রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য : ইসলামপন্থীদের আলোচনার প্রস্তাবে সরকার রাজি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৪:৪৭ এএম

বাংলাদেশে ভাস্কর্য ইস্যুতে সরকার ইসলামপন্থীদের আলোচনার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে বলে জানা গেছে।
উভয়পক্ষের সূত্রগুলো জানিয়েছে, আলোচনার প্রক্রিয়ায় এখন আগামী রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে ইসলামপন্থীদের একটি প্রতিনিধি দলের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হতে পারে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুই পক্ষের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। এখন ইসলামপন্থী কয়েকটি দল এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে বৈঠক চেয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছে, সে ব্যাপারে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
তবে ইসলামপন্থীরা ভাস্কর্য বিরোধী অবস্থানেই অনড় থাকার কথা বলছে।
ঢাকার দক্ষিণে ধোলাইপাড় এলাকায় বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কয়েক সপ্তাহ আগে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামে ইসলামপন্থী কয়েকটি দল এবং হেফাজতে ইসলাম।
এরই মাঝে কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবের একটি নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সেই প্রেক্ষাপটে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
ইস্যুটি নিয়ে একটা উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলেও সরকার এবং ইসলামপন্থীদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বা কথাবার্তা চলছে।
এখন ইসলামপন্থীদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। সরকারও তাতে রাজি হয়েছে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, দুই পক্ষের আনুষ্ঠানিক আলোচনার জন্য তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
"টাইম টু টাইম অনেকের সাথেই কথা হচ্ছে। আমার সাথে, আমাদের সচিব মহোদয়ের সাথে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের সাথে ও প্রধানমন্ত্রীর যে সেলগুলো আছে,তারা সবাইতো কাজ করছে।"
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আরও বলেছেন, "তারা (ইসলামপন্থী দলগুলো এবং হেফাজতে ইসলাম) একটা আবেদন করেছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তারা বলেছে যে আমরা ১০ জন বা ১১ জন ওলামা আপনার সাথে দেখা করবো। আমরা এখন এটা প্রসেস করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাবো। তাতে দেখার সুযোগ হলে দেখা করবে।"
ইসলামপন্থী দলগুলো এবং হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে সরকারের সাথে আলোচনার বা বৈঠকের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে কওমী মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসানকে।
তাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে তাদের অনানুষ্ঠানিক একটি বৈঠক হতে পারে- এটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে।
ইসলামপন্থীদের আলোচনার এ উদ্যোগের সাথে জড়িত এবং ইসলাম বিষয়ক সাময়িকী আল জামিয়ার সহকারি সম্পাদক মো: আশরাফ উল্লাহ বলেছেন, ধর্মে ভাস্কর্য নির্মাণ জায়েজ নয়- সেই অবস্থানই তারা স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় তুলে ধরবেন।
এছাড়া ইসলামপন্থী একটি দলের নেতা বলেছেন, সরকার চাইলে ভাস্কর্য নির্মাণ করতেই পারে। কিন্তু তারা তাদের অবস্থান এবং ধর্মীয় বিষয় তুলে ধরেছেন। এখন তা বিবেচনায় নেয়া না নেয়া সরকারের বিষয় বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
তারা তাদের অবস্থানেই যদি অনড় থাকেন তাহলে আলোচনায় কোন লাভ হবে কিনা সেই প্রশ্নে হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমীর আব্দুর রব ইউসুফী বলেছেন, আলোচনা বসলে একটা উপায় বের হতে পারে।
"আমরা সরকারের কাছে প্রস্তাব দিছি যে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করতে চাই এবং শান্তিপূর্ণ ও সম্মানজনক কোন সমাধান বের হয়ে আসতে পারে। এখন বল সরকারের কোটে।"
"আলোচনায় বিকল্প কোন পথ বের হতে পারে। এ জন্যইতো আলোচনা। অনেক জটিল জটিল বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হয়ে যায়" বলে তিনি মন্তব্য করেন।
হেফাজত নেতা আব্দুর রব ইউসুফী আরও বলেন, "বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ধর্মীয় ব্যাপারে একগুঁয়েমি করেন না। এটা আমাদের জানা এবং আমাদের বিশ্বাস। সেকারণে আলোচনায় বসলে একটা সমাধান বের হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।"
তবে সরকার ধোলাইপাড় এলাকায় মুজিব ভাস্কর্য নির্মাণ করবেই। এমন অবস্থান তুলে ধরে আসছে সরকার।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, গত কয়েক দিনের অনানুষ্ঠানিক আলোচনাগুলোতেই সমাধানের কিছু প্রস্তাব এসেছে।
"আমার কথা হলো, ভাস্কর্যটাই হবে। আমি বলছি, ওনারা অনেকে বলেছেন যে, ওখানে যদি বঙ্গবন্ধুর নামে একটা গেট করেন ভাল হয়। সেটা ভাল কথা। ওই জায়গায় গেট করলাম। আর ভাস্কর্য ওখান থেকে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলাম। হয়ে গেলো। সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। এটা নিয়ে টেনশন করার কোন কারণ নাই" বলেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী । তবে আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো রাজনৈতিক দিক থেকেও প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
Mdrasel ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:০৬ এএম says : 0
শুকরিয়া
Total Reply(0)
Mdrasel ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৫:০৬ এএম says : 0
শুকরিয়া
Total Reply(0)
Syed ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৬:২৬ এএম says : 0
সম্মানিত ওলামাগণের উচিত হবে, শুধু শ্রদ্বেয় শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের নয় বরং দেশে বর্তমানে যত ভাষ্কর্য বা মুর্তি উন্মুক্ত স্থানে, শিক্ষা প্রতিষ্টানে, বাা সরকারি অফিস আদালত ও প্রতিষ্টানে আছে সব চিরতরে নষ্ট করে দেয়ার জন্য এবং ভবিষ্যতে যেন কোন ভাষ্কর্য বা মুর্তি সরকারি খরচে না বানায় তথা জনগনকে এ ব্যপারে উতসাহিত না করে সে ব্যপারে একই বৈঠকে সমাধান করে নেয়া | কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে বা ধর্মীয়ভাবে নিজেদের সম্পত্তিতে বা নিজ খরচে করে সেটা তাদের ব্যপার |
Total Reply(1)
rASHID2020 ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১০:০২ এএম says : 0
Apnar sate amar o akmot
Md Helal Karim ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ৯:৫৮ এএম says : 0
এখানে রিপোর্টার বারবার ইসলামপন্থী ইসলামপন্থী বলছেন। ভাই আপনি কোন পন্থী। আপনি কি অন্য ধর্মের। এখানে বলা যেতো ধর্মীয় দল। তাহলে ব্যাপারটা সুন্দর হতো। ইনকিলাব এর মতো একটি জাতীয় দৈনিকে এভাবে শব্দ চয়ন সঠিক হয়নি। বিষয়টি সুনজর দিবেন আশা করি।
Total Reply(0)
Abu Abdullah ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১৩ পিএম says : 0
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেছেন, "আমার কথা হলো, ভাস্কর্যটাই হবে। আমি বলছি, ওনারা অনেকে বলেছেন যে, ওখানে যদি বঙ্গবন্ধুর নামে একটা গেট করেন ভাল হয়। সেটা ভাল কথা। ওই জায়গায় গেট করলাম। আর ভাস্কর্য ওখান থেকে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলাম। হয়ে গেলো। সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। আমার প্রশ্ন প্রাণীর ভাস্কর্য যদি ইসলামে হারাম হয় তাহলে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলে কি জায়েয হয়ে যাবে ?
Total Reply(0)
Bhuiyan ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:১৮ পিএম says : 0
এই দেশে আলোচনা করে কোন কিছু সমাধান হয়েছে এটা পাগলেও বিশ্বাস করবে না !
Total Reply(0)
Abu Abdullah ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৩০ পিএম says : 0
ভাস্কর্য ওখান থেকে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলে যদি জায়েয হয়ে যায় তাহলে ওখানে থাকলে অসুবিধা কি আপনারা আলিম ওলামারা বলেছে ইসলামে যে কোনো প্রাণীর ভাস্কর্য বা মূর্তি হারাম এখন যদি ওখান থেকে ১০ মিটার আগায় বা পিছায় দিলে যদি জায়েয হয়ে যায় তাহলে উহা ওখানেই থাক নো প্রবলেম
Total Reply(0)
শরীফুল ইসালাম আশিক ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:৪৫ পিএম says : 0
আমি আপনাদের মাধ্যমে সরকার কে এই মেসেজ দিতে চাই.. উনি যেনো বঙ্গবন্ধুর নামে একটা ট্রাস্ট গঠন করে দেশের সব বেআইনী অবৈধ কাজ গুলো বন্ধ করে দেয়.. বাংলাদেশের সব মুর্তি ভেংগে দেয়... এতে করে দেশের শান্তি শৃংখলা ফিরে পাবে.. দেশ অন্যায় পাপাচার মুক্ত হবে.. বঙ্গ বন্ধুর সুনাম বৃদ্ধী পাবে.. আখেরাতে দুজনই পাবেন জান্নাত... যেমন পবিত্র কোর আনে সুরা আর রহমানে আল্লাহ বলেন.. ওলিমান খ ফা মাকমা রব্বীহী জান্নাতান.. অর্থাৎ.. সূরা আর রহমান:46 - যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দুটি উদ্যান।.. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় পড়লে বুজা যায়.. যারা আল্লাহর ভয়ে অন্যায় পাপাচার থেকে ফিরে আসে.. আল্লাহ তাকে দুটি জান্নাত দান করবে..আমীন
Total Reply(0)
Afroza Tuli ১২ ডিসেম্বর, ২০২০, ১:১৬ পিএম says : 0
Yes that is the smart move of Prime minister .
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন