শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নোয়াখালীতে চাঙা শ্রমবাজার

আনোয়ারুল হক আনোয়ার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

করোনা কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও থেমে নেই নোয়াখালী অঞ্চলের কর্মজীবী মানুষ। মাঠে ঘাটে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা কল কারখানায় ব্যস্ত সময় পার করছে লাখো কর্মজীবি মানুষ। অর্থনীতি চাঙার লক্ষে যে যার পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে পাঁচ লক্ষাধিক প্রবাসীর প্রেরিত বিরাট অঙ্কের অর্থ। ফলে একদিকে এ অঞ্চলে শ্রম বাজার বেশ চাঙা তেমনিভাবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে সমানগতিতে।

জানা যায়, নোয়াখালী অঞ্চলের বেশিরভাগ কর্মজীবী দেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত। জেলায় হাতেগোনা যে কয়টি বৃহৎ ও মাঝরি শিল্প কারখানা রয়েছে, সেগুলোতে পুরোদমে উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া বিদেশে রয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ প্রবাসী। প্রতিমাসে গড়ে শতকোটি টাকা প্রেরণ করেন প্রবাসীরা। সে সুবাদে হাজারো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। নোয়াখালীতে সরকারের উদ্যোগে বিভিন্ন বিভাগে উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। তেমনিভাবে বেসরকারি উদ্যোগে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সরকারি বেসরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত হয়েছে হাজার হাজার শ্রমিক।

প্রবাসী অধ্যূষিত নোয়াখালী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সোনাপুর ও বদরীপুর গ্রাম। এখানকার ২০ সহস্রাধিক যুবক ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত। এদের অনেকের প্রেরিত অর্থে এখানে গড়ে উঠছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, মৎস খামারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তেমনিভাবে ইতালি প্রবাসী আবদুর রাজ্জাক গড়ে তুলেছেন ’থ্রি এস’ মৎস খামার। এখানে ১৫জন শ্রমিক কাজ করছে। থ্রি এস মৎস খামারের শ্রমিক মুসা মিয়া তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, অনেক বছর বেকার ছিলাম। এখানে তিন বছর কাজ করছি। খাওয়া-থাকাসহ যে বেতন পাচ্ছি, তা দিয়ে সুন্দরভাবে সংসার চলছে। দুই ছেলে মেয়ে স্কুলে পড়ালেখা করে। বাড়িতে স্ত্রী হাঁস-মুরগী লালন পালন করে। এক কথায় কেউ বসে নেই। যে যার মত পেশায় সম্পৃক্ত রয়েছে। এতে করে বেশ চাঙ্গা শ্রমবাজার। নোয়াখালীতে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডেল্টা জুট মিল ছাড়াও গেøাব শিল্প গোষ্ঠীর বেশ কয়েকটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া প্রায় দুই শতাধিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে কাজ জড়িত রয়েছে প্রায় ত্রিশ হাজার কর্মজীবী। ফলে এসব কর্মজীবীর পদচারণায় মুখরিত জেলার সর্ববৃহৎ ব্যাণিজ্য কেন্দ্র চৌমুহনী বাজার। অপরদিকে জেলা সদরের দক্ষিণাঞ্চল ও দ্বীপ উপজেল হাতিয়ায় প্রতিনিয়িত নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।

বসে নেই কৃষি শ্রমিকরাও। নোয়াখালীর দক্ষিণে বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষি শ্রমিকরা বরিশস্য আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শ্রমিকরা জানায়, কিছু দিন আগে আমন ধান কাটা শেষ হয়েছে। এখন রবিশস্যে আবাদের সময়। আমাদের হাতে অনেক কাজ। মজুরি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতেই তাদের মুখে ছিল স্বস্তির হাসি।

দেশের অন্যান্য বৃহত্তর জেলা সদরের চাইতে নোয়াখালী অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু গত এক দশকে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। সড়ক যোগাযোগ, সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প, বেসরকারি উদ্যোগে ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প কারখানা স্থাপনসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে এ অঞ্চলে। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নতির পাশাপাশি গড়ে উঠছে শত শত অবকাঠমো নির্মাণ। এ সকল কাজেও সৃষ্টি হয়েছে বিপুল কর্মসংস্থান।
কাল পড়–ন : বগুড়ায় আয় বেড়েছে শ্রমিকদের

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন