চাকরির প্রলোভনে গৃহিণীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত মো. ফরহাদ আলী (৪৫) পচাসারুটিয়া মেহের আলী খান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলার শাখাইল গ্রামের দুখু মিয়ার ছেলে। টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলি আদালতে ওই গৃহিণী বাদী হয়ে মো. ফরহাদ আলীসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
মামলাটি তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডিবি দক্ষিণকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে শিক্ষক ফরহাদ আলীর আপত্তিকর কথোপকথনের একাধিক অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ায় বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় বইছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভারড়া ইউনিয়নের ভারড়া গ্রামের হতদরিদ্র কাঠমিস্ত্রি আ. মোতালেবের স্ত্রী মোছা. মর্জিনা বেগমকে (৩৭) চাকরি দেয়ার সূত্রে ঘনিষ্ঠ হন শিক্ষক মো.ফরহাদ আলী। দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে চাকরিপ্রত্যাশী মর্জিনার মোবাইলে ও সরাসরি শারীরিক সম্পর্কের কু-প্রস্তাব দিতে শুরু করেন।
ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি মাতাব্বরদের জানালে গ্রাম্য সালিশ বসে। ফরহাদ আলী প্রভাবশালী হওয়ায় সালিশে বসতে রাজি হননি। মাতাব্বরদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিভিন্নভাবে মর্জিনাকে কু-প্রস্তাব দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত ১ নভেম্বর ভোরে ফরহাদ আলী সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে মর্জিনার বাড়িতে গিয়ে মুখ চেপে ধরে বিবস্ত্র করে তার গলায় ফাঁস লাগানোর চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। পরে মর্জিনার স্বজনরা তাকে নাগরপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ বিষয়ে মর্জিনা গত ৯ নভেম্বর টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাগরপুর আমলি আদালতে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। (মামলা নং ২১৫/২০২০)। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল ডিবি দক্ষিণকে দায়িত্ব দেন আদালত। তবে মর্জিনাকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করায় ভুক্তভোগীর পরিবার শঙ্কায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রধান শিক্ষক ফরহাদ আলী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে সভাপতির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি জেনেছি। কোনো ব্যক্তির অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না বলে জানান তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল ডিবির (দক্ষিণ) উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, মামলাটি তদন্তাধীন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন