চলতি বছর বৈশ্বিক মহামারি চলাকালে অফিস ও উৎপাদন শুরু করার ক্ষেত্রে আইসিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও ২০২০ সালে ফাইভজি বিজনেস অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বৈশ্বিক কনসাল্টেন্সি সংস্থা এসটিএল পার্টনারের তথ্য অনুযায়ী, ফাইভজি ভিত্তিক নানা সমাধানেরর ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জিডিপি ১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে। সম্প্রতি বিশ্বের স্বনামধন্য নানা শিল্প বিশেষজ্ঞ, অ্যাকাডেমিয়া ও অর্থনীতিবিদদের নিয়ে হুয়াওয়ে আয়োজিত ট্রাস্টইনটেক সামিটে বক্তারা একথা বলেন। সামিটে বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হুয়াওয়ের পর্ষদের নির্বাহী পরিচালক এবং প্রতিষ্ঠানটির ক্যারিয়ার বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট রায়ান ডিং, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী জিম রজার্স, জিএসএমএ’র প্রধান বিপণন কর্মকর্তা স্টেফানি লিঞ্চ-হাবিব সহ অন্যান্যরা।
সামিটে এসটিএল পার্টনারসের কো-ফাউন্ডার ক্রিস বারাক্লো নির্মাণ, জ্বালানি এবং স্বাস্থ্যসেবা খাতে ফাইভজি’র রূপান্তরমূলক ভূমিকার ওপর জোর দেন। হুয়াওয়ের এন্টারপ্রাইজ ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের এক্সপার্ট এডউইন ডিনডার বলেন, বৈশ্বিক মহামারি চলাকালীন কীভাবে ফাইভজি, এআই, বিগ ডাটা এবং ক্লাউড কম্পিউটিং ওষুধ স্ক্রিনিং, ডায়াগনোসিস, ইন্টেলিজেন্ট মনিটরিং এবং রিমোট ওয়ার্কিং ও এডুকেশন প্রক্রিয়া ত্বরাণি¦ত করেছে।
জিএসএমএ’র সিএমও স্টেফানি লিঞ্চ-হাবিব জানান, ফাইভজি কনজ্যুমার কেন্দ্রিক ইন্ডাস্ট্রি যেমন ই-কমার্সকে প্রভাবিত করবে, পাশাপাশি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি এবং অগমেন্টেড রিয়েলিটি মতো উদ্ভাবনী সেবার উদ্ভাবনে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপ এক্ষেত্রে ধারাবাহিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে এবং বৈশ্বিক মান বৃদ্ধিতে কাজ করছে। হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার বিজনেস গ্রুপ সিটিও পল স্ক্যানলান ২০২০ সালকে ‘স্পুটনিক’ মুহূর্ত হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যেমন করে মানুষ তার তৈরিকৃত স্যাটেলাইট স্পুটনিক ১৯৫৭ সালে কক্ষপথে পাঠায় এবং এর মাধ্যমেই মানুষের মহাকাশ অনুসন্ধানের যাত্রাশুরু হয়, তেমনি করেই ২০২০ সালে ফাইভজি প্রযুক্তির বিকাশ ঘটেছে। সবকিছুরই পরিবর্তন হয়েছে।’
তবে অতিথিদের অনেকেই নতুন জিনিস গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেকে ভয় ও শঙ্কা প্রকাশ করেন। কারণ ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া ইভেন্টগুলো অধিক আইসোলেশন ও জাতীয়তাবাদ কেন্দ্রিক। অনেক দেশ তাদেরকে সহযোগিতা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে নিজেদের আলাদা করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টর জিম রজার্স বলেন, যে কেউই যেকোন বিষয়ে (বিশেষ করে, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে) একপাক্ষিক কৌশল গ্রহণ করলে তা সমস্যা তৈরি করবে। বিদেশনীতি উন্মুক্ত রাখাই উচিৎ। বিশেষ করে, প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের অন্য দেশ থেকে আলাদা রাখতে হবে এ ভাবনা পরিহার করতে হবে।
সামিটের শেষে হুয়াওয়ের পর্ষদের নির্বাহী পরিচালক এবং ক্যারিয়ার বিজনেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট রায়ান ডিং বলেন, প্রযুক্তির কল্যাণে আসা সফলতা সবাই যেনো উপভোগ করতে পারে সেজন্য প্রয়োজন একটি উন্মুক্তও বিশ্বস্ত ইকোসিস্টেম। বর্তমানের সঙ্কটপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘টেকনিক্যাল ইস্যুগুলো থেকে রাজনীতিকে দূরে রাখাই উচিৎ। প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য আমাদের নিরপেক্ষ ও ইতিবাচক মনোভঙ্গি বজায় রাখতে হবে। নতুন প্রযুক্তি সামাজিক ও ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করছে। এ পরিস্থিতিতে, যদি আইসোলেটেড কৌশল গ্রহণ করা হয় তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের ওপরই পড়বেনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন