগ দেয়। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাসীরা মাছঘাটগুলোতে হামলা চালায়। এরপর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ঢাকায় ফিরে যান। এ পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ওই মাছঘাটগুলো নিয়ন্ত্রণ নেয়। ঘাট বসিয়ে জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় শুরু করে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই আবার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন মোল্লা ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের খালেক হোসেন দেওয়ানসহ দলটির কয়েকজন নেতা ঘাটগুলো দখল করে নেন। বর্তমানেও ঘাটে ১শ’ টাকার মাছ বিক্রি করলে খাজনার নামে ৬ টাকা চাঁদা দিতে হয়। কিন্তু সরকার কোন টাকা পায় না। হাজীমারা ও চরকাছিয়া পানিরঘাটে সরজমিনে গেলে স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মনির হোসেন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন মোল্লা ও উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খালেদ হোসেন দেওয়ানসহ কয়েকজন নেতা ঘাটগুলো দখল করে নিয়েছেন। ছয়টি ঘাটে প্রায় সাত হাজার জেলে আসেন। এতে প্রতিদিন ছয় ঘাট থেকে কমপক্ষে এক লাখ টাকা আদায় হয়। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের নেতা মনির মোল্লা, তার ভাই জাকির হোসেন মোল্লা ও খালেদ হোসেন দেওয়ান সাংবাদিকদের বলেন, ঘাটে আড়তদারি ব্যবস্থায় মাছ কেনাবেচা হচ্ছে। এ জন্য জেলেদের কাছ থেকে মাছ বিক্রির ওপর কমিশন নেন তারা। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, ইজারাপ্রথা বাতিলের পর থেকে ঘাটে খাজনা আদায় অবৈধ। মাছ বিক্রি করলে জেলেদের কাছ থেকে কমিশন নেয়া অন্যায়। পজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। কোনো নেতা এটি করে থাকলে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন