বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

খুলনায় নদীর জেগে ওঠা চরে ইটভাটার জন্য শত বিঘা খাসজমি দখল

প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনার রূপসা উপজেলার আঠারবেকী নদীর জেগে ওঠা শত বিঘারও বেশি খাসজমি ইটভাটা তৈরির জন্য জবরদখল করেছে একটি চক্র। খাসজমিতে ঘর তৈরি, চিমনি নির্মাণের ইট ও মাটির জন্য ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করেছে তারা। অসহায় ডিসিআরভোগীদের উচ্ছেদ করে সেখানে ভাটা তৈরির উদ্যোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ সংক্রান্ত দায়েরকৃত একটি মামলার প্রেক্ষিতে সেখানে কোন কার্যক্রম চালাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে আদালত।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভবানীপুর ইটের সলিং থেকে শুরু করে মজিদের ইটের ভাটা পর্যন্ত ৫০ বিঘারও বেশি খাস জমি দখল করে সেখানে ভাটা তৈরির কাজ শুরু করেছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইছহাক সরদারের ছেলে মো. শামীম আহম্মেদ রণি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার আবুল হোসেন ডাবলু। সেখানে তারা ৪টি ঘর তৈরি, চিমনির ইট এনে রাখা, পুকুর কেটে মাটি স্ত‚প করা এবং সেই পুকুর আবার ড্রেজিং করে ভরাট করছে। এছাড়া শ্রীফলতলা খেলার মাঠ থেকে পালেরহাট বাজার পর্যন্ত আরও ৫০ বিঘার মতো জমি দখল করে নিয়েছে তারা।
এছাড়া বাজারসংলগ্ন একটি মাদরাসা ও শ্মশানের জমি দখল করতে গিয়ে জনরোষে পড়ে পিছু হটে তারা।
এসব জমির ডিসিআরভোগীদের মধ্যে ১২ জন বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক ও রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ সেখানে বসবাস করছেন এবং কয়েকজন জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আইনগতভাবে না পারলেও বাকি ক’জন বাধ্য হয়ে তাদের জমি অন্যের কাছে ডিসিআর বিক্রি করে দিয়েছেন। এ অবস্থায় সেই জমি জবরদখল করে সেখানে ভাটা তৈরির কাজ শুরু করেছে শামীম আহম্মেদ রণি ও আবুল হোসেন ডাবলু। অথচ তাদের ওই এলাকাতে কোন রেকর্ডীয় জমি নেই। ভ‚ক্তভোগীরা জানান, জমি থেকে উচ্ছেদ করায় তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে, রেকর্ডিও সম্পত্তির সামনে চিমনির জন্য ইট রাখা ও কাঁচা ঘর তোলায় ক্ষুব্ধ জমির মালিক এনামুল কবির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেখানে স্থিতি আদেশ দিয়েছেন। তা সত্তে¡ও তারা ইটভাটা নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে।
এ ব্যাপারে শ্রীফতলা ইউপি চেয়ারম্যান ইছহাক সরদার বলেন, তার ছেলে শামীম আহম্মেদ রণি ভবানীপুরে ভাটা তৈরির কাজ করছে। সেখানকার অধিকাংশ ভাটা খাস জমির ওপর। তবে চুল্লি রেকর্ডিও জমিতে না করলে এখন সরকার লাইসেন্স দিচ্ছে না। তাই চরের জমির লাগোয়া রেকর্ডীয় জমি কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
খুলনার জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান বলেন, নদী পাড়ের খাস জমিতে ইটভাটা করার কোন সুযোগ নেই। কেউ জোরপূর্বক দখল করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১৭ জুলাই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. আতাহারুল ইসলাম খুলনা সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জেলা নদী রক্ষা কমিটির সভায় নদীর সীমানা নির্ধারণ এবং অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে নদী পাড়ের খাস জমি দখলমুক্ত করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন